ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

না’গঞ্জে বন্দুকযুদ্ধে ৩ ডাকাত নিহত

প্রকাশিত: ০৪:৫০, ১৩ মার্চ ২০১৮

না’গঞ্জে বন্দুকযুদ্ধে  ৩   ডাকাত নিহত

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ পৃথক দুটি স্থানে র‌্যাব-১১ ও পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তিন ডাকাত নিহত হয়েছে। সোমবার ভোররাতে সদর উপজেলার আলীরটেক এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে জিল্লুর বাহিনীর প্রধান জিল্লুর রহমান ওরফে জিল্লুসহ দুই নৌ-ডাকাত নিহত হয়েছে। এ সময় আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয় এবং এ ঘটনায় র‌্যাবের দুই সদস্য আহত হয়। অন্যদিকে একই সময়ে সোনারগাঁয়ে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে জাহাঙ্গীর আলম (৩৮) নামে এক ডাকাত সরদার নিহত হয়েছে। এ সময় দুই পুলিশের সদস্য আহত হয়েছে এবং আটক করা হয়েছে ৫ ডাকাতকে। র‌্যাব-১১ প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সোমবার বিকেলে জানান, সোমবার গাজীপুর জেলার শ্রীপুরে মাস্টারবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাত দলের প্রধান জিলুর রহমান ওরফে জিলুসহ ৪ জন ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত অপর ডাকাতরা হলো- আবদুর রহমান (২০), বিলাল হোসেন (২০), শফিক (২২)। তারা জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। ডাকাত সরদার জিলুর জিজ্ঞাসাবাদকালে আরও জানায়, তার আরও কয়েকজন সহযোগী নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার আলীরটেক এলাকায় ডাকাতির করতে পূর্ব নির্ধারিত একত্রিত হবে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার ভোররাত সাড়ে ৩টায় র‌্যাব-১১ এর একটি দল গ্রেফতারকৃত ডাকাত জিল্লুরকে সঙ্গে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার গোগনগরস্থ গোপচর ধলেশ্বরী নদীর খেয়াঘাটে পৌঁছলে ৮ থেকে ১০ জন অজ্ঞাতনামা ডাকাত র‌্যাবের ওপর এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে। এ সময় র‌্যাব সদস্যরাও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি করে। আনুমানিক ১৫ মিনিট গুলি বিনিময়ের পর ডাকাতরা পিছু হটতে বাধ্য হয় এবং ইঞ্জিনচালিত ট্রলারযোগে নৌ-পথে পালিয়ে যায়। এ সময় র‌্যাব সদস্যরা জিল্লুর ও অজ্ঞাত (৩২) ২ জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে দ্রুত নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে প্রেরণ করলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন। গুলি বিনিময়কালে ২ জন র‌্যাব সদস্যও আহত হয়। ঘটনাস্থল হতে র‌্যাব সদস্যরা ১টি বিদেশী পিস্তল, ১টি ম্যাগাজিন, ১ রাউন্ড গুলি, ১টি গুলির খালি খোসা, ৫ রাউন্ড কার্তুজ, ১টি রামদা ও ১টি চাপাতি উদ্ধার করে। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে জাহাঙ্গীর আলম (৩৮) নামে এক ডাকাত সরদার নিহত হয়েছে। এ সময় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ৫ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার ভোররাতে উপজেলার জামপুর মিরেরবাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত জাহাঙ্গীর মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থানার লঘুরচর এলাকার আশেক আলী বেপারীর ছেলে। পুলিশের দাবি, নিহত জাহাঙ্গীর আলম আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সরদার। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি, হত্যাসহ এক ডজনেরও বেশি মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত অপর ডাকাতরা হলো- স্বপন (৩৪), মাসুম (৪৩), নাজমুল (২২), আলমগীর (২৪) ও রুবেল (২৫)। . সীতাকুন্ডে এক নিজস্ব সংবাদদাতা সীতাকুন্ড চট্টগ্রাম থেকে জানান, র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সাবেদুল হক প্রকাশ কালু ডাকাত (৪২) নিহত হয়েছে। রবিবার রাতে উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। নিহত ডাকাত ভুজপুর থানার পশ্চিম ভুজপুর এলাকার আনা মিয়ার পুত্র। এ সময় র‌্যাব একটি বিদেশী পিস্তল, সাতটি ওয়ান শূটার গান, ছয়টি এসবিবিএল, একটি পিস্তলের ম্যাগজিন, ৪৮ রাউন্ড গুলি, ১৫ রাউন্ড খালি খোসা, ৮টি রকেট পেন্টয়ার ও ৯টি পোচ উদ্ধার করে। এ সময় র‌্যাবের এক সদস্য গুরুতর আহত হয়েছে। জানা গেছে, সরকারী বনভূমি দখল, খুন, ধর্ষণ, ডাকাতি, হানাহানি, আধিপত্য বিস্তার, অপহরণসহ সব ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রম ‘জঙ্গল সলিমপুর’ এলাকায় নিত্যদিনের ঘটনা। দুর্গম জঙ্গল সলিমপুরের সরকারী পাহাড় কেটে গত এক যুগে প্রায় ১৬ হাজার অবৈধ বসতি গড়ে উঠেছে। ছিন্নমূল মানুষদের নামে বিভিন্ন সংগঠন গড়ে তুলে একটি চক্র পাহাড়ে ছোট ছোট পল্ট বানিয়ে তা বেচাকেনা করছে। পাহাড় বিক্রির অর্জিত অর্থ দিয়ে গত কয়েক বছরে দেশের নানা প্রান্তের সন্ত্রাসীদের অভয়াশ্রম হিসেবে জঙ্গল সলিমপুরে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছে। ২৩ অক্টোবর, ২০১৭ সালে র‌্যাব-৭ কর্তৃক জঙ্গল সলিমপুরের মশিউর বাহিনীর প্রধান কাজী মশিউর রহমানকে গ্রেফতারের পর কালু মহেষখালী হতে অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ ক্রয় করে এলাকায় এককভাবে আধিপত্য বিস্তার করছে এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে গত রবিবার র‌্যাবের একটি আভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করলে র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা র‌্যাবকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়িভাবে গুলি শুরু করে।
×