ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তরা ও তেজগাঁওয়ে মেডিক্যাল ছাত্রী এবং গৃহকর্মীর আত্মহত্যা

প্রকাশিত: ০৪:২২, ১২ মার্চ ২০১৮

উত্তরা ও তেজগাঁওয়ে মেডিক্যাল ছাত্রী এবং গৃহকর্মীর আত্মহত্যা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীতে পৃথক স্থানে এক মেডিক্যাল শিক্ষার্থীসহ দুই নারী আত্নহত্যা করেছে। পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এদিকে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের চার নম্বর গেট সংলগ্ন রাস্তার পাশে বল আকৃতির বস্তু কুড়াতে গিয়ে বিস্ফোরণে তিন পথ শিশু দগ্ধ হয়েছে। রবিবার সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, রাজধানীর উত্তরা ও তেজগাঁওয়ে মেডিক্যাল ছাত্রী তানহা রহমান (২২) ও শারমীন (২০) নামে এক গৃহকর্মী আত্নহত্যা করেছে। রবিবার দুপুরে ঢামেক মর্গে তাদের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে ফাঁড়ির এসআই বাচ্চু মিয়া জানান। স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার গভীররাতে রাজধানীর উত্তরায় তানহা রহমান নামে এক মেডিক্যাল ছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। খবর পেয়ে পুলিশ সেখান থেকে তার লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। নিহত তানহা শহীদ মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তার বাবার নাম মোঃ মজিবর রহমান। গ্রামের বাড়ি নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলায়। মোঃ মজিবর রহমানের মেয়ে। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বাচ্চু মিয়া জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গলার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে তানহা আত্মহত্যা করেছে। তবে কী কারণে সে আত্মহত্যা করেছে। তা তদন্ত করে জানানো হবে। রবিবার বিকেলে ঢামেক মর্গে তানহার লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এদিকে একই গভীররাতে পুলিশ তেজগাঁওয়ে সিএমডি গোডাউন স্টাফ কোয়ার্টারের একটি বাসা থেকে শারমীন (২০) নামের এক গৃহকর্মীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে ঢামেক মর্গে পাঠায়। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ মিজানুর রহমান জানান, শনিবার রাতে সিএমডি স্টাফ কোয়ার্টারে বি-৮ নম্বর বিল্ডিংয়ের চতুর্থ তলার আজাদ হোসেনের ফ্ল্যাট থেকে শারমীনের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়। এসআই মিজানুর রহমান জানান, দীর্ঘদিন ওই ফ্ল্যাটের বাসিন্দা আজাদ হোসেনের বাড়ি গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করত। তার বাবার নাম জয়নাল আবেদীন। গ্রামের বাড়ি ফেনী সদর উপজেলার মধুয়াই গ্রামে। তিনি জানান, চতুর্থ সার্বেন্ট রুমে ভেতর থেকে দরজাটি বন্ধ ছিল। পরে দরজা ভেঙ্গে শারমীনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। তবে শারমীনের লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে আসল ঘটনা জানা যাবে। তদন্ত চলছে। সড়ক দুর্ঘটনায় দু’জন নিহত ॥ রাজধানীর ধানম-ি ও গেণ্ডারিয়া এলাকায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুই পথচারী নিহত হয়েছেন। এ সময় একজন আহত হয়েছেন। নিহতরা হচ্ছে, আলমগীর হোসেন (৪০) ও নুরুল ইসলাম হাওলাদার (৬০)। রবিবার বিকেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে দু’জনের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বাচ্চু মিয়া জানান। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার রাত ১টার দিকে ধানমন্ডি থানাধীন সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় এক প্রাইভেটকারের ধাক্কায় আলমগীর হোসেন (৪০) নামে রিক্সা যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতের চাচাতো ভাই আল আমিন জানান, রাত ১টার দিকে ধানম-ি থানার সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় আড়ংয়ের পাশ দিয়ে রিক্সা করে যাচ্ছিলেন আলমগীর হোসেন। এ সময় পেছন থেকে একটি প্রাইভেটকার ওই রিক্সাটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ভাই আলমগীর রিক্সা থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়ে। এরপর প্রাইভেটকারটি রিক্সাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তা পড়ে থাকা ভাই আলমগীরকে চাপা দেয়। এ সময় রিক্সা চালক গুরুতর আহত হয়। এ সময় রাস্তায় পথচারীরা চালকসহ প্রাইভেটকারটি আটক করে। পরে ধানমন্ডি থানা পুলিশ প্রাইভেটকার চালককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে আলগমীর ও রিক্সাচালক গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রাত ২টার দিকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আনা হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক আলমগীরকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত রিক্সাচালককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত আলমগীরের বাবার নাম মৃত কাদের হাওলাদার। গ্রামের বাড়ি ঝালকাটি জেলার নলছিটি থানার কাটাখালি গ্রামে। তিনি রাজধানীর জিগাতলার ট্যানারি মোড়ে থাকতেন। এদিকে একই সময় পুরানো ঢাকার দয়াগঞ্জ চৌরাস্তার এলাকার রাস্তা পার হচ্ছিলেন নূরুল ইসলাম হাওলাদার। বিস্ফোরণে তিন পথশিশুর মৃত্যু ॥ বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের চার নম্বর গেট সংলগ্ন রাস্তার পাশে বল আকৃতির বস্তু কুঁড়াতে গিয়ে বিস্ফোরণে তিন পথ শিশু দগ্ধ হয়েছে। আহতরা হচ্ছে, ঝুমা (১৮), বিপ্লব (১০), ও নুর আলম (১৮)। তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে বলে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বাচ্চু মিয়া জানান। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, নূর আলমের হাতের আঙ্গুল ঝলসে গেছে। ঝুমা ও বিপ্লবের মুখ ও চুল ঝলসে গেছে। আহত বিপ্লব জানায়, তারা দৈনিক বাংলা ভ্যান স্ট্যান্ডে ভাসমান অবস্থায় থাকে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনজন মিলে স্টেডিয়াম চার নম্বর গেটের সামনে ময়লা কুড়াচ্ছিল। এ সময় নুর আলম বল আকৃতির একটি বস্তু কুড়িয়ে পায়। পরে সেটাতে আগুন ধরিয়ে দিলে বিস্ফোরিত হয়ে যায়।
×