ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আজ বাংলাদেশ ভারত ফিরতি লড়াই

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ১৪ মার্চ ২০১৮

 আজ বাংলাদেশ ভারত  ফিরতি  লড়াই

মিথুন আশরাফ ॥ ভারতের বিপক্ষে আজ নিদাহাস ট্রফিতে লড়াই করবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় শুরু হবে। ম্যাচটিতে বাংলাদেশ জিতলে ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলবে। আর ভারত জিতলে ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করবে। এ মুহূর্তে নিদাহাস ট্রফিতে ভারতের অবস্থা সবচেয়ে ভাল। দলটি তিনটি ম্যাচ খেলে দুটি ম্যাচে জিতেছে। ৪ পয়েন্ট পেয়েছে। আজ ভারতের গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচ। শ্রীলঙ্কাও তিনটি ম্যাচ খেলেছে। জিতেছে একটি ম্যাচে। হেরেছে দুটি ম্যাচে। পয়েন্ট ২। বাংলাদেশের পয়েন্টও শ্রীলঙ্কার সমান। তবে বাংলাদেশ ম্যাচ খেলেছে দুটি। আজ বাংলাদেশ নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে খেলবে। টুর্নামেন্টে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে। ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৬ উইকেটে হেরেছিল বাংলাদেশ। আজ যদি বাংলাদেশ জিতে তাহলে ৪ পয়েন্ট হয়ে যাবে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫ উইকেটে জিতেই টুর্নামেন্ট জমিয়ে তুলেছে বাংলাদেশ। আজ যদি বাংলাদেশের জয় মিলে তাহলে আরও জমে উঠবে। এমনিতেও বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা টুর্নামেন্টের শেষ ম্যাচই সব নিশ্চিত করে দেবে। আজ বাংলাদেশ জিতলে সেই ম্যাচের ওপরই সব নির্ভর করছে। কোন দুটি দল ফাইনালে খেলবে, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার ম্যাচ শেষেই তা নিশ্চিত হবে। আর ভারত জিতলে ফাইনালে চলে যাবে। তবে বাংলাদেশের আশা শেষ হয়ে যাবে না। তখন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচটিতে জিতলেই ফাইনালে উঠে যাবে বাংলাদেশ। আজ ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যদি বাংলাদেশ হারে তাহলে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেবে। আর যদি আজ বাংলাদেশ জিতে আর শ্রীলঙ্কার কাছে হারে তাহলে তিন দলেরই পয়েন্ট সমান ৪ করে হবে। তখন রানরেটের ওপর নির্ভর করবে কোন দুটি দল খেলবে ফাইনালে। সবদিক নিয়ে ভাবতে রাজি নয় বাংলাদেশ। তাদের ভাবনায় শুধু ফাইনালে খেলা। সেটা কিভাবে খেলা যাবে সেদিকেই মনোযোগ সবার। এ জন্য যত বেশি ম্যাচ জেতা যায়, সেই চেষ্টাই করছেন ক্রিকেটাররা। বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদই যেমন বলেছেন, ‘গত ম্যাচের (শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে) জয়টি আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। এখান থেকে হয়তো আমরা ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে সামনের ম্যাচগুলো খেলব।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘আমরা এই সফরে আসার আগে প্রথম লক্ষ্যই ছিল যে ফাইনাল খেলতে হবে। নিজেরা বলেছিলাম যে আমরা ফাইনাল খেলতে চাই ও ফাইনাল খেলব। লক্ষ্য যত বেশি সম্ভব ম্যাচ জেতা। এমন নয় যে আমরা অনেক কিছু করে ফেলেছি। আমাদের পা মাটিতেই আছে। এটা কেবলই একটা শুরু। টি২০ ক্রিকেটে আমাদের নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন ছিল। কেবল সরানো শুরু হয়েছে। আশাকরি আস্তে আস্তে আমরা সরাতে পারব। ক্রিকেটে উন্নতির জায়গা সবসময়ই আছে। সেটি নিয়েই কাজ করব আমরা।’ তবে ভারত দলটিকে হারানো সহজ নয়। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে ধাক্কা খেয়ে যেন ভারত পাক্কা হয়ে গেছে। পরের টানা দুই ম্যাচই জিতে নিয়েছে। টি২০তে ভারত দলটি সেরা। সেই সেরা দলকে হারাতে পারলে তো রানরেটও অনেক বেড়ে যাবে। তখন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারলেও ফাইনালে খেলার সুযোগ থাকবে। তবে ভারতকে হারানোর দিকেই মনোযোগী বাংলাদেশ। মাহমুদুল্লাহ জানান, ‘ভারত খুব ভাল খেলছে। টি২০ সংস্করণটিই এমন যে নির্দিষ্ট দিনে যে ভাল খেলবে, স্কিলগুলো ঠিকঠাক খেলতে পারবে, তাদেরই ফল ভাল হবে।’ সেই ভাল ফলটি এখন বাংলাদেশের হলেই হয়। তাহলে টুর্নামেন্টে দুই জয় হয়ে যাবে। ফাইনালে খেলার স্বপ্নও বাস্তবায়নের কাছাকাছি চলে যাবে। তখন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিতলে তো কথাই নেই। হার হলেও সেটি বড় ব্যবধানে না হলেই বাংলাদেশ ফাইনালে খেলবে। তবে ভারতের বৈচিত্র্যময় পেস ও স্পিন আক্রমণ নিয়ে আছে খানিক ভয়। জেতার ক্ষেত্রে এ বিষয়টিই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। মাহমুদুল্লাহ যেমন বলেছেন, ‘ওদের বোলারদের কৃতিত্ব দিতেই হবে, যেভাবে তারা বোলিং করছে। ওদের পুরো বোলিং ইউনিটই গতি বৈচিত্র্য খুব ভালভাবে করতে পারছে। শুধু পেসাররা নয়, স্পিনাররাও। ওয়াশিংটন সুন্দর, যুজবেন্দ্র চাহাল প্রায়ই অনেক মন্থর বল করছে, টার্নও করছে বল। পেসাররাও গতির হেরফের খুব ভাল করছে। আমাদের এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে।’ সঙ্গে মাহমুদুল্লাহ নিজেদের বোলিং বিভাগের বোলারদেরও আরেকটু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে বলেছেন, ‘ব্যাটিংবান্ধব উইকেটে যতটা কম রান দেয়া যায়, তত রান কম তাড়া করতে হবে। এটা নিয়ে আমাদের একটু ভাবতে হবে। আমাদের স্পিনাররা কিন্তু খারাপ করেনি। গত ম্যাচেও মিরাজ ও অপু বোলিং করার সময় রান আটকানো গিয়েছিল কিছু সময়। ২০ বলের মতো মনে হয় বাউন্ডারি হয়নি। স্পিনারদের ওপর আমার ভরসা আছে। তারপরও বোলিং বিভাগকে আরেকটু এগিয়ে আসতে হবে। আশাকরি সেটা তারা পারবে।’ ব্যাটিং ও বোলিংয়ের সঙ্গে ফিল্ডিংটাও যদি দুর্দান্ত হয় তাহলে শ্রীলঙ্কার মতো ভারতকে আটকে দেয়া সম্ভব। আজ বাংলাদেশ-ভারত লড়াইয়ে বাংলাদেশেরই জয় হোক, সেটিই এখন সবার চাওয়া।
×