ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অস্তিত্ব হারাচ্ছে ‘ফরিদপুর খাল’

ফরিদপুরে খাল ভরাট করে ড্রেন ও রাস্তা নির্মাণ

প্রকাশিত: ০৬:৫৫, ১০ মার্চ ২০১৮

ফরিদপুরে খাল ভরাট করে ড্রেন ও রাস্তা নির্মাণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জলাবদ্ধতা নিরসনে ফরিদপুর শহরের দক্ষিণ আলিপুরে খালের জায়গায় তৈরি করা হচ্ছে ড্রেন ও রাস্তা। খোদ পৌরসভার উদ্যোগে ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে করা হচ্ছে এই খাল ভরাট ও রাস্তা-ড্রেন নির্মাণ। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত কাজের নির্দেশনা দিয়েছে ফরিদপুর পৌরসভা। ১৯৬২ সালের ভূমি জরিপে খালটিকে ‘ফরিদপুর খাল’ নামে উল্লেখ করা হয়েছিল। ফরিদপুর পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘খালের ওপর এই রাস্তার দৈর্ঘ্য হবে ৬০০ মিটার এবং চওড়া হবে ৪০ ফুট। সঙ্গে থাকছে ২ মিটার ড্রেন কাম ফুটপাথ। যা তৈরিতে আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ কোটি টাকা।’ তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘এই খাল দিয়েই শহরের আলিপুর, নিলটুলী ও লক্ষ্মীপুর এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকার বৃষ্টির পানি কুমার নদীতে বের করে দেয়া সম্ভব।’ সূত্র মতে, ২০০৭ সালে ফরিদপুর শহরে চারদিনব্যাপী প্রবল বৃষ্টিপাতে ব্যাপক জলাবদ্ধতা হয়। তখন শহরের পুরাতন নালা ও খাল উদ্ধারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। পরে ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আলিপুর এলাকার এই খালটির প্রায় আধা কিলোমিটার অংশ যৌথবাহিনীর সহায়তায় দখল মুক্ত করে প্রশাসন। ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আলতাফ হোসেন বলেন, ‘শহরের মাঝে থাকা খালটি আশীর্বাদের মতো, কিন্তু ড্রেন নির্মাণ করে রাস্তা ও খাল নির্মাণ করা হলে বর্ষায় প্রাকৃতিক পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হবে। তাই খালের জায়গা ঠিক রেখে বিকল্প রাস্তা নির্মাণ করা দরকার।’ খলিল শেখ নামে আলিপুর এলাকার বাসিন্দা বলেন, ‘একসময় এই খাল দিয়ে নৌকাযোগে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে পাট ও অন্যান্য কৃষিজাত পণ্য শহরে আসত। আজ খালের সেই গতিপথের অস্তিত্ব নেই।’ সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১১৫ থেকে ৫২ ফুট চওড়া এই খালের অর্ধেকই আজ বিলীন। আর লক্ষ্মীপুর ও আলিপুর এলাকার অংশের এখন পাকা দালান, দোকান ও মাটিতে ভরাট হয়ে গেছে। ফরিদপুরে জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া বলেন, ‘গতবছর আমি দেখেছি শহরের জলাবদ্ধতা কেমন হতে পারে। আমার বাসভবন সে সময় প্রায় ছয় মাস জলাবদ্ধ ছিল। তখন মেয়র জানিয়েছিলেন জলাবদ্ধতা নিরসনে ৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের অপেক্ষায়। তবে খাল ভরাট করে রাস্তা নির্মাণে কোন প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখব।’ ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র শেখ মাহাতাব আলী মেথু বলেন, ‘শহরের যানজট ও জলাবদ্ধতা নিরসনের অংশ হিসাবে এই খালের ওপর রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে। আগামীতে আরও ড্রেন নির্মাণ করা হবে। তাতে পৌর এলাকার ৯৯ ভাগ জলাবদ্ধতার সমাধান হবে।’
×