ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মেঘনা নদীর ভাঙন রোধে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ১৮ মার্চ ২০১৮

মেঘনা নদীর ভাঙন রোধে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মেঘনা নদীর ভাঙ্গন রোধে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এ জন্য ৪৩২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে পরিকল্পনা কমিশন। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য এ. এন. সামসুদ্দিন আজাদ চৌধুরী বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলার লর্ড হার্ডিঞ্জ ও ধলিগৌরনগর বাজারসহ প্রকল্প এলাকায় অবস্থিত বসতবাড়ি, রাস্তা-ঘাট, মসজিদ-মাদ্রাসা, ফসলি জমি ও সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন স্থাপনা মেঘনা নদীর ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাবে। তাছাড়া প্রকল্পটি বাস্তবায়নে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্পটির অনুকূলে মধ্যমেয়াদী বাজেট কাঠামো (এমটিবিএফ) বরাদ্দের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। তাই প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ভোলা জেলার পূর্বে মেঘনা এবং পশ্চিমে তেঁতুলিয়া নদী পরিবেষ্টিত। ভোলা দ্বীপকে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষার জন্য ১৯৬৩ সালে ভোলার চারদিকে পোল্ডার ৫৬/৫৭ নির্মাণ করা হয়। এ পোল্ডারের আওতায় ২৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এবং ২৩টি সøুইস গেট নির্মাণের ফলে ভোলা জেলা বন্যা, জলোচ্ছ্বাস এবং লবণাক্ততার কবল থেকে রক্ষা পায়। পোল্ডার ৫৬/৫৭ এর নির্মাণ পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বেড়িবাঁধের বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গনের ফলে অনেক জায়গায় বাঁধের অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ বিষয়ে জরুরী কার্যক্রম নেয়া প্রয়োজন। বর্তমানে মেঘনা এবং তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙ্গনের ফলে পোল্ডার ৫৬/৫৭ এর প্রায় ৩ কিলোমিটার অংশে বেড়ি বাঁধসহ একটি ব্রিজ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া লর্ড হার্ডিঞ্জ ও ধলিগৌরনগর বাজারসহ অসংখ্য ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, মসজিদ, বরফকল, চালকসহ সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন স্থাপনা সম্পদ ভাঙ্গনের সম্মুখীন। এ সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০১৭ সালে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে নদী তীর ও বাঁধের ঢাল সংরক্ষণ এবং নদী ড্রেজিং-এর মাধ্যমে প্রকল্প এলাকা ভাঙ্গন থেকে রক্ষার জন্য প্রাথমিকভাবে এ প্রকল্পটি মোট ৫৩২ কোটি ৭১ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরে প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাবিত প্রকল্পটির ওপর ২০১৭ সালের ৩ ডিসেম্বর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। পিইসি সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে মোট ৪৩২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে এবং ২০১৮ সালের জুলাই হতে ২০২২ সালে বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২ হাজার ৮০০ মিটার নদীর তীর সংরক্ষণ, ২ হাজার ৭০০ মিটার বাঁধের ঢাল সংরক্ষণ এবং ৭ দশমিক শূন্য কিলোমিটার নদী ড্রেজিং করা হবে।
×