ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চাঁপাইয়ে আম গাছে মুকুলের সমারোহ

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ৯ মার্চ ২০১৮

চাঁপাইয়ে আম গাছে মুকুলের সমারোহ

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ এবারও আম গাছে গাছে মুকুলের সমারোহ। বিশ্বকপি রবীন্দ্রনাথ, জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম, প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাসসহ প্রায় ২১ বাঙালী কবির প্রতিকৃতি এখন আম গাছের প্রতিটির অভ্যন্তরে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যেও পাওয়া যাবে বাঙালীর আমের মুকুলের গন্ধ। মৌসুম শুরু হতেই গাছে গাছে মুকুল বের হওয়া শুরু হয়েছে। তবে এবার শীতের প্রাধান্য বেশি থাকার কারণে মুকুল আসতে বেশ দেরি হয়েছে। তাই এবার পুরো ফালগুন থাকবে মুকুল ফোটার মৌসুম। তবে ইতোমধ্যেই কৃষকরা বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত। এবার প্রায় ২৫ কোটি টাকার বালাইনাশক ওষুধ ও কেমিক্যাল মজুদ করেছেন চাঁপাই ও রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা। তবে অধিক ফলনের চমক দেয়া কালটনসহ ১১ ধরনের অবৈধ কেমিক্যাল নিয়ে ছুটে এসেছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। যদিও তাদের এসব কেমিক্যালের কোন বৈধ ছাড়পত্র বাংলাদেশ না দিলেও তারা ব্যবসা ফাঁদতে বাংলাদেশে উঁকি ঝুঁকি দেয়া শুরু করেছে। নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে এ ধরনের অবৈধ অধিক ফলনশীল নাম দিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকার কেমিক্যাল সীমান্ত মজুদ করে বাংলাদেশে ঠেলে দেবার চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই মৌসুমে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। যাতে অনুমোদনহীন কেমিক্যাল বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে। এ ধরনের তথাকথিত অধিক ফলনশীল আমের কেমিক্যাল বাংলাদেশে প্রবেশ করলে তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে। আম রফতানিতে ধস নামবে। পাশাপাশি গাছ মরে যাবে। গাছ শুকিয়ে বাগান উজাড় হবে। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন এনজিও ভারতীয় অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলে একাধিক সেমিনার সিম্পোজিয়ামের প্রস্তুতি নিয়েছে। একই ধরনের কর্মসূচী নিয়ে কাজ করছে সরকারের কৃষি বিভাগের একাধিক সংস্থা। ইতোমধ্যেই সরকার এ কর্মসূচী সফল কতে শত কোটির কাছাকাছি বরাদ্দ দিয়েছে বলে জানা গেছে। এ ধরনের কেমিক্যাল মেশানো ফলে রফতানিতে ধস নামবে। বোলে বোলে ভরে গেছে গাছ। তবে এবার শত বর্ষের গাছে মুকুল কম। এক থেকে ৫০ বছরের গাছে অধিক হারে মুকুল এসেছে। তবে কৃষি বিজ্ঞানীরা বলছে শত বছরের গাছের মুকুল আসবে তবে দেরিতে। আম বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বাগান মালিক ও চাষিরা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ অঞ্চলে ২৫ লাখের কাছাকাছি আম গাছ রয়েছে। কয়েক বছর ধরে কৃষক ধানের ভাল দাম পাচ্ছিল না। পাশাপাশি আমের ভাল দাম পাবার কারণে অধিকাংশ কৃষক সম্প্রসারিত করেছে ধানের জমিতে আম বাগান। আর এতে দুই জেলার বরেন্দ্র ও দিয়াড় অঞ্চলে আম চাষের পরিমাণ বেড়ে গেছে। গত বছরের চেয়ে রাজশাহী অঞ্চলে আড়াই হাজার হেক্টর, চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার ৮ হাজার ৫ শ’ ৬০ হেক্টর বেশি জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। সরকারীভাবে বলা হয়েছে গত বছরের চেয়ে এবার চাঁপাই অঞ্চলে সাড়ে তিন হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। পাশাপাশি আম গবেষণাগার হতে বারি ৫, ৬ ও ৭ জাতের আম গাছের চারা বিনামূল্যে সরবরাহ করে কৃষককে পাঁচ বিঘার আমের বাগান করে দিচ্ছে। আড়াই একরের আম বাগান করে দেয়ার ব্যাপারে আম গবেষণাগার এগিয়ে আসার কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জ অঞ্চলে বাড়ছে আমের বাগান।
×