ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার রাজাকার মাহবুবের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষ

প্রকাশিত: ০৪:৪০, ১২ মার্চ ২০১৮

যুদ্ধাপরাধী বিচার রাজাকার মাহবুবের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে টাঙ্গাইলের দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা (আরপি সাহা) ও তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহার হত্যাকা-ের মামলায় রাজাকার মোঃ মাহবুবের বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ ও গণহত্যার তিনটি অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। আদেশের জন্য ২৮ মার্চ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় গজানাইপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল খায়ের গোলাপ মিয়াসহ (৬৬) তিনজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছে প্রসিকিউশন পক্ষ । ফরমাল চার্জের জন্য প্রসিকিউশন পক্ষ সময়ের আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল ফরমাল চার্জের জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করেছে ১ মে। রবিবার চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ প্রদান করেছেন। এ সময় প্রসিকিউশন পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর রানাদাশ গুপ্ত , প্রসিকিউটর রিজিয়া সুলতানা বেগম চমরন । আসামি পক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট গাজী তামীম। গত ১১ ফেব্রুয়ারি রণদা প্রসাদ সাহা হত্যায় অভিযুক্ত টাঙ্গাইলের মোঃ মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন পক্ষ। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ ও গণহত্যার তিনটি অভিযোগ আনা হয়। রণদা প্রসাদ সাহা হত্যায় জড়িত অভিযোগে টাঙ্গাইলের মোঃ মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত প্রতিবেদন গত ২ নবেম্বর প্রকাশ করে তদন্ত সংস্থা। তাতে বলা হয়েছে, আসামি মাহবুবুর রহমানের বাবা আব্দুল ওয়াদুদ মুক্তিযুদ্ধের সময় মির্জাপুর শান্তি কমিটির সভাপতি ছিলেন। আসামি মাহবুবুর রহমান ও তার ভাই আব্দুল মান্নান সে সময় রাজাকার বাহিনীতে ছিলেন। আসামি মাহবুবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মে মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর ২০-২৫ জন সদস্যকে নিয়ে রণদা প্রসাদ সাহার বাসায় অভিযান চালায়। অভিযানে রণদা প্রসাদ সাহা, তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহা, রণদা প্রসাদের ঘনিষ্ঠ সহচর গৌর গোপাল সাহা, রাখাল মতলব ও রণদা প্রসাদ সাহার দারোয়ানসহ ৭ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে সবাইকে হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয়। তাদের লাশ আর পাওয়া যায়নি। মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামি টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ভারতেশ্বরী হোমস এলাকা, নারায়ণগঞ্জের খানপুরের কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ও তার আশপাশের এলাকা এবং টাঙ্গাইল সার্কিট হাউস এলাকায় অপরাধ সংঘটন করে। তদন্তে মোঃ মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে অপহরণ, হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও গণহত্যার তিনটি অভিযোগ আনা হয়। রণদা প্রসাদ সাহার পৈত্রিক নিবাস ছিল টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে। সেখানে তিনি একাধিক শিক্ষা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এক সময় নারায়ণগঞ্জে পাটের ব্যবসায় নামেন রণদা প্রসাদ সাহা। থাকতেন নারায়ণগঞ্জের খানপুরের সিরাজদিখানে। সে বাড়ি থেকেই তাকে, তার ছেলে ও অন্যদের ধরে নিয়ে যান আসামি মাহবুবুর রহমান ও তার সহযোগীরা।
×