ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৭ মার্চের সমাবেশ

জনস্রোতে নারীর শ্লীলতাহানি- জড়িতদের শনাক্ত করা হচ্ছে,শীঘ্রই অভিযান

প্রকাশিত: ০৫:২২, ১০ মার্চ ২০১৮

 জনস্রোতে নারীর শ্লীলতাহানি- জড়িতদের শনাক্ত করা হচ্ছে,শীঘ্রই অভিযান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আওয়ামী লীগ আয়োজিত ঐতিহাসিক ৭ মার্চের সমাবেশের জনস্রোতের মধ্যে নারীর শ্লীলতাহানির সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। তাদের শনাক্ত করতে বাংলামোটরসহ আশপাশের এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ফুটেজের পর্যালোচনা করা হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করার পরপরই তাদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হবে। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাটি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শুক্রবার সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘটনার সঙ্গে জড়িত কেউ গ্রেফতার হয়নি। ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার জনকণ্ঠকে বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। পুলিশ ছাড়াও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থাও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করার কাজ করছে। শনাক্ত হওয়া মাত্রই তাদের গ্রেফতার করা হবে। ঢাকা মহানগর পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি এ্যান্ড ক্রাইম (সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং) বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ওই তরুণীর ফেসবুক পোস্টে যেসব তথ্য দেয়া আছে, তার সত্যতা মিলেছে। ওই তরুণীর জবানবন্দীও নেয়া হয়েছে। তার দেয়া ঘটনার বর্ণনা, সময় ও আশপাশের বিভিন্ন তথ্য অনুযায়ী শান্তিনগর, শাহবাগ ও বাংলামোটরসহ এর আশপাশে এলাকার সিসি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই ঘটনায় কলেজ ছাত্রীর পিতা বৃহস্পতিবার রমনা মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন। রমনা থানার ওসি কাজী মাইনুল ইসলাম জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা ওই মামলায় অজ্ঞাত আসামির সংখ্যা ১৫ থেকে ২০ জন। ফেসবুক স্ট্যাটাসে যেভাবে বর্ণনা দেয়া হয়েছে, মামলাও হয়েছে সেভাবেই। ওই শিক্ষার্থীর বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। বক্তব্য মোতাবেক নির্যাতনকারীদের চেহারার বর্ণনাসহ নানা বিষয় প্রকাশ পেয়েছে। যা তদন্তে বিশেষ সহায়ক হবে। তদন্তকারী সূত্রে জানা গেছে, ঘটনায় জড়িতরা যুবক। তারা মেয়েটিকে অনেকক্ষণ থেকেই অনুসরণ করছিল। বৃহস্পতিবার ওই ঘটনার ডিভিও ফুটেজ পাওয়ার কথা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তারা কোন দলের তা দেখা হবে না। ওই ছাত্রী ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ১৫-২০ জন যুবক তাকে যৌন নিপীড়ন শুরু করলে এক পুলিশ সদস্য তাকে উদ্ধার করে একটি বাসে তুলে দেন। ক্ষোভের সঙ্গে ওই তরুণী লেখেন, এরপর তিনি বাংলাদেশেই থাকবেন না। তার এই পোস্ট ব্যাপক শেয়ার হয়। পরবর্তীতে নিজের পোস্ট সরিয়ে দেন তিনি। পরে আরেক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘পোস্টটা অনলি মি করেছি, কারণ পোস্টটা রাজনৈতিক উস্কানিমূলকভাবে শেয়ার করা হচ্ছিল। আমি কোন রাজনৈতিক উদ্দেশে পোস্টটা দিইনি। তার কলেজকে জড়ানো হচ্ছিল এই ব্যাপারে। ব্যাপারটার সঙ্গে আমার কলেজের কোন সম্পর্ক নেই। ওই তরুণীর বক্তব্য মোতাবেক, ওইদিন তিনি বাস না পেয়ে হাঁটতে হাঁটতে বাংলামোটরের দিকে যাচ্ছিলেন। ওই সময় তাকে অনুসরণ করছিল একদল যুবক-কিশোর। ওই শিক্ষার্থী তার এক স্বজনকে বলেছেন, তাকে অনুসরণকারীরা তার পেছনেই ছিল এবং তাকে উত্ত্যক্ত করছিল। একপর্যায়ে সে এর প্রতিবাদ করেন। এই নিয়ে বখাটেদের সঙ্গে তার কথা-কাটাকাটিও হয়। তখন বখাটেরা তার গায়ে হাত দেয়। তবে ওই বখাটেরা মিছিলের কেউ ছিল কি না, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য জানা যায়নি। গত বুধবার রাতে এক ছাত্রী ৭ মার্চে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। এরপরই সেটি ভাইরাল হয়ে পড়ে। ফেসবুকের পোস্টটি নিয়ে বুধবার রাত থেকেই কাজ শুরু করে পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি বিভাগের সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং বিভাগ।
×