ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রংপুরে খাদেম হত্যা ॥ ৭ জেএমবি জঙ্গীর ফাঁসি

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১৯ মার্চ ২০১৮

রংপুরে খাদেম হত্যা ॥ ৭ জেএমবি জঙ্গীর ফাঁসি

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর, ১৮ মার্চ ॥ রংপুরের কাউনিয়ায় মাজারের খাদেম রহমত আলী (৬০) হত্যা মামলায় পলাতক একজনসহ জামা’আতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) ৭ জঙ্গীর মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রংপুরের বিশেষ জজ আদালতের বিচারক নরেশ চন্দ্র সরকার এ রায় ঘোষণা করেন। ফাঁসির দ-প্রাপ্তরা হলেন জেএমবির রংপুর অঞ্চলের কমান্ডার মাসুদ রানা ওরফে মন্ত্রী, ওই জঙ্গী সংগঠনের সদস্য এছাহাক আলী, লিটন মিয়া ওরফে রফিক, বিজয় ওরফে আলী ওরফে দর্জি, সাখাওয়াত হোসেন, সরওয়ার হোসেন ওরফে সাবু ও চান্দু মিয়া। এদের মধ্যে চান্দু পলাতক রয়েছেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসামি আবু সাঈদ, তৌফিকুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজিব, বাবুল আখতার, সাহাদাত ওরফে রতন ও পলাতক নজিবুল ইসলামকে খালাস প্রদান করা হয়েছে। এদের মধ্যে মাসুদ রানা, এছাহাক আলী, লিটন মিয়া ও সাখাওয়াত হোসেন চাঞ্চল্যকর জাপানী নাগরিক হোশি কুনিও হত্যা মামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামি। এর আগে সকালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ১১ আসামিকে আদালতে নিয়ে আসা হয়। বিশেষ জজ আাদালতের পিপি এ্যাডভোকেট রথিশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনা জানান, এই মামলায় বাদীসহ ৪৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে পলাতক এক জঙ্গীসহ সাত জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন বিচারক। আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এ্যাডভোকেট আবুল হোসেনসহ কয়েকজন আইনজীবী। মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১০ নবেম্বর রাতে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা, পল্লী চিকিৎসক ও মাজারের খাদেম রহমত আলী বাজার থেকে বাসায় ফেরার পথে চৈতার মোড় নামক স্থানে তাকে জবাই করে নৃশংসভাবে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওই ঘটনায় নিহতের ছেলে এ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে কাউনিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ওই মামলায় ১৪ জেএমবির সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দাখিল করেন। যার মধ্যে আসামি পঞ্চগড়ের নজরুল ইসলাম ওরফে বাইক হাসান ২০১৬ সালের ১ আগস্ট রাতে রাজশাহীতে এবং কুড়িগ্রামের সাদ্দাম হোসেন ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি ঢাকায় বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। শুনানি শেষে বিচারক নিহত দুই জঙ্গীকে বাদ দিয়ে গত বছরের ১৬ আগস্ট ১২ জনের নামে অভিযোগ গঠন করেন। এদিকে অভিযোগ গঠনের পর মামলার বাদী নারাজি এনে পুনঃতদন্তের দাবি জানালে আদালত বাদীর আবেদন খারিজ করে দেন। পরে উচ্চ আদালতে আপীল করলে আদালত পুনঃতদন্ত করে ৪০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য পুলিশ হেড কোয়ার্টার, রংপুরকে নির্দেশ দেন। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলার পুনঃতদন্ত শেষে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর ১৩ জঙ্গীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এর মধ্যে বিজয় ওরফে আলী ওরফে দর্জি নামে এক জঙ্গীকে এ মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। উল্লেখ, ২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের চৈতার মোড়ে স্থানীয় মাজার শরীফের খাদেম রহমত আলীকে (৬০) গলা কেটে হত্যা করে জেএমবির সদস্যরা। তিনি টেপামধুপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। চৈতার বাজারে তার ওষুধের দোকান থেকে ওই দিন রাতে বাড়ি ফেরার সময় জেএমবি সদস্যরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। নিহত রহমত আলী সুরেশ্বরী পীরের অনুসারী ছিলেন। তার বাড়িতে দরবার শরিফ ছিল। এ ঘটনায় তার ছেলে এ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে কাউনিয়া থানায় একটি মামলা করেন।
×