ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্লাস্টিক বোতলের পানিতে মহাবিপদ

প্রকাশিত: ০৪:৪৯, ১৭ মার্চ ২০১৮

প্লাস্টিক বোতলের পানিতে মহাবিপদ

প্লাস্টিকের বোতলে দীর্ঘদিন পানি সংরক্ষণ বা সেই বোতলের বারবার ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে এর আগে অনেক কথাই হয়েছে। তবে এবার বলা হচ্ছে প্লাস্টিকের বোতলের ভেতর থাকা পানিতেও রয়েছে বিপদ। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এ কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, নামী দামী ব্র্যান্ডের ‘মিনারেল ওয়াটার’-এ মাইক্রো প্লাস্টিক কণার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। অর্ব মিডিয়া নামে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সংক্রান্ত একটি অলাভজনক সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। বৃহস্পতিবার রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছে। ফ্রিডোনিয়ার নিউইয়র্ক স্টেট ইউনিভার্সিটির মাইক্রো প্লাস্টিক বিষয়ক গবেষক শেরি ম্যাসনের নেতৃত্বে তৈরি করা হয়েছিল একটি গবেষণা দল। অর্ব মিডিয়ার হয়ে সম্প্রতি তারা ব্রাজিল, চীন, ইন্দোনেশিয়া, কেনিয়া, লেবানন, মেক্সিকো, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মতো ৯ দেশের প্রায় আড়াই শ’ পানির বোতল পরীক্ষা করেন। প্রতিবেদনে দেখা যায়, ৯৩ শতাংশ ক্ষেত্রেই পানির মধ্যে মাইক্রো প্লাস্টিকের অস্তিত্ব আছে। যেসব ব্র্যান্ডের নাম গবেষণায় উঠে এসেছে, তার মধ্যে রয়েছে ভারতে বহুল ব্যবহৃত দুটি ব্র্যান্ডও। গবেষকদের মতে, বোতলের পানিতে যে মাইক্রো প্লাস্টিকের কণা মিলেছে, তার মধ্যে রয়েছে পলিপ্রপিলেন, নাইলন ও পলিথাইলিন টেরেপথালেটের মতো রাসায়নিক। শেরি ম্যাসন বলেন, বোতলের পানিতে যে বিষাক্ত রাসায়নিকের অস্তিত্ব তারা খুঁজে পেয়েছেন, তার মধ্যে ৬৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, সেগুলো মাইক্রো প্লাস্টিকের কণার অংশবিশেষ, ফাইবার নয়। এক একটি বোতলে দশ হাজারেরও বেশি প্লাস্টিকের কণার হদিস মিলেছে। প্রতি লিটারে হিসেব করলে যার গড় পরিমাণ হয় ১০ দশমিক ৪ শতাংশ। কিন্তু পরিশোধিত পানির মতো কোন পানীয়তে এই ধরনের বিষাক্ত জিনিস ঢুকছে কী করে? জবাবে ম্যাসন জানান, মূলত যে প্লাস্টিক পদার্থ দিয়ে বোতল বা তার ঢাকনা তৈরি হচ্ছে, সেখান থেকেই জলে মিশছে মাইক্রো প্লাস্টিকের বিষ। এই ধরনের বিষাক্ত পানি দীর্ঘদিন ধরে খেলে তার পরিণাম কী হতে পারে তা অবশ্য পরিষ্কার করেননি গবেষকরা। তবে ক্যান্সার, অটিজম, শুক্রাণু কমে যাওয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায় বলে জানাচ্ছেন তারা। ম্যাসনের কথায়, ‘বোতলের পানি থেকে কলের পানি অনেক বেশি নিরাপদ বলে মনে করি আমরা। প্লাস্টিকের বোতলের পানিকে যত দ্রুত অতীত করা যায়, ততই মঙ্গল।’ তবে ইউরোপীয় ‘ফুড সেফটি অথরিটি’র দাবি, মানব শরীরে প্লাস্টিকের কণা ঢুকলে তা ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে হজম হয়ে যায়। শুধুমাত্র কিছু কণা পাকস্থলীতে থেকে যায়, যা পরবর্তী সময়ে শরীরের ক্ষতি করতে পারে। -বিবিসি অবলম্বনে।
×