ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

ঢাকা পদাতিকের ৩৮ বছর পূর্তির নাট্যোৎসব

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১০ মার্চ ২০১৮

ঢাকা পদাতিকের ৩৮ বছর পূর্তির নাট্যোৎসব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সময়ের স্রোতধারায় প্রতিষ্ঠার ৩৮ বছরে পদার্পণ করল নাট্যদল ঢাকা পদাতিক। সেই সাফল্যের উদ্যাপনে শুক্রবার থেকে শুরু আট দিনব্যাপী নাট্যোৎসব। উৎসবের প্রথম দিনের সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হলো ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা মাস্টার দা সূর্যসেনের জীবনীনির্ভর দলটির নতুন নাটক ‘ট্রায়াল অব সূর্যসেন’। এটি ছিল দ্বিতীয় মঞ্চায়ন। আগামী ১৬ মার্চ পর্যন্ত শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় চলমান এ উৎসবে সহযোগিতা করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসব উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী ও গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল আখতারুজ্জামান। উদ্বোধনী আয়োজনে বক্তব্য রাখেন উৎসব কমিটির আহ্বায়ক গোলাম কুদ্দুছ ও অভিনেতা নাদের চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা পদাতিকের সভাপতি মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ হোসাইন। মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে উৎসব উদ্বোধন করেন অতিথিরা। উদ্বোধনী বক্তব্যে ড. আখতারুজ্জামান বলেন, নাটকের তিনটি উপাদান থাকে- সময়, স্থান ও মানুষ। এই তিনটি বিষয় নাটক ও ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত। আর এই তিনটির অসামান্য সমন্বয় সৃষ্টি করে সুন্দর নাটক তৈরি হয়। নাটক একটি সমাজের প্রতিবিম্ব। ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে হলে নাটকের বিকল্প নেই। কেননা নাটকে ইতিহাসের প্রতিফলন দেখা যায়। মানুষ যখন সময় করে নাটক দেখে তখন তার মধ্যে বিশেষ মূল্যবোধের জন্ম হয়। সংস্কৃতি অঙ্গনে আশির দশকের ঢাকা পদাতিকের গুরুত্ব ছিল অসাধারণ। লিয়াকত আলী লাকী বলেন, ঢাকা পদাতিকের জন্ম ১৯৮০ সালে হলেও তার প্রস্তুতি অনেক আগে থেকেই। সে সময় টিএসসির একটি অন্যতম দল ঢাকা পদাতিক। দলটির টিম ওয়ার্ক দারুণ। গোলাম কুদ্দুছ বলেন, শুধু বিনোদনের জন্য আমরা নাটক করি না। নাটক করি সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে। আমরা নাটকের মাধ্যমে এমন একটি দেশ গঠন করতে চাই, যেখানে জাতিবর্ণ নির্বিশেষ সকলের সমান অধিকার থাকবে। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে মঞ্চস্থ হয় ঢাকা পদাতিকের ৩৮তম প্রযোজনা ‘ট্রায়াল অব সূর্যসেন’। । প্রযোজনাটির রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন মাসুম আজিজ। মাস্টার দা সূর্যসেনের ওপর প্রহসনের বিচার ও অন্যায় হত্যাকা-ের বিষয়বস্তুকে উপজীব্য করে নির্মিত হয়েছে প্রযোজনাটি। নাটকে সূর্যসেন, প্রীতিলতা, কল্পনা দত্ত, অম্বিকা চক্রবর্তী, লোকনাথ বল, নির্মল সেনসহ প্রায় ৪০টি ঐতিহাসিক চরিত্র উঠে এসেছে। নাটকটিতে সূর্যসেনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাদের চৌধুরী। আরও অভিনয় করেছেন মাহবুবা হক কুমকুম, আব্দুল্লাহ রানা, হাসনা হেনা শিল্পী, মাহাবুবুর রহমান টনি, সাবিহা জামান, শ্যামল হাসান, কাজী আমিনুর, ফিরোজ হোসাইন, আক্তার হোসেন প্রমুখ। আজ শনিবার উৎসবের দ্বিতীয় দিনে একাডেমির নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে সন্ধ্যা ৭টায় মঞ্চস্থ হবে শিল্পকলা একাডেমি প্রযোজিত নাটক ‘একশ বস্তা চাল’ ও পরীক্ষণ থিয়েটার হলে ভারতের কলকাতার কল্যাণী নাট্যচর্চা কেন্দ্রের ‘ধ্রুবপুত্র’। নয় নাটকে সাজানো উৎসবের বাকি দিনগুলোতে মঞ্চস্থ হবে ঢাকা পদাতিকের ‘হেফাজত’, ‘কথা ’৭১’ ও ‘পাইচো চোরের কিচ্ছা’, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুরের নাট্যদল ঋতিক ‘আদি রাজা’, প্রাচ্যনাট ‘কিনু কাহারের থেটার’ ও লোকনাট্যদল (সিদ্ধেশ্বরী) মঞ্চস্থ করবে ‘কঞ্জুস’। রবীন্দ্র সরোবরে ‘শেকল ভাঙ্গার পদ্য’ ॥ শুক্রবার থেকে ধানম-ির রবীন্দ্র সরোবরে শুরু হলো বাকশিল্পাঙ্গন আয়োজিত ‘শেকল ভাঙ্গার পদ্য’ শিরোনামে দুই দিনের মুক্তিযুদ্ধের আবৃত্তি উৎসব। বসন্ত বিকেলে উৎসব উদ্বোধন করেন ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের (আইটিআই) সাম্মানিক বিশ্বসভাপতি নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার। অতিথি ছিলেন কবি নির্মলেন্দু গুণ, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক ও আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ আলম সারোয়ার। এরপর সম্মাননা প্রদান করা হয় ডাঃ বসন্ত কুমার রায়কে। শিশুদের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসব। এর পর আবৃত্তিশিল্পী হাসান আরিফের পরিবেশনায় ছিল ‘ছিন্ন ডানার মানুষ পাখি’। বাকশিল্পাঙ্গন পরিবেশন করে আবৃত্তি প্রযোজনা ‘দেশ ছাড়া ঘর হারা’। স্বরচিত্র মঞ্চায়ন করে মাহিদুল ইসলামের গ্রন্থনা ও নির্দেশিত প্রযোজনা ‘আর কত রক্তের দরকার হবে’। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন লায়লা আফরোজ, বেলায়েত হোসেন, নাসির উদ্দিন, রফিকুল ইসলাম, ফয়জুল আলম পাপ্্পু, মাহিদুল ইসলাম, মাসুদুজ্জামান, মাহফুজ মাসুম প্রমুখ। ২২৫ শিল্পীর যৌথ শিল্পকর্ম প্রদর্শনী ॥ চিত্রকর্মের সঙ্গে ভাস্কর্যের সম্মিলনে সেজেছে প্রদর্শনালয়টি। আর বৈচিত্র্যময় এই শিল্পকর্মগুলো সৃজন করেছেন ২২৫ শিল্পী। চিত্রকর্ম, ভাস্কর্য, ম্যুরাল, টেরাকোটাসহ বিচিত্র শিল্পসম্ভারে শুক্রবার থেকে গুলশানের মৃনাল হক ক্রিয়েটিভ আর্টস গ্যালারিতে শুরু হলো যৌথ প্রদর্শনী। প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লুম বার্নিকাট। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলাম ও গ্যালারির স্বত্বাধিকারী ভাস্কর মৃনাল হক। তিন সপ্তাহব্যাপী এ প্রদর্শনী শেষ হবে ৩০ মার্চ। প্রতিদিন বেলা ১২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। কুড়ি নারীর চিত্রকর্ম প্রদর্শনী ‘জলকন্যা’ ॥ শিল্প সৃজনের তাগিদে এক আয়োজনে সম্পৃক্ত হয়েছেন ২০ নারী চিত্রকর। এই কুড়ি নারী শিল্পীর আঁকা চিত্রকর্ম নিয়ে সাজানো প্রদর্শনী ‘জলকন্যা’। নারী দিবস উদ্যাপনের অংশ হিসেবে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের চিত্রশালায় চলছে এ প্রদর্শনী। প্রদর্শনীতে ঠাঁইপ্রাপ্ত জলরঙে আঁকা ৪৩টি ছবি এঁকেছেন সালমা শিরিন, ফাতেমা আক্তার, সুপর্ণা এলিস গমেজ, প্রভাতী ঝর্ণা, গৌরী শংকর ধর, রাইসা মানিজা আক্তার, কানন জেনেট গমেজ, সঞ্চিতা সাহা, সেতারা আক্তার হ্যাপী, তাহমিমা আজিজ দিঘী, রতœা খানম, সাবিয়া নাসরিন, সুরাইয়া আক্তার চিশতি রিমা, মেরিলিন গমেজ, সুচিতা সুপ্রিয়া, জেসমিন আক্তার জুঁই ও এলিসেন গ্রিফিথ গমেজ। এ প্রদর্শনী চলবে ১২ মার্চ পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। কচিকাঁচায় ‘জয়নব বিবির কিস্সা’ ॥ শাকিলা মাল্টিভিশনের প্রযোজনায় মঞ্চায়ন হলো লোকনাটক ‘জয়নব বিবির কিস্সা’। শুক্রবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় কচিকাঁচা মিলনায়তনে মঞ্চায়ন হয় নৃত্য-গীতে মিশ্রিত প্রেম-ভালবাসার এই নাটকটি। মঞ্জুর রহমানের রচনা ও নির্দেশনায় নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাকিলা মাল্টিভিশনের নিয়মিত শিল্পীরা। নীলফামারী থেকে তাহমিন হক ববী জানান, স্মৃতি ও স্বপ্নের পথ বেয়ে মানুষের চিরকালের আসা-যাওয়া। স্মৃতি চিহ্ন মানুষের কাছে স্মৃতি হয়ে থাকে শুকিয়ে যাওয়া মালা যেমন মনে করিয়ে দেয় সে এসেছিল। উত্তরবঙ্গের নীলফামারী সেই স্মৃতি আজ নতুন রূপে রাঙ্গিয়ে উঠেছে। তাই নীলফামারী শহরের বড় মাঠে শুক্রবার বিকেল হতে তিন দিনব্যাপী শুরু হয়েছে সারা দেশের হাজারও রবীন্দ্রভক্তের মিলনমেলা। যা জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলনের সপ্তত্রিংশ বার্ষিক অধিবেশন/১৪২৪। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ দেশের ৮৪টি শাখার সহ¯্রাধিক প্রতিনিধি এবং দেড় শতাধিক স্থানীয় শিল্পী ও কলাকুশলী অংশ নিয়েছেন বার্ষিক অধিবেশনে। প্রায় ৫০ হাজার দর্শক উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন। এবারের জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলনে থাকছে- নজরুল গীতি, ভাওয়াইয়া, গীত, গীতি-আলেখ্য, কণ্ঠশীলন-এর কাব্য-আলেখ্য, নৃত্যনন্দ-এর রবীন্দ্র নৃত্যনাট্য , পঞ্চ কবির গান ও লোকসঙ্গীত। ‘সংস্কৃতির আলোয় সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী উচ্চারণে- ‘চল রে টেনে আলোয় অন্ধকারে- এই স্লোগান নিয়ে এই অধিবেশন বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে ‘উড়িয়ে ধ্বজা অভ্রভেদী রথে-ওই-যে তিনি, ওই-যে বাহির পথে—-’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতবিতানের এই গানটির কথাকে সামনে রেখে বোধন সঙ্গীতটি পরিবেশনের মাধ্যমে তিনদিনের এই বার্ষিক অধিবেশন শুরু হয়। তিন দিনব্যাপী সাঁইত্রিশতম এ সম্মেলনের আয়োজন করছে জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ। অভিনেতা, নির্দেশক ও আবৃত্তিশিল্পী ড. ভাম্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঞ্চালনায় মঞ্চে থাকা শিল্পীদের কণ্ঠে ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে- এ জীবনপূর্ণ কর— পূর্ণ কর দহন দানে’ রবীন্দ্রঠাকুরের গানের সুর মূর্ছনায় সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর প্রদীপ প্রজ্বলন শেষে আর্শীবাণী প্রদানের মাধ্যমে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এ সময় আসাদুজ্জামান নূর বলেন, নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষ তার নিজস্ব সংস্কৃতিতে রবীন্দ্রনাথকে ধারণ করে তা প্রতিষ্ঠার কাজে আত্মনিয়োজিত থেকেছেন। রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ সে সাধনা থেকে বিচ্যুত হয়নি কখনও। তাই সম্মিলন পরিষদের কর্মকা- কখনই আনুষ্ঠানিকতায় সীমাবদ্ধ থাকেনি- বরং হয়ে উঠেছে বাংলার সংস্কৃতিসেবীদের এক অনন্য ভাব বিনিময়ের ক্ষেত্র, যার মাধ্যমে ঘটবে মুক্ত সংস্কৃতি বিকাশের লক্ষ্যে বহু কাক্সিক্ষত সম্মিলিত শক্তি। আমরা মৌলবাদীর বিরুদ্ধে সংস্কৃতির মাধ্যমে যুদ্ধ করব। হটিয়ে দেব অপশক্তিকে। অনুষ্ঠানের সভাপতি পরিষদের সভাপতি ড. সন্জীদা খাতুন বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মানবতাকে সবচেয়ে বড় করে দেখেছেন। তার সাধনা ছিল আগে বাঙালী হওয়া, পরে বিশ্বমুখী হওয়া। তাই তিনি দেবতার পায়ে ফুল না দিয়ে মানুষের পায়ে ফুল দিয়েছিলেন। এই যে মানুষকে বড় করে দেখা এটি আজ আমারে প্রয়োজন। বেশী ভাগ মানুষ মনুষ্যত্ব হারিয়ে ফেলেছে। সংস্কৃতি আমাদের পথ দেখায়- এই সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা মানবতার শিশু জন্ম দিব। সেই সঙ্গে রবীন্দ্র নাথের ন্যায় আমরা নজরুলসহ অসংখ্য কবির সাহিত্য মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই। কারণ আমরা বাঙালী। অধিবেশনে সূচনা বক্তব্য দেন জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল ইসলাম। তিনি বলেন আজ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হবার কথা ছিল ড. জাফর ইকবালের। আজ তিনি মৌলবাদীর থাবার শিকার। মৌলবাদীর বিরুদ্ধে আমাদের সংস্কৃতি আজ সোচ্চারতা শিখাবে। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন তিনদিনের এই অধিবেশন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব ডাঃ মুজিবুল হাসান চৌধুরী শাহীন। তিনি নীলফামারীর ছোট করে ইতিহাস তুলে ধরে এই আয়োজনের জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান। এরপর শুরু হয় সঙ্গীতানুষ্ঠান, আবৃত্তি, নৃত্যানুষ্ঠান। পরিশেষে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে প্রথম দিনের অধিবেশনের সমাপ্তি ঘটে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নীলফামারী ১ আসনের সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার, নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোঃ খালেদ রহীম ও পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন, পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, সৈয়দপুর উপজেলা মেয়র আমজাদ হোসেন সরকার, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবুজার রহমান, ডোমার উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বসুনিয়া, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মামুন ভুঁইয়া প্রমুখ। রবীন্দ্রভক্তের মিলনমেলা ঘিরে নীলফামারী শহর নবরূপে সেজেছে। চারিদিকে মিলনমেলার কোলাহল। এই মিলনমেলা উপভোগ করবে প্রায় ৫০ হাজার দর্শক ছিল অধিবেশন ঘিরে। আয়োজকরা জানান এই মিলন মেলায় রবীন্দ্রপদক দিয়ে গুণী-সম্মাননা জানান হবে রাজশাহীর প্রবীণ উচ্চাঙ্গসঙ্গীত শিল্পী মঞ্জুশ্রী রায় ও রংপুরের লোকসঙ্গীত শিল্পী উপেন্দ্রনাথ রায়কে। তিন দিনের সপ্তত্রিংশ বার্ষিক অধিবেশনে সহায়তা দিচ্ছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও বেঙ্গল গ্রুপ লিমিটেড। সম্মেলনকে ঘিরে শহর সাজাতে সড়কের দু’ধারে বিভিন্ন দেয়ালে শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলামসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের ছবির পাশাপাশি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। এসব ছবি এঁকেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে চারুকলা বিভাগের ১৫ জন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৮৮ জন ক্ষুদে শিল্পী। অপর দিকে বিশাল হাইস্কুল মাঠের সম্মেলন স্থলটি গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের আদলে সাজান হয়েছে। বার্ষিক অধিবেশনের আজ শনিবার সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন সকালে জেলা শহর হতে ১৫ কিলোমিটার অদূরে বিরাট রাজার কন্যা বিন্যাবতী দিঘির নীলসাগরপাড়ে অনুষ্ঠিত হবে প্রীতি সম্মেলন। আগামীকাল রবিবার তৃতীয় দিন ও সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের সকালে স্থানীয় শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, আবৃত্তি ও সঙ্গীতানুষ্ঠান এবং প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
×