ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদার জামিন স্থগিত গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৬:০২, ২০ মার্চ ২০১৮

খালেদার জামিন স্থগিত গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টে দেয়া জামিন আপীল বিভাগে স্থগিত রাখার আদেশ ‘গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক’ মারা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন আপীল বিভাগের এই আদেশের সরকারের ইচ্ছার প্রতিফলন হয়েছে। মানুষের আশা আকাক্সক্ষার স্থল সর্বোচ্চ আদালতে খালেদা জিয়া ন্যায় বিচার বঞ্চিত হয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দ-িত খালেদা জিয়ার জামিন আপীল বিভাগ স্থগিত রাখার আদেশের প্রেক্ষিতে সোমবার নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের দলের পক্ষ থেকে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এই মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে তিনি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আরও দুদিনের কর্মসূচী ঘোষণা করেন তিনি। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে আজ মঙ্গলবার সারাদেশে বিক্ষোভ। এছাড়াও ২৯ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ফের জনসভা করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আজ মঙ্গলবার সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচী ঘোষণা করছি। ঢাকা মহানগরের প্রতি থানায়, জেলা ও মহানগরে এ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হবে। ২৯ মার্চ আবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভাটা করব। সেজন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি যে, বিএনপির এ জনসভা অনুষ্ঠানের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। আপীল বিভাগে খালেদা জিয়ার জামি স্থগিত রাখার আদেশের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ক্ষোভের সঙ্গে বলছি, এই আদেশে সরকারের যে ইচ্ছা, সেই ইচ্ছাই প্রতিফলিত হয়েছে। গণতন্ত্রকে চূড়ান্তভাবে কবর দেয়ার উদ্দেশ্যেই খালেদা জিয়াকে এভাবে বন্দী রাখা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকার বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে মানুষের অধিকারগুলোকে হরণ করে নিচ্ছে। আমরা এই অন্যায়-অত্যাচার, এ বিচার বিভাগকে ব্যবহার করার তীব্র প্রতিবাদ করছি, নিন্দা জানাচ্ছি। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য দেশের সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, গণতন্ত্রকামী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে সরকার কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। কৌশলটা হচ্ছে জামিন স্থগিত করে দিয়েছে। নাকচ করেনি। এরপর হিয়ারিং হবে লিভ টু আপীলের। অর্থাৎ এভাবে ক্রমান্বয়ে যেতে থাকবে এবং তাকে আটকে রাখা হবে। এটা জামিন দিয়েও করতে পারত। দুর্ভাগ্যজনক ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধাগুলো আদালতে তিনি পাচ্ছেন না। মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়ার জামিন পাওয়াটা একটা স্বাভাবিক বিষয়। এটা তার আইনগত অধিকার। দুর্ভাগ্যক্রমে লক্ষ্য করেছি দেশনেত্রীর জামিন ও তাকে কারাগার থেকে বের করে আনার যে আইনী প্রক্রিয়া, সেই আইনী প্রক্রিয়াকে অত্যন্ত সচেতনভাবে বাধা দিচ্ছে সরকার। খালেদা জিয়াকে কারাগারে দীর্ঘদিন রেখে দেয়ার অর্থ হচ্ছে, সরকারের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ গণতন্ত্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রীকে বন্দী রেখে ‘নীল নক্সা’ অনুযায়ী একতরফা নির্বাচন দিয়ে আবার ক্ষমতায় চলে আসা। তিনি বলেন, সরকার চাচ্ছে প্রভাবিত করে বিএনপি ভিন্ন পথে পরিচালিত করার জন্য। সহজে সেই পথে পরিচালিত হবে না বিএনপি। এই নিশ্চিয়তা সরকারকে দিতে চাই। সারাদেশের মানুষ, রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের প্রতি আহ্বান এই চরম সঙ্কট থেকে উদ্ধার পেতে হলে জাতীয় ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবেলা করার আহ্বান জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন উপস্থিত ছিলেন।
×