বিশেষ প্রতিনিধি ॥ উপরে আল্লাহ, তারপর শেখ হাসিনা থাকায় বাংলাদেশ দুর্যোগ মোকাবেলায় সফলতা পেয়েছে। শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস ২০১৮’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এ কথা বলেন। এবার দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ হয়েছে ‘জানবে বিশ্ব জানবে দেশ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় প্রস্তুতি বাংলাদেশ’।
তিনি বলেন, এটুকু দেশে ১৭ কোটি মানুষ। একটার পর একটা দুর্যোগ- এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা কি চারটেখানি কথা! এটা সম্ভব হয়েছে উপরে আল্লাহ, তারপর জননেত্রী শেখ হাসিনার কারণে। আল্লাহর রহমত না থাকলে এ দুর্যোগ বন্ধ করা সম্ভব নয়। আর সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও মানুষের ভালবাসা না থাকলে সফল হওয়াও সম্ভব নয়। সেটি-ই করেছেন শেখ হাসিনা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের মতো দুর্যোগপ্রবণ দেশ পৃথিবীতে আর নেই। এ দেশে উজান থেকে পানি আসে, সমুদ্রের ঢেউ আসে, পাহাড়ী ঢল নামে, আকাশ থেকে ঠাডা পড়ে। উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম, উর্ধ-অর্ধ, সব জায়গা থেকে আঘাত আসে। ১২ মাসের মধ্যে ১০ মাসই আমাদের দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হয়।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা হলো একটা লোকও যেন কষ্ট না পায়। একটা লোকও যেন না খেয়ে মরে। একটা মানুষেরও অভিযোগ যেন আমার কাছে না আসে। তার ব্যবস্থা করতে হবে। তাঁর (প্রধানমন্ত্রী) নির্দেশে আমরা কাজ করি এবং সফলতা পেয়েছি।
খরা, দুর্ভিক্ষ দেখা দিলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছুটে আসেন উল্লেখ করে মায়া বলেন, যেখানে বন্য, যেখানে খরা, দুর্ভিক্ষ সেখানে সবার আগে ছুটে আসেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। উনি পরামর্শ দেন, সহযোগিতা করেন। চাইছি ১০, দিচ্ছেন ২০। অভাব নাই শেখ হাসিনার ভা-ারে। খাদ্যের অভাব নাই, চিকিৎসার অভাব নাই।
তিনি বলেন, বিদেশে গেলে এখন আর আমাদের ফকির বলে না। ডলার পকেটে নিয়ে বিদেশে যায় বাঙালীরা। এ সফলতা এসেছে দুটি কারণে। দল ও সরকারের কারণে। একদিকে সরকার অন্যদিকে দল, দুই হাত মিলে আমরা একসঙ্গে কাজ করছি, সফলতা এনে দিয়েছি। এভাবে কাজ করলেই সফলতা আসে। ‘রোহিঙ্গা সঙ্কটকে মহাদুর্যোগ’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত বছর আমরা ছয়টি দুর্যোগ মোকাবেলা করেছি। এর পাঁচটি হলো দুর্যোগ আর একটি মহাদুর্যোগ। এ মহাদুর্যোগ হলো রোহিঙ্গা। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।
দুর্যোগ মোকাবেলায় অনেকটা সফলতা এসেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আগে দুই তলার ওপরে যাওয়া যেত না। এখন ফায়ার সার্ভিস ২৪ তলার ওপর থেকে মানুষ উদ্ধার করে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সিটিপি ও স্কাউট’র প্রশংসা করে মন্ত্রী বলেন, বিনা পয়সায় এখন কেউ কাজ করে না। আমি মন্ত্রী, আমার বেতন আছে। কিন্তু দুটি সংগঠন বিনা পয়সায় দুর্যোগের সময় হাসতে হাসতে জীবন দিতে যায়। এর একটা হলো সিটিপি, আর একটা হলো স্কাউট।
মাদক, বাল্যবিবাহ এবং জঙ্গীবাদ থেকে মুক্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মাদক, বাল্যবিবাহ এবং জঙ্গী থেকে মুক্ত থাকতে হবে। এ তিনটির বিরুদ্ধে সরকার জিহাদ ঘোষণা করেছে। এ তিনটি আমরা বাংলাদেশ থেকে নির্মূল করতে পারলে, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে পারব।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ্ কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক রিয়াজ আহমদ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মদ খান প্রমুখ।