ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আমতলীতে সড়ক নির্মাণে অনিয়ম

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ৯ মার্চ ২০১৮

আমতলীতে সড়ক  নির্মাণে অনিয়ম

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা, ৮ মার্চ ॥ আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের মুন্সিরহাট থেকে চালিতাবুনিয়া পর্যন্ত ২.৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের ইট ও বালু দিয়ে কাজ করছে। দরপত্রে উল্লেখিত কার্যাদেশ অনুসারে কাজ করছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ঠিকাদারের নিম্নমানের কাজের বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলীকে জানানো হলেও প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম অজ্ঞাত কারণে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। কার্যাদেশের মেয়াদ ৬ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও ঠিকাদার সড়কের কাজ ফেলে রেখেছেন। ঠিকাদার বশির উদ্দিনের অভিযোগ, স্থানীয় লোকদের চাঁদা দিয়ে কাজ করতে হয়। চাঁদা না দিলে কাজ বন্ধ করে দেয়। ১ লাখ ২০ হাজার টাকা স্থানীয়দের চাঁদা দিয়েছেন বলে জানান তিনি। জানা গেছে, ২০১৬ সালে সিসিআরআইপি প্রকল্পের অধীনে মুন্সির হাট থেকে চালিতাবুনিয়া পর্যন্ত ২.৫ কিলোমিটার সড়কের কাজের দরপত্র আহ্বান করে বরগুনা নির্বাহী প্রকৌশলী অফিস। ৩ কোটি ৬ হাজার ১৬৫ টাকা ব্যয়ে এ কাজ পায় পটুয়াখালী এমকেকেইএন্ডএমবিইউ যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ কাজের মধ্যে ছিল ২.৫ কিলোমিটার সড়কের পাকাকরণ, একটি কালভার্ট ও একটি ব্রিজ। এ কাজের মেয়াদ গত ৭ সেপ্টেম্বরে শেষ হয়। ওই বছর ঠিকাদার সড়কের সাব-বেইজের জন্য বেট কেটে ফেলে রাখে। কাজের মেয়াদ ৬ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও কাজ না করে ফেলে রাখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দরপত্রের কার্যাদেশে এজিনসহ সড়কের প্রস্থ ৮ ফুট ৯ ইঞ্চি, ২১ ইঞ্চি বেটের ১০ ইঞ্চি বালু, ৫ ইঞ্চি সাব-বেইজ (বালু ও ইটের খোয়া), ৫ ইঞ্চি ম্যাগাডাম (ইটের খোয়া) ও ১ ইঞ্চি কার্পেটিংয়ের (পাথর ও পেইজ) কাজের কথা উল্লেখ রয়েছে। নির্মাণ কাজের শুরুতেই সড়কের কার্যাদেশ অনুসারে কাজ করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। বিএনপি নেতা ও ঠিকাদার বশির উদ্দিনের নিম্নমানের কাজের কথা উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলামকে জানানোর পরও প্রকৌশলী স্থানীয়দের অভিযোগ আমলে নেয়নি। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ঠিকাদার গত বছর নাম মাত্র বেট কেটে রেখে দেয়। এ বছর ওই বেটে নিম্ন মানের ইটের খোয়া দিয়ে কাজ শুরু করে। ঠিকাদারের এ নিম্নমানের কাজের প্রতিবাদ করলে উল্টো স্থানীয়দের হুমকি দিচ্ছেন। আঠারোগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশিদ হাওলাদার বলেন, সড়ক নির্মাণ কাজ আমি ঘুরে দেখেছি, সড়ক নির্মাণে বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে। নিম্নমানের ইটের খোয়া দিয়ে কাজ করছে, দরপত্র মোতাবেক কাজ করছে না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যেভাবে সড়কের কাজ করছেন তিন মাসও সড়ক টিকবে না। তিনি এ সড়কের কাজ তদারকির জন্য বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলাম কাজের অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, সড়কের কাজে বিভিন্ন স্থানে অনিয়ম করেছে। আমি পরিদর্শন করে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। নিম্নমানের কাজে প্রকৌশলীর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে স্থানীয়দের এমন অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন। বরগুনা নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম কবির হোসেন বলেন, এ সড়কের অনিয়মের বিষয়ে আমি জেনেছি। উপজেলা প্রকৌশলীকে পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, কাজের জন্য আনা নিম্নমানের ইট এক সপ্তাহের মধ্যে সরিয়ে নিতে ঠিকাদারকে নির্দেশ দিয়েছি।
×