ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চ্যাম্পিয়ন্স লীগে সেঞ্চুরি, উচ্ছ্বসিত মেসি

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ১৬ মার্চ ২০১৮

চ্যাম্পিয়ন্স লীগে সেঞ্চুরি, উচ্ছ্বসিত মেসি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আরও একটি গৌরময় মাইলফলক স্পর্শ করেছেন লিওনেল মেসি। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয় কোন খেলোয়াড় হিসেবে ১০০ গোলের ক্লাবে প্রবেশ করেছেন বার্সিলোনার আর্জেন্টাইন তারকা। বুধবার রাতে চেলসির বিরুদ্ধে জোড়া গোল করে আরও অনেক রেকর্ডে নাড়া দিয়েছেন পাঁচবারের ফিফা সেরা তারকা। ম্যাচের এক পর্যায়ে টেন নেটওয়ার্কের ধারাভাষ্যকার বলছিলেন, ‘মেসির খেলা দেখাটাও সৌভাগ্য। পৃথিবীর সেরা ফুটবলার সে। অন্য অনেকে অনেক গোল করলেও মেসির মতো এরকম চোখ ধাঁধানো ফুটবল খেলে গোল করতে কেউ পারেনি।’ আসলে মেসি অনন্য। মেসির তুলনা শুধু মেসি নিজেই। গোলের সেঞ্চুরি হতে দরকার ছিল মাত্র দুই গোল। কিন্তু প্রতিপক্ষ চেলসি বলেই অনেকে হয়তো ধরেই নিয়েছিলেন মেসির আরও অপেক্ষা করতে হবে শততম গোলের জন্য। কিন্তু অপেক্ষাকে তুড়ি মেরে জোড়া গোল করার মাধ্যমে সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলে গোলের সেঞ্চুরি করেছেন মেসি। মেসির যেখানে ১০০ গোল করতে লেগেছে ১২৩ ম্যাচ সেখানে রোনাল্ডোর লেগেছিল ১৩৭ ম্যাচ। শুধু তাই নয়, ১০০ গোল করার দৌড়ে রোনাল্ডোর থেকে ১৭৫৮ মিনিট কম খেলেছেন মেসি। রোনাল্ডো যেখানে ১০০ গোল করতে শট করেছেন ৭৯০টি, মেসি সেখানে শট নিয়েছেন ৫২৪টি। শত গোলের ভেতর সবথেকে বেশি ৯টি গোল করেছেন আর্সেনালের বিপক্ষে। অন্যদিকে এসি মিলান এবং সেল্টিকের বিপক্ষে করেছেন ৮ গোল। তাছাড়া এক ক্লাবের হয়েও দ্বিতীয় ফুটবলার হিসেবে শততম গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন মেসি। মেসি ১০০ গোলের ৪টি করেছেন হেডে। ১৫টি করেছেন ডান পায়ে। আর ৮১টি করেছেন বাম পায়ে। ১০০ গোলের ৪১টি করেছেন এ্যাওয়ে ম্যাচে। আর ৫৭টি করেছেন ন্যুক্যাম্পে। ২টি গোল এসেছে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে ১০০ গোল করার পাশাপাশি উয়েফা ইউরোপা লীগেও ৩টি গোল করেছেন মেসি। তাতে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় তার মোট গোল ১০৩টি। এমন বড় আসরে অসাধারণ কীর্তি গড়ে স্বাভাবিকভাবেই বেশ উৎফুল্ল মেসি। ম্যাচের পরে সংবাদ সম্মেলনে তার মুখে আত্মতৃপ্তির ছাপ ছিল সুস্পষ্ট। তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে মেসি বলেন, এমন প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্টে শততম গোল করায় আমি খুবই খুশি। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, এমন একটা টিমের বিপক্ষে গোল পাওয়া সত্যিই কষ্টসাধ্য, যেখানে অনেক ভাল ফুটবলার খেলেন। মেসি আরও বলেন, আমরা ম্যাচের শুরুতেই গোল পেয়েছি, যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পুরো ম্যাচ নিয়েই আমি সন্তুষ্ট। এই ম্যাচটা অনেক কঠিন ছিল এবং দল হিসেবে আমরাও যথেষ্ট শক্ত প্রতিপক্ষ ছিলাম। যখন দলের তিন নম্বর গোলটা হয়েছে তখন সত্যি বলতে ম্যাচটা আমাদের দখলে চলে এসেছে। এমন অসাধ্য সাধনের পর স্বাভাবিকভাবেই শত্রু-মিত্র সবাই মেসির প্রশংসা করছেন। প্রতিপক্ষ চেলসি কোচ এ্যান্টোনিও কন্টেও থেমে থাকেননি। ব্লুজ কোচ বলেন, ৫০ বছরে মেসিদের মতো ফুটবলাররা একবার জন্মায়। সাবেক এই ইতালিয়ান কোচ প্রশংসা করেই থামেননি। জানিয়েছেন প্রতি ম্যাচের পর মেসি বন্দনায় ব্যস্ত হওয়ার ব্যাপারটা তিনি বেশ উপভোগও করেন। বলেন, খেলা শেষে মেসির প্রশংসা করতে পারার ব্যাপারটায় আমি আনন্দ পাই। আমরা অসাধারণ একজন খেলোয়াড়কে নিয়ে কথা বলছি, যিনি বিশ্বসেরা। প্রতিপক্ষ কোচ থেকে অমন স্তুতি শোনার যথেষ্ট রসদও আছে। কিছুদিন আগে ক্যারিয়ারের ৬০০তম গোলের দেখা পেয়েছেন। এবার চ্যাম্পিয়ন্স লীগে করেছেন শততম গোল। তৃতীয়বার বাবা হওয়ার পর প্রথমবার মাঠে নেমেই দারুণ সফল হয়েছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। প্রথম ছেলে থিয়াগো জন্ম নেয়ার পর ২৬৯ গোল করেছেন মেসি। দ্বিতীয় ছেলে মাতেও জন্ম নেয়ার পর করেছেন ১২৪ গোল। আর তৃতীয় ছেলে চিরো জন্মের পর প্রথম ম্যাচেই করেছেন জোড়া গোল। দেখা যাক, চিরোর পাশে ভবিষ্যতে কতটি গোল জমা হয়।
×