ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পাঠদান ব্যাহত

পাঠানপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ১২ মার্চ ২০১৮

 পাঠানপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি ও  প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম

নিজস্ব সংবাদদাতা, জয়পুরহাট, ১১ মার্চ ॥ ক্ষেতলাল উপজেলার পাঠানপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুর খালেক ম-লের স্বেচ্ছাচারিতায় বিদ্যালয়টি চরম সঙ্কটে পড়েছে। অনিয়ম, নিজের ইচ্ছামতো বিদ্যালয় পরিচালনা করা নিয়মে পরিণত হয়েছে। এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরে (মাওসি) অভিযোগ দিলে তদন্তপূর্বক অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ দিলেও অভিযুক্তরা বহাল তবিয়তে তাদের কর্মকা- পরিচালনা করে যাচ্ছে। অভিযোগে জানা যায়, ক্ষেতলাল উপজেলার পাঠানপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে বর্তমান সভাপতি আব্দুল খালেক শিক্ষক মুনছুর রহমানকে সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। কিন্তু পরবর্তীতে আব্দুর খালেকের নানা অনিয়মের সঙ্গে একাত্বতা স্থাপন না করায় তার দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধাচারণ করলে প্রধান শিক্ষক মুনছুর রহমানকে ওই পদ থেকে বিতাড়িত করা হয়। তিনি সহকারী শিক্ষক হিসেবেই এ বিদ্যালয়ে তার কর্মকা- চালিয়ে যেতে থাকলে তাকে নানাভাবে নির্যাতন শুরু হলে এক পর্যায়ে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাকে চাকরিচুত্য করা হয়। এভাবে ২০১৬ সালের মার্চ মাসে ওই শিক্ষক অবসরে গেলেও তার ১৪ মাসের বেতনভাতাসহ বিভিন্ন পাওনা থেকে বঞ্চিত রাখে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। এরপর একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুসকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু আব্দুল কুদ্দুসের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের যে যোগ্যতার প্রমাণাদি প্রয়োজন তা তিনি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দিলেও পরে অনুসন্ধানে দেখা যায় ওই কাগজপত্র জাল ও ভুয়া। আব্দুল কুদ্দুসের ভুয়া জাল জালিয়াতির বিষয়টি এলাকার প্রাক্তণ ছাত্র আব্দুস সাত্তার ম-ল মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরে অভিযোগ করলে দফতর থেকে ডিজি কর্তৃক ওই দফতরের ডিডি মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দিলে তিনি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে তার কাগজপত্র ভুয়া, জাল চিহ্নিহ্নত ছাড়াও পাঠানপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুসকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার পরে যথানিয়মে তার সহকারী শিক্ষকের অবস্থান বিলুপ্ত হয়ে যায়। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের এমপিওভুক্তি না হওয়ায় আব্দুল কুদ্দুস প্রধান শিক্ষক পদে থেকেও সহকারী শিক্ষকের বেতনভাতা উত্তোলন করতে থাকে। এরপরে ম্যানেজিং কমিটির যোগসাজসে আব্দুল কুদ্দুস জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আলাউদ্দিন আহাম্মেদ টিচার্স ট্রেনিং কলেজ কুমারখালি কুষ্টিয়া থেকে আব্দুল কুদ্দুস নামে অপর এক ব্যক্তির পাসকৃত সনদ নিয়ে ২০১৬ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নেন। তদন্তে প্রধান শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুসের পর পর ৩টি সনদের কাগজই ভুয়া ও জাল প্রমাণিত হওয়ায় এবং সহকারী শিক্ষক হিসেবে ও প্রধান শিক্ষক হিসেবে তার উত্তোলিত বিভিন্ন ভাতা সরকারী কোষাগারে জমা দেয়ার জন্য তদন্ত প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টদের শাস্তির দাবি করা হয়েছে। এ বিষয়ে জয়পুরহাটের জেলা শিক্ষা অফিসার ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ বিষয়টি জেনেছেন এবং এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছেন বলে জানান।
×