ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দুদকের কাজে কোন স্থবিরতা নেই, এটি কৌশল ॥ চেয়ারম্যান

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ১২ মার্চ ২০১৮

দুদকের কাজে কোন স্থবিরতা নেই, এটি কৌশল ॥ চেয়ারম্যান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যুদ্ধক্ষেত্রে পশ্চাদপসরণ করা যেমন যুদ্ধের কৌশল, তেমনি কখনও কখনও দুর্নীতপরায়ণদের গতিবিধি সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করে আইনের আওতায় আনতে কমিশনের পশ্চাদপসরণ করাও কৌশল। তাই কিছু কৌশলগত কারণে কিছুটা থেমে কাজ করলেও প্রকৃতপক্ষে দুদকের কার্যক্রমে কোন প্রকার স্থবিরতা নেই বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। রবিবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে ইউনাইটেড অফিস অন ড্রাগস এ্যান্ড ক্রাইমের (ইউএনওডিসি) দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক অফিস প্রতিনিধি সার্জে ক্যাপিনোজের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, অনেকে বলেন দুদকের কার্যক্রমে কিছুটা স্থবিরতা এসেছে। এ বক্তব্যের সঙ্গে দ্বি-মত পোষণ না করে বলছি, যুদ্ধক্ষেত্রের ন্যায় কখনও কখনও দুর্নীতপরায়ণদের গতিবিধি সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে কমিশনকেও তেমনি পশ্চাদপসরণ করতে হয়। এটি কৌশল মাত্র। দুদক চেয়ারম্যান প্রতিনিধি দলের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য ওভারসাইট মেকানিজম থাকা উচিত। দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যক্রমও পর্যবেক্ষণ বা মনিটরিংয়ের জন্যও একটি কার্যকর ফ্রেমওয়ার্ক থাকতে পারে। যদিও দুদকের প্রতিটি কার্যক্রমই আইনানুগ প্রক্রিয়ায় চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ রয়েছে এবং পাশাপাশি কমিশনের সকল কার্যক্রম বার্ষিক প্রতিবেদনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করা হয়। এই বার্ষিক প্রতিবেদন নিয়ে জাতীয় সংসদে আলোচনায় আইনী সুযোগ রয়েছে। ইকবাল মাহমুদ বলেন, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের সোনালি ভবিষ্যত বিনির্মাণে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। দুর্নীতি করে যারা অর্থ-বিত্তের মালিক হচ্ছেন বা হয়েছেন প্রত্যেককেই আজ অথবা কাল আইনের আওতায় আসতে হবে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া যা ক্রমাগত চলতে থাকবেই। উত্তম চর্চার বিকাশে প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সততা সংঘ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সততা স্টোরসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের ব্যাখ্যা করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দেশের সিভিল সার্ভিস, শিক্ষা এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে মূল্যবোধ সম্পন্ন প্রতিনিধি সৃষ্টি করার জন্যই কমিশন এসব কার্যক্রম পরিচালনা করছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে সুশাসন, জবাবদিহিমূলক আমলাতন্ত্র, মানসম্পন্ন শিক্ষা এবং দুর্নীতিপরায়ণদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার কোন বিকল্প নেই। ইউনাইটেড অফিস অন ড্রাগস এ্যান্ড ক্রাইম (ইউএনওডিসি) দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক অফিসের প্রতিনিধি সার্জে ক্যাপিনোজ বলেন, দুর্নীতি পৃথিবীর সর্বত্রই রয়েছে। তবে পার্থক্য রয়েছে এর তীব্রতা ও এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্র। সততা সংঘ বা সততা স্টোরের কার্যক্রম সত্যিই উত্তম। তবে প্রশিক্ষণ, শিক্ষা, পরিবার এবং পদ্ধতিই বাস্তব জীবনে প্রতিফলন ঘটে। বাংলাদেশে ইউনাইটেড অফিস অন ড্রাগস এ্যান্ড ক্রাইমের কান্ট্রি অফিস স্থাপনের লক্ষ্যে সরকার, দুদক এবং সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, দুর্নীতি এবং মাদকের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থার বিষয়টি বেগবান করার জন্য এদেশে কান্ট্রি অফিস স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ভবিষ্যত প্রজন্মকে দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত রাখতে সরকার, সুশীল সমাজ এবং দুদকসহ সবাইকে সম্মিলিত ও অংশগ্রহণমূলকভাবে এগিয়ে আসতে হবে। মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) জাফর ইকবাল।
×