ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদা জিয়াকে সমঝোতার প্রস্তাব দেয়ার খবর ভিত্তিহীন ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১৪ মার্চ ২০১৮

খালেদা জিয়াকে সমঝোতার প্রস্তাব দেয়ার খবর ভিত্তিহীন ॥  কাদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে সরকারের পক্ষ থেকে সমঝোতা প্রস্তাব দেয়ার বিষয়ে গণমাধ্যমে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, প্রকাশিত খবরটি সত্য নয়। দুর্নীতির মামলায় আদলত খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়েছে। আদালতের ওপর সরকারের কোন হস্তক্ষেপ ছিল না। আবার আদালত তাঁর জামিন দিয়েছে। এর সঙ্গেও সরকারের কোন সমঝোতার বিষয় নেই। কারাগারে গৃহপরিচারিকা দেয়া ও স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করার অনুমতি দেয়ার বিষয়টিও আদালতের এখতিয়ার বলে উল্লেখ করেন। মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুর-১২ নম্বর সেকশনে ইলিয়াস আলী মোল্লা বস্তির অগ্নিকা-ের ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, বিএনপি গোপনে ও তলে তলে আগে থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। অগ্রসর হচ্ছে। আমরা তাদের তৃণমূলের খবর জানি। তারা নির্বাচনী কাজ ঠিকঠাক চালিয়ে যাচ্ছে। এতে তাদের কোন সমস্যা কিংবা অসুবিধা হচ্ছে না। আদালতের এক আদেশে বিএনপির হতাশা এবং অন্য আদেশে আনন্দ প্রকাশে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, আদালত তাকে সাজা দিয়েছে, আদালতই তাকে জামিন দিয়েছে। এখানে বিএনপির হতাশার আর আনন্দের বিষযটি সত্যিই অবাক করার মতো। বিএনপি খালেদা জিয়ার সাজা হলে হতাশ হয়, আবার জামিন পেলে খুশি হয়। তাহলে বিএনপি এতদিন যে কর্মসূচী পালন করল তা সরকারের বিরুদ্ধে না আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে প্রশ্ন রাখেন তিনি। বিএনপির সঙ্গে সরকারের কোন ধরনের সমঝোতার চেষ্টা হচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, আদালতের রায়কে আমরা শ্রদ্ধা করি। এটাও স্পষ্ট করে বলতে চাই, সোমবার আদালত খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দিয়েছে, এটাতেও সরকারের কোন প্রভাব বা হস্তক্ষেপ নেই। উল্লেখ্য গত ৭ মার্চ কারাগারে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের সাত নেতার সাক্ষাতকার নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, সেদিন সরকারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছেন মির্জা ফখরুল। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনায় এই খবরকে হাস্যকর হিসেবে আখ্যায়িত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পত্র পত্রিকাতে খবর দেখি আমরা নাকি কারাগারে সরকারের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা প্রস্তাব নিয়ে গেছি। হাসি পায়। আপনারা কোথায় পান এমন তথ্য? এদিকে মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনে ইলিয়াস আলী মোল্লা বস্তি পরিদর্শনে গিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীদের তাৎক্ষণিক সহায়তা হিসেবে একশ’ মণ চাল ও দশ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসককে দ্রুততার সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। এতে তাদের পুনর্বাসন করা সহজ হবে। অগ্নিকা-ের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলার সময় আমি তাদের কাছে অগ্নিকা-ের কারণ সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলাম। তারা কেউ বলেছে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, আবার কেউ বলেছে বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। অগ্নিকা-ের কারণ সম্পর্কে তদন্ত চলছে। তদন্তের পরই বলা যাবে কিভাবে আগুন লেগেছিল। তিনি বলেন, এখন অসুস্থদের চিকিৎসার বিষয়টা সরকার বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। রাজধানীতে বস্তিবাসীদের আবাসনের জন্য তুরাগ থানাধীন বাউনিয়া এলাকায় সরকারের একটি প্রকল্প চলছে। বাউনিয়ায় বিরাট এলাকা জুড়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। এখানে ২০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ হবে। মিরপুরে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীকে সরকার ঘরবাড়ি তৈরি করে দেবে। নেপালের কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান পরিবহন সংস্থা ইউএস-বাংলার একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ায় নিহত ও আহত ব্যক্তিদের প্রতি সরকার অনেক বেশি আন্তরিক বলে জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, জীবনের ক্ষতি কোন দিন পূরণ হবে না। সরকার এ ব্যাপারে কতটুকু আন্তরিক, তার প্রমাণ প্রধানমন্ত্রী তাঁর সফর ২৬ ঘণ্টা সংক্ষেপ করে গতকাল বিকেলে ঢাকা নেমেছেন। উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় ক্ষতিপূরণের বিষয়টি দেখতে ইউএস-বাংলা আছে। সরকার যদি সে রকম কিছু দেয়, সেটা বৈধভাবে আলাপ-আলোচনা করে তারপর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান ওবায়দুল কাদের। এর আগে ওবায়দুল কাদের স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীর দুঃখ-দুর্দশা ঘুরে ঘুরে দেখেন। তিনি বস্তিবাসী লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় ক্ষতিগ্রস্তদের অনেককেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়তে দেখা যায়। এ সময় অন্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী মোল্লা, আসলামুল হক আসলাম এমপি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×