ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার বিচার বিভাগের কাজে হস্তক্ষেপ করে না ॥ আইনমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১৮ মার্চ ২০১৮

সরকার বিচার বিভাগের কাজে হস্তক্ষেপ করে না ॥ আইনমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বর্তমান সরকার বিচার বিভাগের কাজে কখনই হস্তক্ষেপ করে না এবং কখনই হস্তক্ষেপ করবে না বলে দাবি করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি আরও বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে আপীল বিভাগ জামিন দিলেও কুমিল্লার মামলায় জামিন না হওয়া পর্যন্ত তিনি মুক্তি পাবেন না। শনিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সেন্ট জোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনটিলা বিজ্ঞান ক্লাব আয়োজিত ৬২তম বিজ্ঞান মেলায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের এ কথা জানান। বিএনপি বলছে সরকারের রাজনৈতিক ইচ্ছায় খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী রাখা হচ্ছে। নির্বাহী বিভাগের আদেশে এটা করা হচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি একটা কথাই বলি, দেখেন কথাটা অনেক বড় সাউন্ড করবে- ওনারা (বিএনপি) এ দেশে বিশ্বাসী নয়। সেজন্য ওনাদের পক্ষে রায় না দিলে ওনারা বিচার বিভাগের মতো একটা স্তরকে নিয়ে সবসময় এ রকমভাবে অনাস্থা বা খারাপ ভাষায় কথা বলেন। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক, আমি বলব ওনাদের এটা পরিহার করতে।’ ‘ওনারাও দেখেছেন, সারাদেশের জনগণ দেখেছে, আমরাও দেখেছি যে, হাইকোর্টর একটা ডিভিশন খালেদা জিয়াকে জামিন দিয়েছেন। তাহলে ওনারা যে এত খারাপ কথা বলছেন সরকার যদি সত্যি সত্যি হস্তক্ষেপ করত তাহলে এই জামিনটা কি হতো?’ আনিসুল হক বলেন, ‘আমরা বিচার বিভাগের কাজে কখনোই হস্তক্ষেপ করি না, কখনোই হস্তক্ষেপ করব না।’ খালেদা জিয়া যদি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় জামিন পান তারপরও আরও দুটি প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট আছে। এক্ষেত্রে তিনি সহসা মুক্তি পাবেন কিনা- এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘দেখেন এ বিষয়ে আমি কথা বলতে চাচ্ছিলাম না, কারণ মামলাটা বিচারাধীন। আর দ্বিতীয় হচ্ছে আমি আমার পুরনো স্কুলে এসেছি। আমার মানসিক ইয়েটাও অন্যদিকে। তবুও আপনারা যখন একটা কথা জিজ্ঞেস করেছেন, তবে আমি একটা কথা বলি।’ তিনি বলেন, ‘কাল ওনার একটা মামলার (জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট) বেইল পিটিশনের শুনানি আছে। আমি যতদূর জানি, পত্র-পত্রিকায় পড়েছি আরেকটি মামলা কুমিল্লার। সেটার জামিনের জন্য আবার ওনাকে উপস্থিত হয়ে সেটার জামিন নিতে হবে। যদি সর্বোচ্চ আদালত তাকে এ মামলায় জামিন দেনও আইনী প্রক্রিয়া যেটা বলে তিনি কালকে (রবিবার) মুক্তি পাবেন না। ওই মামলায় তাকে জামিন নিতে হবে। এটা হচ্ছে আইনের নিয়ম।’ জিয়ার অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সাজা দিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দী করা হয়। এরপর ১২ মার্চ চার মাসের অন্তর্বর্তী জামিন দেন হাইকোর্ট। একই দিন কুমিল্লায় যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোলবোমা হামলায় আট যাত্রী হত্যা মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার দেখানোর নির্দেশসহ ২৮ মার্চ তাকে আদালতে হাজির রাখতে নির্দেশ (পিডব্লিউ) দেন কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। এরপর ১৩ মার্চ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে আগামী ২৮ ও ২৯ মার্চ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত ১৪ মার্চ চার মাসের জামিন দিয়ে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ ১৮ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করেন আপীল বিভাগ। হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা পৃথক দুটি আবেদন রবিবারের তালিকায় রয়েছে।
×