ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

১০০ মিটারে সেরা রূপা-হাসান

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১৭ মার্চ ২০১৮

১০০ মিটারে সেরা রূপা-হাসান

রুমেল খান ॥ অনুর্ধ ১০ সেকেন্ডের মধ্যে অনেক কিছু ঘটে যেতে পারে এ ভুবনে। ভূমিকম্পে ধূলিসাৎ হতে পারে সুউচ্চ অট্টালিকা, ঘটতে পারে গাড়ি দুর্ঘটনা, আবার এক নিঃশ্বাসের দৌড়ে হাসিল করা যায় স্বর্ণপদক। তেমনটাই হাসিল করলো রাজশাহী ক্রীড়া সংস্থার স্প্রিন্টার রূপা খাতুন এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় জেলা ক্রীড়া সংস্থার হাসান মিয়া। বাংলাদেশ যুব গেমসের সমাপনী দিনে শুক্রবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে দিনের সবচেয়ে ‘হট ইভেন্ট’ ১০০ মিটার স্প্রিন্টে মহিলা ও পুরুষ বিভাগে স্বর্ণপদক করায়ত্ত করে তারা। রাজশাহী বিভাগ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে যুব গেমসে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তাদের অর্জন ৩৭ স্বর্ণ। খুলনাও সমসংখ্যক সোনা জিতেছে। কিন্তু রৌপ্য জিতেছে রাজশাহীর চেয়ে ১২টি কম। ফলে দ্বিতীয় হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাদের। তৃতীয় হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ। এদিন যুব গেমসের ২১ ইভেন্টের মধ্যে ১০০ মিটার স্প্রিন্ট রাখা হয়েছিল সর্বশেষ চমক হিসেবে। আর এ্যাথলেটিক্সের সবচেয়ে জমজমাট এই ইভেন্টে বালিকা বিভাগের সবটুকু আলো কেড়ে নিল রাজশাহী ক্রীড়া সংস্থার রূপা খাতুন। ১২.৩০ সেকেন্ড সময় খরচ করে স্বর্ণ জিতে নিল বিকেএসপির এই ছাত্রী। এই ইভেন্টে ১২.৪০ সেকেন্ড সময় নিয়ে রৌপ্যপদক জেতেন রাজশাহী ক্রীড়া সংস্থার আরেক স্প্রিন্টার সনিয়া আক্তার। ১২.৬০ সেকেন্ড সময় নিয়ে তাম্র জেতে ঢাকা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার আফ্রিয়া অলিন। দুটি ইভেন্টে অংশ নিয়ে দুটিতেই স্বর্ণ জিতেছে পাবনার মেয়ে রূপা খাতুন। ২০০ মিটারের স্বর্ণপদকও জিতেছে দশম শ্রেণীর এই ছাত্রী। তবে ১০০ মিটার স্প্রিন্টের স্বর্ণই বেশি তৃপ্তি দিয়েছে তাকে। কারণ এ্যাথলেটিক্স শুরু করার পর ২০০ মিটারে ভাল করলেও ১০০ মিটারে হেরে যেত সে। যে কারণেই তার কণ্ঠে উচ্ছ্বাস, ‘খুবই ভাল লাগছে। এত আয়োজনের মাঝে সেরা হওয়া দারুণ ব্যাপার। তবে আমি জাতীয় পর্যায়ে নয়, বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বর্ণ জিততে চাই।’ জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপেও স্বর্ণ জিতেছে রূপা। সময় নিয়েছে ১২.৬০ সেকেন্ড। এবার সেটাকে নিয়ে এসেছে ১২.৩০ সেকেন্ডে। এর সবটা বিকেএসপির কোচ আবদুল্লাহ-হেল কাফির জন্য সম্ভব হয়েছে বলে জানায় সে, ‘স্কুল পর্যায়ে শীতকালীন-গ্রীষ্মকালীন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতাম। সেখানে আমার দৌড় দেখে কাফি স্যার আমাকে ২০১৫ সালে বিকেএসপিতে ভর্তি করিয়ে দেন। ১০০ মিটারে এখন যে ভাল করছি সেটা স্যারের কারণেই। উনি আমাকে নিয়ে অনেক কাজ করেছেন।’ কাফির পাশাপাশি পরিবার থেকে সবসময় সমর্থন পায় রূপা। যে কারণেই বড় স্বপ্ন দেখার সুযোগ পাচ্ছে সে। এই ইভেন্টে ১১.০৬ সেকেন্ডে সময় নিয়ে দ্রুততম যুবক হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় জেলা ক্রীড়া সংস্থার হাসান মিয়া। কৃষক পরিবারের সন্তান হাসান মিয়া এ্যাথলেটিক্স নিয়ে অনেক বড় স্বপ্ন দেখে। জাতীয় পর্যায়ের সবগুলো রেকর্ডই করায়ত্ত করতে চায় কুমিল্লার এই তরুণ। অনেক কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই স্বপ্নের পেছনে ছুটে চলছে সে। পরিবার থেকে শুরু করে সবার কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়ে তার স্বপ্নটা আরও বড় হচ্ছে। তার বিশ্বাস একদিন বাংলাদেশের হয়ে অনেক স্বর্ণ জিতবে। সর্বশেষ জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক জিতেছিলেন হাসান মিয়া। সেবার হ্যান্ডটাইমিং-এর চেয়ে ভাল হয়েছিল। এবার কমে যাওয়ার কারণ তার অসুস্থতা। যুব গেমসের মতো আসরে ভাল করে উৎফুল্ল হাসান। ভবিষ্যতে এই ফল তাকে আরও ভাল করতে অনুপ্রাণিত করবে। ১০০ মিটার স্প্রিন্টে রৌপ্য জিতেছে একই বিভাগের আব্দুল মোত্তালেব (১১.৪০ সেকেন্ডে)। ঢাকা বিভাগীয় জেলা ক্রীড়া সংস্থার নাদিম মোল্লা (১১.৬০ সেকেন্ড) জিতেছে তাম্রপদক।
×