ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নগর অবকাঠামো ও সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচী নেয়া হচ্ছে ্রঅসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৮ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে

একনেকে ৭৪৬৬ কোটি টাকার ছয় প্রকল্প অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৪:৪৭, ৯ মার্চ ২০১৮

একনেকে ৭৪৬৬ কোটি টাকার ছয় প্রকল্প অনুমোদন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো ও সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচী হাতে নিচ্ছে সরকার। নগর অবকাঠামো ও সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচী নামের দুটি পৃথক প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেয়েছে। এ ছাড়া সারাদেশে উপজেলা পর্যায়ে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৮ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে সরকার। এ লক্ষ্যে ২ হাজার ২৭৩ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে একনেক। বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় ‘প্রতি উপজেলায় অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ’ প্রকল্পসহ মোট ৬টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৪৬৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রকল্প সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা সকলেই বয়োজ্যেষ্ঠ এবং উপার্জনক্ষম না হওয়ায় তাদের পক্ষে ভাড়া, খরিদ বা এককালীন অর্থ পরিশোধের মাধ্যমে ফ্ল্যাট কেনা সম্ভব নয়। এ লক্ষ্যে প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় তৈরি হবে বহুতল আবাসিক ভবন। নির্মাণ করা হবে মোট ৮ হাজার ফ্ল্যাট। তিনি বলেন, দুই ইউনিটবিশিষ্ট ২৬৪টি এবং চার ইউনিটবিশিষ্ট ২৬৮টি অর্থাৎ মোট ৫৩২টি ভবন নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি ইউনিট বা ফ্ল্যাটের আয়তন হবে ৯৮২ বর্গফুট। এতে ৩টি বেড রুম, ১টি ড্রইং-কাম ডাইনিং রুম, ২টি বাথরুমসহ বারান্দা থাকবে। তবে যেসব জেলা বা উপজেলায় ৩ বা ততোধিক ভবনের প্রয়োজন হবে সেখানে আবাসন কমপ্লেক্স নির্মাণ করে অন্যান্য সুবিধাদি যেমন- অভ্যন্তরীণ সড়ক, লাইটিং ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। তিনি জানান, মূল খাস জমির ওপর ভবনগুলো নির্মাণ করা হবে। তবে যেসব উপজেলায় খাস জমি পাওয়া না যায় সেখানে জমি অধিগ্রহণ করা হবে। চলতি বছর থেকে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের ফ্ল্যাট দেয়ার জন্য সুস্পষ্ট নীতিমালা তৈরির নির্দেশনা দিয়েছেন বলে মুস্তফা কামাল জানান। মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর পর সন্তানদের মধ্যে ফ্ল্যাটের উত্তরাধিকার নির্ধারণে এ নীতিমালা অনুসরণ করা হবে। মন্ত্রী বলেন, নগর অবকাঠামো উন্নয়ন ২য় পর্যায় প্রকল্পটির জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৪৬৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অন্যদিকে সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচী (সিভিডিপি) ৩য় পর্যায় প্রকল্পটির জন্য ব্যয় হবে ৩০১ কোটি টাকা। তিনি বলেন, সারাদেশে মৌলিক অবকাঠামোর ঘাটতি থাকায় ৮টি বিভাগের ২৮১টি পৌরসভায় নগর উন্নয়ন করা হবে। পৌরবাসীর জীবনযাত্রার মান, অবকাঠামো ও পরিবেশ উন্নয়ন এবং প্রকল্পটির মাধ্যমে দেশের বৃহৎ নগরীর ওপর জনসংখ্যার চাপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। অন্যদিকে সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচী প্রকল্পটি তৃতীয় পর্যায়ে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দক্ষতা বৃদ্ধি ও আয়বর্ধনের মাধ্যমে পল্লী এলাকার দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য কাজ করা হবে। প্রকল্পটি ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় গ্রামীণ উন্নয়ন কৌশলের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এ ছাড়া এটি এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। প্রকল্পটির মাধ্যমে দেশের ৬৪টি জেলার অপেক্ষাকৃত দারিদ্র্যপ্রবণ ১৬২টি উপজেলাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিনিয়োগের মাধ্যমে আত্মকর্ম সংস্থানের সৃষ্টি হবে। অনুমোদিত অন্য প্রকল্পসমূহ হচ্ছে- ‘জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ প্রকল্পে’র খরচ ধরা হয়েছে ৬৬২ কোটি টাকা। বিমানবন্দর বাইপাস ইন্টারসেকশন- লালবাগ-সালুটিকর-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ সড়ককে জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৬২৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের সম্প্রসারণের লক্ষ্যে আনুষঙ্গিক সুবিধাসহ নতুন ১২তলা ভবন নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩৮ কোটি ৪ লাখ টাকা। মন্ত্রী জানান, এসব প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে সরকারী তহবিল থেকে ব্যয় হবে ৭ হাজার ২৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা পাওয়া যাবে ৪৪০ কোটি টাকা।
×