ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রথম ধাপে ৩৭৪ রোহিঙ্গাকে নিতে সম্মত মিয়ানমার

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১৫ মার্চ ২০১৮

প্রথম ধাপে ৩৭৪ রোহিঙ্গাকে নিতে সম্মত মিয়ানমার

চট্টগ্রাম অফিস/স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ প্রথম ধাপে ৩৭৪ জনকে ফিরিয়ে নেয়ার মাধ্যমে শুরু হবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন। মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে বুধবার এ তালিকা পাঠান হয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। ৮ হাজার ৩২ জনের তালিকা থেকে যাচাই বাছাই করে এ তালিকা চূড়ান্ত করেছে তারা। চুক্তি অনুযায়ী জাতিসংঘের কোন সংস্থার মাধ্যমে এদের ফেরত পাঠান হবে। এ দিকে, দীর্ঘসূত্রতার পর অবশেষে প্রত্যাবাসন কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে এ টুকু অগ্রগতি হলেও রাখাইন প্রদেশে সে দেশের সেনাদের নিরাপত্তা স্থাপনা গড়ার কাজটিও চলমান রয়েছে। এখনও ভীতি কাটেনি রোহিঙ্গাদের। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে যাচাই বাছাইয়ের যে ৮ হাজার ৩২ জনের যে তালিকা উপস্থাপন করা হয়েছিল তারমধ্য থেকে প্রথম ধাপে মাত্র ৩৭৪ জনকে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে সম্মতি প্রদান করেছে মিয়ানমার। এরা ৯০টি পরিবারের সদস্য। তবে এর মধ্যে আরসা সদস্যও রয়েছে বলে সন্দেহ করছে দেশটি। কিন্তু এরপরও তাদের ফিরিয়ে নেয়া হবে বলে জানান হয়েছে। যারা ফিরবে তাদেরকে নেয়া হবে রাখাইনের অধিবাসী হিসাবে। এ ক্ষেত্রে নাগরিকত্বের বিষয়টি আসছে না। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট করা হয়েছে জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনএইচসিআরকে। প্রথম দফায় প্রত্যাবাসনে সম্মতির কথা জানান হলেও কবে নাগাদ তা হচ্ছে স্পষ্ট নয়। এ দিকে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর চালান তা-বলীলা মুছে দিয়ে সেখানে নতুন তিনটি সামরিক স্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু করেছে। সূত্র মতে মংডু, রাচিদং ও বুচিদংয়ে জানুয়ারি থেকে এসব নির্মাণ কাজ শুরু করেছে মিয়ানমার। তবে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার পর সেখানে রাখতে অন্তত ৩২টি অস্থায়ী শেডও নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের অন্য গ্রামগুলো গুড়িয়ে দেয়ার পর সেখানে সেনা ঘাঁটি, হেলিপ্যাড ও সড়ক নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সেনা বাহিনী। ওসব অবকাঠামো নির্মাণের জন্য পাড়াগুলোতে থেকে যাওয়া রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক ঠেলে দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশের দিকে। এ জন্য প্রত্যেহ বিচ্ছিন্নভাবে রোহিঙ্গা পরিবার অনুপ্রবেশ করছে বলে জানায় একাধিক রোহিঙ্গা নেতা। বিজিবি-বিজিপি যৌথ টহল ॥ টেকনাফ সীমান্তে নাফনদীতে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) যৌথ টহল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টায় নাফনদীর টেকনাফ সদর থেকে এ টহল শুরু হয়ে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে। যৌথ টহলে বিজিবির পক্ষে সুবেদার মোঃ ইব্রাহিম হোসেন এবং বিজিপির পক্ষে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্রাঞ্চের ইনচার্জ থেইন লিন মং নেতৃত্ব দেন। সৌহার্দপূর্ণ সহ-অবস্থানের প্রত্যয়ে নাফনদীতে যৌথ টহল সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে টেকনাফ-২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে. কর্নেল মোঃ আছাদুদ জামান চৌধুরী বলেন, উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী সীমান্তে মাদক পাচার, অবৈধ অনুপ্রবেশরোধ ও মাছধরা জেলেদের বিষয়ে কোন সমস্যার সৃষ্টি হলে প্রয়োজনে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানে সচেষ্ট থাকবে বলে ঐকমত্য পোষণ করেন। তিনি আরও জানান, ২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ টেকনাফ বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় টেকনাফের নাজিরপাড়া হতে মিয়ানমারের পেরাংপুরো এলাকা পর্যন্ত মিয়ানমারের বিজিপির সঙ্গে যৌথ টহল দেয়া হয়। ঘণ্টাব্যাপী এ যৌথ টহল শেষে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিজিবি সদস্যরা টেকনাফ বাংলাদেশ-মিয়ানমার ট্রানজিট জেটি হয়ে ফিরে আসে।
×