ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ক্ষতিপূরণ পাওয়া অনিশ্চিত

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ১৭ মার্চ ২০১৮

 ক্ষতিপূরণ  পাওয়া অনিশ্চিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নেপালে স্মরণকালের ভয়াবহ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় হতাহতের স্বজনদের ক্ষতিপূরণ পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। একদিকে দীর্ঘসূত্রতা ও অন্যদিকে জটিলতার মুখে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে নেপালী সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট। তারা জানায়, ১৯৯৯ মন্ট্রিয়ল চুক্তিতে বাংলাদেশ ও নেপালের স্বাক্ষরের বিষয়টি বিলম্বিত হওয়ায় এই জটিলতা তৈরি হয়েছে। ১৯৯৯ সালের ২৮ মে বাংলাদেশ চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেও আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেনি। নেপাল এখনও স্বাক্ষরই করেনি। ২০১০ সালে উদ্যোগ নিলেও শেষ পর্যন্ত সই করেনি তারা। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শুধু ভারত, পাকিস্তান ও মালদ্বীপ এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। মন্ট্রিয়ল চুক্তির ২১নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নিহত যাত্রীদের প্রত্যেকের জন্য এয়ারলাইন্স ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫২৬ ডলার দেবে। সব এয়ারলাইন্সই এই ক্ষতিপূরণের জন্য ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কাছে বীমা করে থাকে। যাত্রী ও তাদের পরিবারকে এই ইন্স্যুরেন্স সম্পর্কে আগেই জানাতে হয়। তবে নেপাল ওয়ারস কনভেনশনে স্বাক্ষর করায় এয়ারলাইন্সকে এখন প্রত্যেক যাত্রীর জন্য ২০ হাজার ডলার দিতে হবে। দেশটির বীমা প্রতিষ্ঠান সাগমাথার কর্মকর্তা সুভাষ দিক্ষিত বলেন, এমন দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে দুই রকম নীতির মধ্যে পড়তে হবে নেপালকে। মন্ট্রিয়ল চুক্তিই এয়ারলাইন্সগুলোর মধ্যে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ও গ্রহণযোগ্য সমঝোতা। ১৯৯৯ সালে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের সদস্য দেশগুলো এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এই সমঝোতায় বলা হয়, যে কোন যাত্রীর হতাহতের জন্য বিমান কর্তৃপক্ষই দায়ী থাকবে। নেপালের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, এই সমঝোতায় স্বাক্ষর করার বিষয়টিকে কখনোই গুরুত্ব দেয়া হয়নি। এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তবে খুব ধীরগতির। তবে ওই সমঝোতার একটি কপি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই কর্মকর্তা বলেন, আইন মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে এটি মন্ত্রিসভায় যাবে। এরপর আলোচনা হবে পার্লামেন্টে। এই সমঝোতা বাস্তবায়নে নতুন আইন প্রয়োজন মন্তব্য করে তিনি বলেন- অবশ্যই এটা এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদে এটি বিমান কর্তৃপক্ষকে আরও দায়িত্বশীল করে তুলবে। নেপালী স্থানীয় এয়ারলাইনগুলোর দাবি, আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচলে এই ক্ষতিপূরণের পরিমাণ যেন সমান না হয়। এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা বলেন, আমরা মনে করি যাত্রীরা যেখানেই ভ্রমণ করুক, তারা সবাই সমান। নেপালের ক্ষেত্রে আমরা ১৯২৯ সাল থেকে ওয়ারস সমঝোতা মেনে চলছি। সে অনুযায়ী প্রত্যেক যাত্রীর ৮ হাজার ৩০০ ডলার পাওয়ার কথা। তবে ১৯৫৫ সালের সেপ্টেম্বরে হেগে এটির সংশোধন করা হয়। হেগ প্রটোকল অনুযায়ী সেটা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ডলারে। গত সোমবার ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে দুপুর ২টা ২০ মিনিটে কাঠমান্ডু বিমানবন্দরে পৌঁছায় বিমানটি। অবতরণের সময় বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। এরপর বিমানবন্দরের কাছেই একটি ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত হয় এটি। দুর্ঘটনায় ৫১ জন নিহত হন। এর মধ্যে ২৬ জন বাংলাদেশী। নেপালেরও রয়েছেন বেশ কয়েকজন।
×