ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সুনাম ছড়াচ্ছে নিসবেতগঞ্জের শতরঞ্জি

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ১১ মার্চ ২০১৮

সুনাম ছড়াচ্ছে নিসবেতগঞ্জের শতরঞ্জি

উত্তর জনপদের প্রাচীনতম জেলা রংপুর। রংপর জেলা শহর থেকে পশ্চিমে সেনানিবাসের পেছনে ঘাঘট নদীর কোলঘেঁষে বিশাল এক গ্রামের নাম নিসবেতগঞ্জ। জানা যায়, গ্রামটির কিছু মানুষ ত্রয়োদশ শতাব্দীর দিকে পাটের সুতার শতরঞ্জি বানানো শুরু করেন। পরে ব্রিটিশ আমলে ওই গ্রামের একটি পাড়ার নামই হয়ে যায় শতরঞ্জিপাড়া। এখন সেটির নাম হয়েছে শতরঞ্জিপল্লী। এ গ্রামের প্রায় ২০০ পরিবার উল ও সুতার শতরঞ্জি বুনে আজ স্বনির্ভর হয়েছে। তাদের বোনা শতরঞ্জি বিদেশে রফতানি হচ্ছে। তাদের সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে রংপুরের অন্য এলাকায়ও অনেকে শতরঞ্জি তৈরিতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এই শিল্পকে ঘিরে শহরের উপকণ্ঠে নিসবেতগঞ্জ এলাকায় গড়ে উঠেছে শতরঞ্জি পল্লী। চাহিদা বৃদ্ধির সুবাদে কারুপণ্যের উদ্যোগে শহরের রবার্টসনগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও জেলা সদর, কুড়িগ্রাম এবং উলিপুর পৌর এলাকায়ও গড়ে উঠেছে শতরঞ্জি কেন্দ্র। প্রতিদিন আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শত শত পিস শতরঞ্জি উৎপাদন করা হচ্ছে। তথ্যের আলোকে দেখা গেছে- বাংলাদেশে হস্তশিল্প রফতানি আয়ের শতকরা ৬০ ভাগের অবদান কারুপণ্য রংপুর লিমিটেডের। শতরঞ্জি আগে শুধু ঘরের মেঝেতে বিছানোর জন্যই তৈরি হতো। সময়ের বিবর্তনে একই বুননে শতরঞ্জির ওয়ালম্যাট, টেবিলম্যাট, কুশন কভার, সোফার রুমাল, জায়নামাজ, পাপোশও তৈরি হচ্ছে। শতরঞ্জিতে বিভিন্ন রঙের সমন্বয় ঘটিয়ে ডিজাইন করা হয়। জানা গেছে, ৬ থেকে ৯টি রঙের ৪০-৫০টি ডিজাইনের শতরঞ্জি বাজারে পাওয়া যায়। পাশাপাশি ইচ্ছা অনুযায়ী নতুন করে বা নিজের পছন্দের নকশা অনুযায়ী ফল, ফুল, কার্টুনের পায়ের ছাপ- এসব আকারের শতরঞ্জিও পাবেন। শতরঞ্জির দাম নির্ধারণ করা হয় স্কয়ার ফিট হিসাবে। প্রতি স্কয়ার ফিট ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়। রংপুরে রয়েছে শতরঞ্জির প্রায় ৩০টি দোকান। শতরঞ্জি পাওয়া যাবে ঢাকার শুক্রাবাদে, নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, রাজধানী সুপার মার্কেট, গুলশান-২, ডিসিসি মার্কেট, গুলশান-১ নম্বরে। ফ্যাশন হাউস আড়ং, যাত্রাতে পাওয়া যাবে সুতার তৈরি ও মখমলের শতরঞ্জি।
×