ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রুশ কূটনীতিক বহিষ্কার

ব্রিটেনের পাশে ইইউ ও যুুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ১৭ মার্চ ২০১৮

 ব্রিটেনের পাশে ইইউ ও যুুক্তরাষ্ট্র

ব্রিটেনে সাবেক রুশ গোয়েন্দা সের্গেই স্ক্রিপাল ও তার মেয়েকে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থের সাহায্যে হত্যা প্রচেষ্টায় জড়িত থাকার অভিযোগে সে দেশ থেকে ২৩ রাশিয়ার কূটনীতিক বহিষ্কারের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। -বিবিসি ও এএফপি। ব্রিটেনকে ঘনিষ্ঠতম মিত্রদেশ হিসেবে উল্লেখ করে হোয়াইট হাউস দেশটির সব ধরনের সিদ্ধান্তের প্রতি তাদের সংহতি প্রকাশ করেছে। তবে মস্কো থেকে এই রাসায়নিক হামলায় তার দেশের জড়িত থাকার কথা আবারও অস্বীকার করা হয়েছে। ক্রেমলিন প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী যদি রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, তবে ব্রিটেনের বিরুদ্ধেও অনুরূপ প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে ট্রাম্পের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স রাশিয়াকে অভিযুক্ত করে বলেছেন যে, বিশ্বব্যাপী দেশটি অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা লঙ্ঘন করে চলেছে। যুক্তরাষ্ট্র চায়, এ ধরনের ঘৃণ্য হামলা আর কোন দেশে কখনও ঘটবে না। তাই যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ব্রিটেন থেকে রুশ কূটনীতিক বহিষ্কারের মাধ্যমে একটি সঠিক জবাব দেয়া হয়েছে। উত্তর আমেরিকা বিষয়ক সম্পাদক জন সপেল বলেন, হোয়াইট হাউস টেরেসা মে’র প্রতি যে অকুণ্ঠ সমর্থন ব্যক্ত করেছেÑ তা প্রণিধানযোগ্য ! তিনি বলেন, এটি এ কারণে আরও তাৎপর্যপূর্ণ যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাশিয়া সম্পর্কে সচরাচর যে ভাষায় কথা বলেন বর্তমানে হোয়াইট হাউসের ভাষা তার থেকে ব্যতিক্রম- এ ধরনের ভাষা ওভাল অফিস থেকে এর আগে শোনা যায়নি। সারাহ স্যান্ডার্স বলেন, সব ধরনের আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি উপেক্ষা করে অন্য দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছে। এর মাধ্যমে তারা পাশ্চাত্যের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও প্রক্রিয়াকে অন্তর্ঘাতমূলক তৎপরতার মুখে ঠেলে দিয়ে এর প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশের সুযোগ করে দিল। জানা গেছে, সার্গেই স্ক্রিপালের ওপর যে রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগ করা হয়েছিল তার নাম ‘নোভিচক।’ এটি সোভিয়েত যুগে রাশিয়ায় ১৯৭০ থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে উদ্ভাবন করা হয়। এই পদার্থ প্রয়োগের দরুন মে রাশিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তিযোগ্য অপরাধের অভিযোগ এনেছেন। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বুধবার জরুরী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। তবে বিশ্বকাপের আগে পরিস্থিতি ঘোলা করার লক্ষ্যে অন্য কেউ এই খেলা খেলতে পারে। তাছাড়া ব্রিটেন ও ব্রেক্সিট পরবর্তী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা থেকে সকলের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে এই কাজটি করতে পারে বলে ল্যাভরব তার অভিমত প্রকাশ করেছেন। এদিকে, ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলো এক যৌথ বিবৃতিতে ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ব্রিটেনের প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়েছে। ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ বলেছেন, ন্যাটোর ৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ব্রিটেন এখন পর্যন্ত কোন ধরনের সাহায্যের অনুরোধ জানায়নি। উল্লেখ্য, ন্যাটোর ৫ অনুচ্ছেদে বর্ণিত আছে যে, কোন সদস্য দেশ আক্রান্ত হলে তা অন্য দেশগুলোর ওপর হামলা বলে পরিগণিত হবে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও ফ্রান্স, জার্মানি ও ইইউ নেতৃবৃন্দ ব্রিটেনের প্রতি তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ব্রিটেনের স্যালিসবারিতে নোভিচকের মতো মারাত্মক রাসায়নিক হামলা চালানোর মতো কোন যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা থাকতে পারে না- তাই তারা মস্কোর কাছে এর যথাযথ কারণ জানতে চেয়েছেন। মে বলেছেন, এটা এখন যুক্তরাজ্যে ঘটেছে- তবে এভাবে চলতে দিলে- তা বিশ্বের যে কোন স্থানে ঘটতে পারে- তাই এর বিরুদ্ধে এক সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অন্যদিকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, স্ক্রিপালকে লক্ষ্য করে কোন হামলার উদ্দেশ্য তার দেশের নেই।
×