ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

তিন শ’ ২০ কোটি টাকার জিসিএফ অনুদান সহায়তা পেল বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ৯ মার্চ ২০১৮

 তিন শ’ ২০ কোটি টাকার জিসিএফ অনুদান  সহায়তা পেল  বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলা সংক্রান্ত প্রকল্পে প্রথমবারের মতো গ্রীন ক্লাইমেট ফান্ডের (জিসিএফ) অনুদান সহায়তা পেল বাংলাদেশ। জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো প্রাতিষ্ঠানিকরণ শীর্ষক একটি প্রকল্পে ৪ কোটি মার্কিন ডলারের সহায়তা অনুমোদন দিয়েছে জিসিএফ। বাংলাদেশী মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় (প্রতি ডলার ৮০ টাকা হিসেবে) এর পরিমাণ প্রায় ৩২০ কোটি টাকা। এছাড়াও জার্মান সরকারের তরফে একই প্রকল্পে আরও ১২০ কোটি টাকা অনুদান পাওয়া যাবে। এ জন্য বৃহস্পতিবার সরকারের সঙ্গে জিসিএফের তালিকাভুক্ত জার্মান দাতাসংস্থা কেএফডব্লিউয়ের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের ইআরডি সম্মেলন কক্ষে চুক্তিতে সই করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব কাজী শফিকুল আযম এবং কেএফডব্লিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য (এশিয়া এবং ইউরোপ বিভাগ) রোলান্ড সিলার। চুক্তি স্বাক্ষর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ক্লাইমেট রেসিলেন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার মেইনস্ট্রিমিং ইন বাংলাদেশ বা জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো প্রাতিষ্ঠানিকরণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এই অর্থ ব্যয় হবে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৬২ কোটি টাকা। এর মধ্যে জিসিএফের ৩২০ কোটি এবং জার্মান সরকারের ১২০ কোটি টাকা পাওয়া যাচ্ছে অনুদান হিসেবে। প্রকল্পের বাকি ২২২ কোটি টাকা অর্থায়ন করবে বাংলাদেশ সরকার। অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের (জিসিএফ) আওতায় এটি প্রথম প্রকল্প। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা ও সাতক্ষীরার ২০ উপজেলা এবং একটি পৌরসভায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের ভূমিকা অতিনগণ্য। অথচ বাংলাদেশই জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির সম্মুখীন। একক দেশ হিসেবে প্রতিবেশী ভারত ও চীন সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণ করে। আশার কথা হচ্ছে, দেশ দুটো জলবায়ু ঝুঁকির বিষয়টি বর্তমানে আমলে নিচ্ছে এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপও নিচ্ছে। এর একটা ইতিবাচক প্রভাব এই অঞ্চলে পড়বে বলে মন্ত্রী আশা করেন। জানা গেছে, একই দিন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় সংশ্লিষ্ট এলাকায় ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ ও সংস্কার, দুর্গম উপকূলীয় এলাকায় রাস্তা নির্মাণ, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ নগরবাসীর নিরাপত্তার জন্য অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। এছাড়া আবহাওয়া সংক্রান্ত সব প্রয়োজনীয় তথ্য ও দুর্যোগ মোকাবেলার প্রস্তুতিমূলক তথ্যের জন্য একটি জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো উৎকর্ষ কেন্দ্রও নির্মাণ করা হবে। ২০১৮-২০২৩ সাল পর্যন্ত ছয় বছর মেয়াদী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। উল্লেখ্য, জিসিএফ জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের (ইউএনএফসিসিসি) আওতায় ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত তহবিল। এর মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রচেষ্টায় অর্থায়ন করা হয়। বাংলাদেশে জিসিএফের অনুমোদন পাওয়া এটিই প্রথম প্রকল্প।
×