ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতদের পরিবারকে ব সহায়তা দেয়া হবে ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১৫ মার্চ ২০১৮

বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতদের পরিবারকে ব সহায়তা দেয়া হবে ॥ প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরকে অত্যন্ত দুর্ঘটনাপ্রবণ এয়ারপোর্ট হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছেন, এর আগে এই বিমান বন্দরে ৭০ বার দুর্ঘটনা ঘটেছে। বুধবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের এক জরুরী যৌথসভার সূচনা বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, নেপালে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় হতাহতদের পরিবারকে সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে। আহত ও নিহতদের পরিবারের কার কী প্রয়োজন, সেই খোঁজ নেয়াসহ এসব পরিবারের সদস্যদের পাশে দাঁড়াতে দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি। বিমান দুর্ঘটনার সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে চারদিনের সফরের উদ্দেশে সিঙ্গাপুর ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, বিমান দুর্ঘটনার পরই আমি সিঙ্গাপুর সফর বাতিল করে দেশে ফিরে আসি। আমার মনে হয়েছিল, এই সময় আমার দেশে থাকা প্রয়োজন। কারণ বহু বছর আমাদের দেশে এ রকম বিমান দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মঙ্গলবার দেশে ফিরে এসে বুধবার সকালে মিটিং করেছি। সেখানে তিন বাহিনী প্রধান, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অনেকেই ছিলেন। আজ বৃহস্পতিবার ১ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছি। আগামী শুক্রবার সারাদেশের সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রার্থনা করা হবে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, নেপালে একটি মেডিক্যাল টিম এবং ডিএনএ সংগ্রহের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ টিম পাঠানো হচ্ছে। কারণ আগুনে পোড়া কিছু লাশ ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া শনাক্ত করা কঠিন। তাছাড়া আমরা নেপালে খুব বেশি লোক পাঠাতে পারব না। কারণ তাদের ওপর চাপ পড়ে যাবে। তবে যা যা লাগবে তার সহায়তা আমরা দেব। বিমান দুর্ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যের বিষয়’ হিসেবে আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা নিহত হয়েছে তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য আমি ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকার আমাদের দলের এমপি এবং নেতাদের নির্দেশ দিয়েছি। তাদের কী প্রয়োজন, কী সহায়তা করা যেতে পারে সে বিষয়ে দেখা করে খোঁজ নিতে বলেছি। তিনি বলেন, পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তা, আমাদের দলের সিআরআইয়ের ৫ নম্বর অফিসে কাজ করত একটা ছেলে তার স্ত্রী এবং বাচ্চা সবাই মারা গেছে। আহতদের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আহতদের অবস্থা খুবই খারাপ। অনেকের অবস্থা এমন যে ওখান থেকে নিয়ে আসারও উপায় নেই। ইতোমধ্যে আমাদের বিমানমন্ত্রী নেপালে গেছেন। নেপালের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি দেখা করেছেন। করণীয় বিষয়ে আলোচনা করছেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, নেপালের কিছু শিক্ষার্থী ছিল ওই উড়োজাহাজে। তারা আমাদের দেশে মেডিক্যাল পড়ে ডাক্তার হতে এসেছিল। এমবিবিএস পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি যাচ্ছিল। আজকে তারাও নেই। ফুল না ফুটতেই ঝরে গেল। গণভবনের ব্যাঙ্কোয়েট হলে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের মধ্যে এইচটি ইমাম, মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, ওবায়দুল কাদের, রাশিদুল আলম, মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, খালিদ মাহমদু চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ফরিদুন্নাহার লাইলী, দেলোয়ার হোসোন, এসএম কামাল হোসেন, ওমর ফারুক চৌধুরী, মোল্লা মোঃ আবু কাওছার, অপু উকিল, সাইফুর রহমান সোহাগ, এসএম জাকির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অন্য বৈঠকের মতো এই বৈঠকে কোন আড়ম্বর ছিল না। চেয়ার টেবিল ছাড়াই কয়েকটি সোফা এবং প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে বৈঠক করেন নেতারা। প্রধানমন্ত্রী ও ওবায়দুল কাদের বসেছিলেন অন্য নেতাদের সমান্তরাল ছোট্ট একটি টেবিলসদৃশ মঞ্চে। রাত সাড়ে আটটায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলছিল। জরুরী এ বৈঠকের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি মঙ্গলবার এয়ারপোর্টে নামার পরপরই আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদককে বলি, ঢাকায় যারা আছে তাদের সকলকে নিয়ে আমি বসতে চাই। আমরা এখন শোক প্রস্তাব নেব। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কী করণীয় এ ব্যাপারে দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করব। সকলকে নিরাপদ জীবন কামনা করে প্রধানমন্ত্রী তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ করেন।
×