ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রূপগঞ্জে শত বাধায়ও প্রেম অক্ষত

প্রকাশিত: ০৪:৫৪, ১৩ মার্চ ২০১৮

 রূপগঞ্জে শত বাধায়ও প্রেম অক্ষত

নিজস্ব সংবাদদাতা, রূপগঞ্জ, ১২ মার্চ ॥ ‘প্রেম মানে না কোন বাধা জাত কি বেজাত’ মনীষীদের এমন উক্তির বাস্তবতার খোঁজ মিলেছে রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইলের ডহরগাঁও এলাকার ফকির ফ্যাশনের কর্মরত শ্রমিক দম্পতির মাঝে। ঘটনাসূত্রে জানা যায়, প্রেমের টানে উপজাতি বৌদ্ধ মেয়ে তার স্বধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম প্রেমিকের হাত ধরে ধর্মমতে বিয়ে করে। পরে সুখের সংসার চালালেও মেয়ের পরিবারের নানা অত্যাচারের শিকার হয়েছেন প্রেমিক। মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে প্রাণনাশের হুমকিসহ একাধিক মামলায় ফাঁসানো ছাড়াও অপহরণের অভিযোগ দিয়েই ক্ষ্যান্ত হননি। থানা পুলিশের সহযোগিতায় কর্মস্থল থেকে আটক করে থানায় নিয়ে এ বন্ধন ছিন্ন করতে নেয়া হয় নানা পদক্ষেপ। কিন্তু প্রেম অমর। উভয়ের মনের বাঁধ ভাঙতে ব্যর্থ হয় মেয়ের পরিবার ও প্রশাসনের লোকজন। এমনই এক ঘটনার শিকার উপজেলার ফকির ফ্যাশনের ফিনিশিং বিভাগে কর্মরত আড়াইহাজার উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়নের বাজবী গ্রামের শ্রমিক রফিকুল ইসলাম রনি জানান, একই বিভাগের তার সহকর্মী খাগরাছড়ি জেলার রামগড় উপজেলার ২নং হাফছড়ির বদংপাড়া এলাকার মংশেপ্রু মারমার মেয়ে ঞাইজাইরী মারমা (১৯) এর সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবত প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই থেকে দু’জনের সম্মতিতে উভয় পরিবারের মাঝে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দেয়া হয়। তবে ঞাইজাইরী বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী হওয়ায় এ বিষয়টি কোন পরিবারই মেনে নেয়নি। তাই স্ব-ইচ্ছায় ঞাইজাইরী তার বৌদ্ধ ধর্ম ত্যাগ করে গত ৮ মার্চ নারায়ণগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে ইসলামী বিধান মতেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। এ সময় নোটারি মাধ্যমে নাম পরিবর্তন করে ঞাইজাইরীর নাম রহিমা আক্তার করা হয়। একই দিনে উক্ত আদালতেই আইনজীবী ও নিকাহ রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে শরীয়াহ্ মোতাবেক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। এদিকে এ খবর পেয়ে মেয়ের ফুফাতো ভাই কংচাই মারমা ও পরিবারে লোকজন রূপগঞ্জস্থ তাদের ভাড়াটিয়া বাসায় প্রথমে সন্ত্রাসী মাধ্যমে হুমকি-ধামকি দিয়ে বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করতে বলে। পরে রাস্তাঘাটে একাধিকবার উভয়কে আটক করে হয়রানিও করে। তবে ও বারবার বাসা পরিবর্তন করেও তারা নিরাপদে থাকেননি। তারা শতবাধা পেরিয়েও তবু সংসার চালিয়ে আসলেও পরিবার আশ্রয় নেয় আইনে। রফিকুল ইসলাম রনি ও তার পরিবারকে অভিযুক্ত করে দেয়া হয় অপহরণের অভিযোগ। এ ঘটনায় পুলিশের হাতে আটক হন শ্রমিক দম্পতি। রূপগঞ্জ থানায় অপহরণের অভিযোগে আটক হওয়ার পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে এসব তথ্য।
×