ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চীনা এক্সিম ব্যাংক ৫২০ মিলিয়ন ডলার ছাড় করছে

পায়রা বিদ্যুত কেন্দ্রের ঋণের প্রথম কিস্তি চলতি মাসে

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ৮ মার্চ ২০১৮

 পায়রা বিদ্যুত কেন্দ্রের ঋণের প্রথম কিস্তি চলতি মাসে

রশিদ মামুন ॥ পায়রা বিদ্যুত কেন্দ্রের ঋণের প্রথম কিস্তি চলতি মাসে ছাড় হচ্ছে। কয়লা চালিত বিদ্যুত কেন্দ্রের মধ্যে সব থেকে এগিয়ে থাকা প্রকল্পটির নির্মাণে চীনা এক্সিম ব্যাংক চলতি মাসে ৫২০ মিলিয়ন ডলার ছাড় করছে। সব মিলিয়ে বিদ্যুত কেন্দ্রটি নির্মাণে এক দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে চীন। বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খোরশেদুল আলম এ প্রসঙ্গে জনকণ্ঠকে বলেন, চীনের নববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানের জন্য ঋণ ছাড়ে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা নিশ্চয়তা পত্র পেয়েছি চলতি মাসে আশা করি ঋণের অর্থও হাতে পাওয়া যাবে। এতে বিদ্যুত কেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ আরও গতিশীল হবে বলে জানান তিনি। এখন দেশে তিনটি বড় বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ কাজ চলছে। এই তিন কেন্দ্রের মধ্যে মাতারবাড়ি বিদ্যুত কেন্দ্রর পুরো মালিকানা থাকছে বাংলাদেশের হাতে। জাইকার অর্থায়নে বিদ্যুত কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হচ্ছে। অন্য দুটি বিদ্যুত কেন্দ্রর মধ্যে রামপালে ভারত ও বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে এবং পায়রাতে চীন ও বাংলাদেশের যৌথ মূলধনী কোম্পানি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করছে। এই দুটি বিদ্যুত কেন্দ্রেই বাংলাদেশের সমান অংশীদারিত্ব রয়েছে। বিনিয়োগ প্রকল্পর ক্ষেত্রে ব্যাংক ঋণের অর্থ ছাড় করলে নিয়মানুযায়ী সেই অর্থ আগে বাংলাদেশে আসতে হবে। এরপর সেই অর্থ ঠিকাদারকে দিতে হবে। এতে কিছুটা সময়ক্ষেপণ হলেও বিনিয়োগ প্রকল্পের ক্ষেত্রে এই নীতি মানা হয়। তবে রামপাল বিদ্যুত প্রকল্প এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। রামপাল কেন্দ্র নির্মাণ কাজ করছে ভারত হেবি ইলেক্ট্রিক (ভেল)। ভেলের ক্ষেত্রে ভারতের এক্সিম ব্যাংক সরাসরি ভেলকে নির্মাণ কাজের অর্থ দিয়ে পরিশোধ করছে। এক্ষেত্রে ভবিষ্যতে প্রকল্পটি প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে। সূত্র জানায়, আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির বিদ্যুত কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আসবে আগামী ২০১৯ সালের জুন মাসে আর দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে আসবে একই বছর ডিসেম্বরে। বিদ্যুত কেন্দ্রর ইউনিট প্রতি উৎপাদন ব্যয় হবে ছয় টাকা ৬৫ পয়সা। চীন, অস্ট্রেলিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে বিদ্যুত কেন্দ্রটির জন্য কয়লা আমদানি করা হবে। কেন্দ্রের কয়লা সরবরাহের জন্য ইতোমধ্যে অস্ট্রেলিয়ার একটি কোম্পানির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে বিসিপিসিএল। বিদ্যুত কেন্দ্রের ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ের দিকে রয়েছে। চলতি বছর মাঝামাঝি সময় থেকে বিদ্যুত কেন্দ্রের মূল যন্ত্রাংশ সংযোজন শুরু হবে। আগামী বছর জুনের মধ্যেই প্রথম ইউনিটের নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, বিদ্যুত কেন্দ্রটির সঞ্চালন লাইন নির্মাণে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি পিজিসিবি কিছুটা পিছিয়ে ছিল। আগামী বছর বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের আগেই তাদের সঞ্চালন লাইন নির্মাণ শেষ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিদ্যুত কেন্দ্রটির সমান অংশীদারিত্ব রয়েছে দেশীয় কোম্পানি নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানি (এনডব্লিউপিজিসিএল) এবং চীনা কোম্পানি চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট এ্যান্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশন (সিএমসি) বিদ্যুত কেন্দ্রের সমান অংশীদার। কেন্দ্র নির্মাণে ২০ ভাগ অর্থ দুই রাষ্ট্রীয় কোম্পানি বিনিয়োগ করছে বাকি ৮০ ভাগ ঋণ দিচ্ছে চায়না এক্সিম ব্যাংক। বিদ্যুত কেন্দ্রটির দরপত্রেই ঠিকাদারকে ঋণ সংস্থানের আগে ১৫ ভাগ অর্থ খরচ করার শর্ত দেয়া হয়েছিল। অর্থাৎ এখন ৩৫ ভাগ অর্থের কাজ চলছে। বিদ্যুত কেন্দ্রের ভৌত অবকাঠামো নির্মাণে সাধারণত ৩০ ভাগ অর্থের বেশি খরচ হয় না। বাকি অর্থ বিদ্যুত কেন্দ্রের যন্ত্রাংশ আমদানিতে ব্যয় করা হয়। বিদ্যুত কেন্দ্রের যন্ত্রাংশ আমদানির প্রক্রিয়া এর মধ্যে শেষ করা হয়েছে।
×