ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শ্যালো ইঞ্জিনে চলে নাগরদোলা

প্রকাশিত: ০৬:৫৮, ১০ মার্চ ২০১৮

শ্যালো ইঞ্জিনে চলে নাগরদোলা

নাগরদোলা এখন ঝাঁকুনিতে ঘূর্ণন নয়। সেচ যন্ত্র শ্যালো ইঞ্জিনের সার্বজনীন ব্যবহারে লেটেস্ট সংযোজন নাগরদোলায়। বগুড়ার সন্ন্যাসী মেলায় দেখা গেল যন্ত্রচালিত এমন নাগরদোলা। আরোহীরা তো মহা খুশি। আগে ঘূর্ণন ছিল ম্যানুয়ালি ধাক্কায়। এখন মোটর গাড়ির এ্যাকসিলারের মতো চাপ দিয়ে ঘূর্ণনের গতি বাড়ানো যায়। নাগরদোলার চালক আব্দুল মোমিন বললেন ‘আগে হাত দিয়্য ঝুল্লা দিতে হাঁফে ওটা লাগচ্চিল। এখন ইঞ্জিন স্টার্ট দিয়্য সুইচ দিলেই হলো। তখন খালি ঘুরতেই থাকে ঘুরতেই থাকে (আগে হাত দিয়ে দুলুনি শুরু করতে শক্তি লাগত। হাঁফিয়ে উঠতে হতো। এখন ইঞ্জিন স্টার্ট দিয়ে শুরু করলেই হলো। তখন শুধু ঘুরতেই থাকে)। নাগরদোলার চক্কর ঘূর্ণন যন্ত্রে। নাগরদোলার মালিক নইমুল হোসেন বললেন, আগে নাগরদোলায় ওঠার পর ছেলে মেয়েরা জোরে ঘোরাতে বলত। এখন দ্রুতগতির ঘূর্ণনে তারা ঘূর্ণন কমাতে বলে। তবে উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীরা দ্রুত ঘূর্ণনে বেশ মজা পায়। চিৎকার দিয়ে হৈ হৈ করে ওঠে। চালক আব্দুল মোমিন বললেন, প্রায় এক বছর আগে গাবতলির এক ওয়ার্কশপ থেকে নাগরদোলায় শ্যালো ইঞ্জিন বসিয়ে নিয়েছেন। ৮ অর্শ¦ শক্তির (হর্স পাওয়ার) শ্যালো ইঞ্জিনে পাঁচটি বক্সে প্রতিটিতে ছয়জন করে বসিয়ে চালু করা হয়। নাগরদোলার বাকি ফ্রেমগুলো উন্নত মানের শক্ত কাঠের। আব্দুল মোমিনের বাড়ি গাবতলির মহিষাবান ইউনিয়নের পাড়ানির পাড়া। নিজে একজন মেকানিক্স। এর আগে নৌকা, সাইকেল ভ্যান, গ্রামীণ পরিবহনে (ভটভটি নামে অধিক পরিচিত) শ্যালো ইঞ্জিন বসিয়েছেন। নাগরদোলায় ইঞ্জিন বসিয়ে পরীক্ষামূলক চালু করার পর সফলতা আসে। দুটি ফ্লাই হুইলে ৩টি করে ৬টি লম্বা বেল্ট বসিয়ে বিয়ারিংয়ের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। এরপর বিশেষ কৌশলে একটি কন্ট্রোল প্যানেল বসানো হয়। শ্যালো ইঞ্জিন চালু করার পর কন্ট্রোল প্যানেলে স্থাপিত এ্যাকসিলেটরে চাপ দিয়ে ঘূর্ণনের মাত্রা কমানো বাড়ানো হয। অনেকটা আরপিএমের (রিবলভিং পার মিনিট) মতো। ভূমি থেকে ২৫ ফুট ওপর পর্যন্ত প্রতি ঘূর্ণনে সাধারণত পাঁচ থেকে দশ বার দুলুনি দেয়া হয়। তবে কেউ এর চেয়ে বেশি ঘুরতে চাইলে দুই তিন বার বেশি ঘুরিয়ে দেয়া হয়। ঘূর্ণনের দুলুনি থেতে জনপ্রতি পাঁচ থেকে দশ টাকা নেয়া হয়। হেসে বললেন : অনেকেই নাগরদোলায় দ্রুত ঘূর্ণনে অনেকেরই মাথা ঘুরে ওঠে। বমন করে। এ সময় তাকে নামিয়ে দেয়া হয়। দ্রুতগতির এমন নাগরদোলা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। -সমুদ্র হক, বগুড়া থেকে
×