ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ভালুকায় সংরক্ষিত বনে কয়লা কারখানা

প্রকাশিত: ০৩:৪৭, ১২ মার্চ ২০১৮

ভালুকায় সংরক্ষিত বনে কয়লা কারখানা

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভালুকা, ময়মনসিংহ, ১১ মার্চ ॥ ভালুকা উপজেলার উথুরা রেঞ্জের চামিয়াদী বাজারের দুই পাশে সংরক্ষিত বনের ভেতরে দুটি স্থানে অবাধে শাল-গজারিসহ বনের বিভিন্ন কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করা হচ্ছে। এতে সংরক্ষিত বনের গজারি গাছ, প্রাকৃতিক বন এবং সামাজিক বনায়ন উজাড়ের পাশাপাশি কালো ধোঁয়ায় পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। স্থানীয় বন অফিসের লোকজনকে মোটা অঙ্কের মাসোহারা দিয়ে কয়লা তৈরির কারখানটি চালু রাখা হয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভালুকা উপজেলার চামিয়াদী বাজারের পূর্ব পাশে একটি কয়লা কারখানায় চারটি চুলা রয়েছে। ওই বাজারের দক্ষিণ পাশে অপর একটি কারখানায় পাঁচটি চুলা রয়েছে। দুটি কারখানার মালিক ওই এলাকার জনৈক আব্দুল কাদের। আব্দুল কাদের প্রথমে ৪টি চুলা দিয়ে কয়লা বানানোর কাজ শুরু করেন। কাঠের সহজলভ্যতা ও লাভজনক হওয়ায় পূর্বের কারখানার অদূরেই অপর একটি পাঁচ চুলাবিশিষ্ট নতুন কারখানা স্থাপন করেন। চুলাগুলো বিশেষ প্রক্রিয়ায় ইট দিয়ে বানানো। চুলাগুলো মাটি দিয়ে প্রলেপ দেয়া ও ধোঁয়া বের হওয়ার জন্য চুলার উপর গর্ত রাখা হয়েছে। চামিয়াদী বাজারের চার পাশে লাইসেন্সবিহীন ৭টি করাতকল রয়েছে। এসব করাত কল থেকে গজারি কাঠ কেটে কয়লার চুলায় অবাধে ব্যবহার করা হচ্ছে। কারখানা দুটির পাশে গজারি কাঠের স্তূপ দেখা যায়। কারখানার চারপাশে আকাশ মনি গাছের বাগানও রয়েছে। স্থানীয় সাংবাদিকরা কয়লার কারখানার সন্ধান পেয়ে উথুরা রেঞ্জ অফিসের সদ্য বিদায়ী রেঞ্জ কর্মকর্তা আরিফুর রহমানকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি তার অফিসের লোকজন নিয়ে চামিয়াদী বাজারের দক্ষিণ পাশের কারখানাটিতে গিয়ে দুটি চুলা সামান্য ফুটো করে দিয়ে চলে আসেন। এ বিষয়ে কারখানা মালিকের বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেন নি বলে জানা গেছে । কারখানা মালিক স্থানীয় বন বিভাগের লোকজনের সঙ্গে সমঝোতা করে পুনরায় চালু করার চেষ্টা করেছেন। কারখানার শ্রমিক জাহিদুল ইসলাম বলেন, চুলায় কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করতে সময় লাগে ১৪-১৫দিন। একটি চুলায় ত্রিশ বস্তা কয়লা হয়। প্রতি বস্তা কয়লার দাম ৮/৯শ’ টাকা। কারখানা মালিক আব্দুল কাদের মুঠো ফোনে জানান, আমি গজারি কাঠ পোড়াইনা। বিভিন্ন স মিলের কাঠের কাটা অংশ দিয়ে কয়লা বানাই। উথুরা বিট কর্মকর্তা রথিন্দ্র কিশোর রায় বলেন,গজারি কাঠ জব্দ করে নিয়ে আসা হয়েছে। আবার বেশি করে জনবল নিয়ে অভিযান চালিয়ে সব চুলা ভেঙ্গে কারখানা বন্ধ করে দেয়া হবে। এ ঘটনায় অদ্যাবধি কারখানার মালিকের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা করা হয়নি। ময়মনসিংহ দক্ষিণ বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) প্রাণতোষ কুমার মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি সরেজমিনে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
×