ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যুব গেমস উৎসবে মেতেছে ঢাকা সুইমিংপুলে ঝড় আরিফুল-সুস্মার, প্রথম স্বর্ণপদক লিমনের

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ১২ মার্চ ২০১৮

যুব গেমস উৎসবে মেতেছে ঢাকা  সুইমিংপুলে ঝড় আরিফুল-সুস্মার, প্রথম স্বর্ণপদক লিমনের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ যুব গেমসের চূড়ান্তপর্বের পদকের লড়াইয়ে প্রথম স্বর্ণপদক এসেছে শূটিং থেকে। প্রথম স্বর্ণপদক জিতেছে রাজশাহী বিভাগের পাবনা জেলার মেহেদী হাসান লিমন। সুইমিং পুলে ঝড় তুলেছেন ঢাকা বিভাগের আরিফুল। ৩টি ইভেন্টে অংশ নিয়ে সবক’টিতেই স্বর্ণপদক জিতেছে এই তরুণ। বালিকা বিভাগে দাপট দেখিয়েছে খুলনা বিভাগের সুস্মা খাতুন। দুটি ইভেন্টে অংশ নেয়া খুলনা বিভাগের এই সাঁতারু দুটিতেই স্বর্ণ জিতেছে। প্রথম স্বর্ণ লিমনের ॥ বাংলাদেশ যুব গেমসের চূড়ান্তপর্বের দ্বিতীয়দিন রবিবার শূটিং ডিসিপ্লিনের ৬টি স্বর্ণ পদকের লড়াই শেষ হয়েছে। শূটিংয়ের প্রথম স্বর্ণজয়ী পাবনার মোঃ মেহেদী হাসান লিমন। পাবনা রাইফেল ক্লাবের এই শূটার .১৭৭ ওপেন সাইট এয়ার রাইফেল (তরুণ) বিভাগে ২৪৭ স্কোর গড়ে স্বর্ণ জিতে নেন। এই ইভেন্টে গুলশান শূটিং ক্লাবের ফজলে রাব্বি ২৩৯ স্কোর গড়ে রুপা এবং নেত্রকোনা রাইফেল ক্লাবের ফারদিন মোঃ অর্ণব ২৩৬ স্কোর গড়ে ব্রোঞ্জ পদক জেতেন। একই ইভেন্টে (তরুণী) বিভাগে পিরোজপুর রাইফেল ক্লাবের জিন্নাত কবির সূচনা ২৩৫ স্কোর গড়ে স্বর্ণ, মেট্রোপলিটন শূটিং ক্লাব চট্টগ্রামের সায়রা আরেফিন ২৩১ স্কোর গড়ে রুপা এবং বগুড়া রাইফেল ক্লাবের শিল্পা রায় ২১২ স্কোর গড়ে ব্রোঞ্জপদক জেতেন। তরুণদের .১৭৭ ম্যাচ এয়ার পিস্তলে নেত্রকোনা রাইফেল ক্লাবের শেখ শাহজালাল সাদমান ২৭০ স্কোর গড়ে স্বর্ণ, গুলশান শূটিং ক্লাবের রওনক চৌধুরী ২৬২ স্কোর গড়ে রৌপ্য এবং মেট্রোপলিটন শূটিং ক্লাব চট্টগ্রামের প্রতিযোগী শাকের আহমেদ ২৫৩ স্কোর গড়ে তাম্র পদক জেতেন। একই ইভেন্টে তরুণী বিভাগে কুষ্টিয়া রাইফেল ক্লাবের নিলুফার ইয়াসমিন ২৭৩ স্কোর গড়ে স্বর্ণ, গুলশান শূটিং ক্লাবের শামী আক্তার ২৬৪ স্কোর গড়ে রৌপ্য এবং পাবনা রাইফেল ক্লাবের নাবিলা তাবাসসুম ২৫৬ স্কোর গড়ে ব্রোঞ্জপদক জেতেন। তরুণদের .১৭৭ ম্যাচ এয়ার রাইফেল ইভেন্টে কিশোরগঞ্জ রাইফেল ক্লাবের সাকিবুল আলম আল-আমিন ২৮১ স্কোর গড়ে স্বর্ণ, মেট্রোপলিটন শূটিং ক্লাব চট্টগ্রামের কাজী সাজেদুল হোসেন ২৭৭ স্কোর গড়ে রুপা এবং নেত্রকোনা রাইফেল ক্লাবের মুশফিকুর রহমান ২৭৫ স্কোর গড়ে তাম্র পদক জেতেন। তরুণীদের এই ইভেন্টে কুষ্টিয়া রাইফেল ক্লাবের ফারবিন চৌধুরী রিথীকা ২৯৪ স্কোর গড়ে স্বর্ণ, গুলশান শূটিং ক্লার ঢাকার মায়েদা মুমতাহিনা ২৯০ স্কোর গড়ে রুপা এবং চট্টগ্রাম রাইফেল ক্লাবের সুমাইয়া মোরশেদ ২৭৯ স্কোর গড়ে ব্রোঞ্জপদক জেতেন। খেলা শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার (মেডেল) এবং সার্টিফিকেট তুলে নেন বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনের উপ-মহাসচিব এবং ভলিবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান মিকু। এ সময় বাংলাদেশ শূটিং স্পোর্টস ফেডারেশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। স্বর্ণ জয়ের অনুভূতি জানিয়ে লিমন বলেন, ‘খুবই আনন্দ লাগছে। ভাষায় প্রকাশের নয়। এমন একটি প্রতিযোগিতা আয়োজন করায় আমি অলিম্পিককে ধন্যবাদ জানাই। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমাদের মতো অনেকেই বের হয়ে আসবে। শুনেছি এখানে যারা ভাল করবে তাদের ফেডারেশনে রেখে দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। এটা হলে সত্যিই অনেক ভাল হবে।’ সাঁতারে দাপট আরিফুল-সুস্মার ॥ তাকে নিয়ে প্রত্যাশাটা বেশিই ছিল। প্রত্যাশা মাফিকই পুলে ঝড় তোলেন তরুণ সাঁতারু আরিফুল ইসলাম। বাংলাদেশ যুব গেমসের সাঁতারে দাপুটে ভূমিকায় দেখা গেল তাকে। রবিবার মিরপুর জাতীয় সুইমিং কমপ্লেক্সে তিনটি ইভেন্টে অংশ নিয়ে তিনটিতেই স্বর্ণপদক জিতেছেন ঢাকা বিভাগের এই সাঁতারু। বালিকা বিভাগে দাপট দেখিয়েছেন সুস্মা খাতুন। দুটি ইভেন্টে অংশ নেয়া খুলনা বিভাগের এই সাঁতারু দুটিতেই স্বর্ণ জিতেছেন। বালক ৫০ মিটার ফ্রি স্টাইলে স্বর্ণ জেতেন আরিফুল ইসলাম। সময় নিয়েছেন ২৫.২২ সেকেন্ড। বোঞ্জ ও সিলভার জিতেছেন যথাক্রমে ঢাকা বিভাগের টিটু মিয়া ও চট্টগ্রাম বিভাগের নুরুল ইসলাম। বালিকা বিভাগের ৫০ মিটারের ফ্রি স্টাইলে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট উঠেছে সুস্মা খাতুনের মাথায়। সময় নিয়েছেন ৩০.৭৮ সেকেন্ড। বোঞ্জ ও সিলভার জিতেছেন যথাক্রমে খুলনা বিভোগের খাদিজা আক্তার বৃষ্টি ও ঢাকা বিভাগের সেতু আক্তার। ৫০ মিটার ব্যাকস্ট্রোক বালক বিভাগে স্বর্ণ জিতেছেন খুলনা বিভাগের আল-আমিন। এই ইভেন্টে বালিকা বিভাগ থেকে স্বর্ণ জেতেন খুলনা বিভাগের রুপা খাতুন। বোঞ্জ ও সিলভার জিতেছেন যথাক্রমে খুলনা বিভাগের রিয়া আক্তার মনি ও চট্টগ্রামের শ্রাবন্তী আক্তার। ৫০ মিটার ¿েস্টস্ট্রোকে বরাবরের মতো শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছেন আরিফুল ইসলাম। প্রিয় এই ইভেন্টে স্বর্ণ জিতে নেয়ার পথে ৩১.৩৭ সেকেন্ড সময় ব্যয় করেন তিনি। ব্রোঞ্জ জিতেছেন ঢাকার ইমন মিয়া ও সিলভার জিতেছেন চট্টগ্রামের নুরুল ইসলাম। এই ইভেন্টে বালিকা বিভাগ থেকে স্বর্ণ জিতেছেন খুলনা বিভাগের খাদিজা আক্তার বৃষ্টি। ব্রোঞ্জ ও সিলভার জিতেছেন যথাক্রমে খুলনার মুক্তি খাতুন ও রাজশাহীর রোকেয়া আক্তার। ১০০ মিটার ফ্রি স্টাইলেও আরিফুলের রাজত্ব। ৫৫.৭১ সেকেন্ডে স্বর্ণ জিতে নেন কমনওয়েলথ গেমসে দারুণ কিছু করার অপেক্ষায় থাকা তরুণ এই সাঁতারু। ব্রোঞ্জ ও সিলভার জিতেছেন যথাক্রমে ঢাকার টিটু মিয়া ও চট্টগ্রামের নুরুল ইসলাম। এই ইভেন্টের বালিকা বিভাগ থেকে স্বর্ণ জিতেছেন ৫০ মিটার ফ্রি স্টাইলেও স্বর্ণ জেতা সুস্মা খাতুন। ব্রোঞ্জ জিতেছেন খুলনার মুক্তি খাতুন ও সিলভার গেছে চট্টগ্রামের ড থ্রু প্রুর ঝুলিতে। তিনটি ইভেন্টে স্বর্ণ জিতে উচ্ছ্বসিত আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘তিনটি স্বর্ণ জিতে অবশ্যই ভাল লাগছে। তবে খুব বেশি হওয়ার কিছু নেই। কারণ এই আসরটিকে আমি কমনওয়েলথ গেমসের প্রস্তুতি হিসেবে নিয়েছি। ওই আসরে ভাল কিছু করে দেখাতে চাই। আর এই আসরে স্বর্ণ জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী ছিলাম।’ তবে স্বল্পভাষী সুস্মা খাতুন খুব বেশি বললেন না। চোখে মুখে উচ্ছ্বাস লেগে থাকলেও মুখে শুধু এতটুকুই বললেন, ‘স্বর্ণ জিতে ভাল লাগছে। আরও ভাল হতে পারত। আরও কম সময় নিয়ে শেষ করতে পারলে খুশি হতে পারতাম। আরও ভাল করার চেষ্টা করব আমি। আমার জন্য দোয়া করবেন।’
×