ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পাবদা মাছ চাষে সফল ঝিকরগাছার শান্তি

প্রকাশিত: ০৬:৫৮, ১০ মার্চ ২০১৮

পাবদা মাছ চাষে সফল  ঝিকরগাছার শান্তি

বিলুপ্ত প্রায় দেশীয় প্রজাতির পাবদা মাছ চাষে সফল হয়েছেন আহমেদ ফারুক শান্তি। পরীক্ষামূলক এই মাছ চাষে তিনি এ বছর প্রায় ২৫-৩০ লাখ টাকা লাভবান হবেন। তিনি পাঙ্গাস মাছ চাষেও ব্যাপক সফল হয়েছেন। আহমেদ ফারুক শান্তি জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসারা ইউনিয়নের রঘুনাথ নগর গ্রামের মৃত নিছার আহমেদের পুত্র। মৎস্য চাষ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে চলতি বছর ঝিকরগাছা উপজেলা মৎস্য অধিদফতর আহমেদ ফারুক শান্তিকে ৮০ শতক জলাশয়ে পাবদা মাছের একটি প্রদর্শনী দেয়। কিন্তু শান্তি দেশী প্রজাতির এই পাবদা মাছ ২৩০ শতক জলাশয়ে চাষ করেন। তিনি জানান, গত বছর জুন মাসে প্রথম দিকে এ মাছ চাষ শুরু করেন। ৭ বিঘা অর্থাৎ ২৩১ শতক জলাশয়ে তিনি ২ লাখ পাবদা মাছের পোনা ছাড়েন। তখন মাছের দৈর্ঘ্য ছিল ১ ইঞ্চি। সে সময় প্রতি পিচ মাছের পোনা তাকে কিনতে হয়েছিল এক টাকা ৩০ পয়সা করে। বহনসহ ২ লাখ মাছের পোনায় খরচ পড়েছিল ২ লাখ আশি হাজার টাকা। প্রতিদিন সন্ধ্যা ও ভোরে ২ বার করে খাবার দিতে হয় এই মাছের। দিনের বেলায় জলাশয়ে মাছের দেখা মেলে না। গত ৭ মাসে ২ লাখ মাছের খাবারসহ মোট খরচ হয়েছে ৮ লাখ ৬২ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে তিনি একটি জলাশয় থেকে ১১ লাখ টাকা পাবদা মাছ বিক্রি করেছেন। ওই জলাশয়ে এখনও লক্ষাধিক টাকার মাছ আছে বলে তিনি জানান। ওই জলাশয়ে তিনি ৬১ হাজার পাবদা মাছের পোনা দিয়ে মোট খরচ হয়েছিল সাড়ে ৪ লাখ টাকা। তাঁর প্রদর্শনী পুকুরসহ অপর ২ জলাশয়ে এক লাখ ৪০ হাজার পাবদা মাছের পোনা ছাড়া ছিল। এ দুই জলাশয়ে খাবারসহ তার মোট খরচ হয়েছে ১৩ লাখ টাকা। এই জলাশয়ের ১৫-১৭টি মাছের ওজন হচ্ছে এক কেজি করে। বর্তমান প্রতিকেজি পাবদা মাছের পাইকারি দাম ৪৫০ টাকা। বাজারে এ দাম বহাল থাকলে শান্তি ৩৫ লাখ টাকার উপরে মাছ বাজারে বিক্রয় করতে পারবেন বলে আশা করছেন। তাছাড়া তিনি এসব জলাশয়ে পাবদার পাশাপাশি রুই, কাতল, সিলভারকার্প, গ্লাসকার্পসহ সাদা জাতীয় মাছের চাষও করছেন সমান তালে। ফলে এসব মাছেও তিনি মুনাফা পাবেন কাক্সিক্ষত হারে। শান্তি প্রদর্শনী জলাশয়ে কয়েক দিন আগে সরেজমিনে যান জেলা মৎস্য অফিসার ড. শেখ শফিকুর রহমান, জেলার মাছ চাষ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হরেন্দ্র নাথ সরকার, ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুল ইসলাম, জেলার মাছ চাষ উন্নয়ন প্রকল্পের উপ-পরিচালক বিশ্বজিত বৈরাগী, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার আনোয়ারুল কবির, ঝিকরগাছা উপজেলা সমবায় অফিসার রণজিত কুমার দাস, জেলার মাছ চাষ উন্নয়ন প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী আবদুল মান্নান ও সহকারী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা লুৎফর রহমান। এ সময় চাষকৃত পাবদা মাছের আকার আকৃতি দেখে কর্মকর্তাগণ সন্তোষ প্রকাশ করেন। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. শেখ শফিকুর রহমান জানান, পাবদা মাছের এমন সফলতা সাধারণত চোখে পড়ে না। আহম্মেদ ফারুক শান্তি একজন সফল মাছ চাষী। -সাজেদ রহমান, যশোর থেকে
×