ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাউফলে আ স ম ফিরোজকে হত্যাচেষ্টা, সশস্ত্র যুবক গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৫:১১, ৮ মার্চ ২০১৮

বাউফলে আ স ম ফিরোজকে হত্যাচেষ্টা, সশস্ত্র যুবক গ্রেফতার

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ৭ মার্চ ॥ জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ ও বাউফলের এমপি আসম ফিরোজকে হত্যা চেষ্টার সময় ধারালো অস্ত্রসহ আবুল বাশার রনি (৩০) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বাবার নাম জাহাঙ্গীর হোসেন। তার বাড়ি পৌর শহরের ৮নং ওয়ার্ডের বাংলা বাজার এলাকায় । আজ বিকেল সোয়া তিনটার সময় উপজেলা পরিষদের হল রুমে এ ঘটনা ঘটেছে। চীফ হুইপের গানম্যান এএসআই মহাসিন জানান, বিকেল ৩টার দিকে উপজেলা পরিষদের হল রুমে শিক্ষা কমিটির এক সভা শুরু হয়। মাননীয় চীফ হুইপ ও শিক্ষা কমিটির উপদেষ্টা আসম ফিরোজ ওই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন। সভা শুরু হওয়ার পনের মিনিটের মধ্যে হালকা পাতলা গড়নের জিন্স প্যান্ট ও ছাই রংয়ের টি-শার্ট পড়া এক যুবক হল রুমের উত্তর পাশের দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে এবং টি-শার্টের পিছনে গুজে রাখা একটি দেড়-দুই ফুট লম্বা ধারালো দা (গাছ কাটা দা) বের করে চীফ হুইপের ওপর হামলার চেষ্টা চালায়। এ সময় তার প্রোটকলের দায়িত্বে থাকা পটুয়াখালী পুলিশ লাইনের এসআই আলতাফ হোসেন ও ডিএসবির এসআই হারুন অর রশিদ তাকে জাপটে ধরেন। প্রতক্ষ্যদর্শী কয়েক ব্যক্তি জানান, ঘটনার আগে একটি মোটরসাইকেলে করে ওই যুবককে পরিষদের মূল ভবনের কাছে এক ব্যক্তি নামিয়ে দিয়ে যায়। বাউফল থানার ওসি মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, ধৃত ওই যুবকের কাছ থেকে তিনটি পাচ শ’ টাকা ও পাঁচটি এক শ’ টাকার নোট ও একটি মোবাইল ফোন এবং এক পোটলা গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হবে। এ বিষয়ে চীফ হুইপ আসম ফিরোজ বলেন, একটি মহল পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যার উদ্দেশে ওই যুবককে পাঠিয়েছেন। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মজিবুর রহমানকে ইঙ্গিত করে বলেন, শিক্ষা কমিটির সভায় তার সভাপতিত্ব করা কথা থাকলেও তিনি রহস্যজনক কারণে অনুপস্থিত ছিলেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, সম্প্রতি বাউফল থানা কমপ্লেক্স চত্বরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আসাদুজ্জামান খানের সুধী সমাবেশে হামলা, ভাংচুর এবং বাউফল ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সভা বানচালের উদ্দেশে যারা তার ছেলে রায়হান সাকিবের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিলেন। তার ওপর এ হামলার চেষ্টা একই সূত্রে গাঁথা। এদিকে চীফ হুইপ আসম ফিরোজকে হত্যা চেষ্টার পেছনের ও পর্দার অন্তরালের ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদার। তিনি বলেন, প্রকাশ্যে একটি সভায় এ ধরনের ঘটনা শুধু নিন্দনীয়ই নয়, ধিক্কৃতও বটে। কতিপয় বিশেষ ব্যক্তিদের পরিকল্পনা ছাড়া এ ঘটনা ঘটতে পারে না। যারা চীফ হুইপকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিয়ে এ পরিকল্পনা করেছেন তাদের জনগণ কোন দিন ক্ষমা করবে না। জামায়াত-বিএনপি থেকে অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে নিয়ে ওই বিশেষ মহলটি বাউফলে অরাজকতা সৃষ্টি করতে চায়। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের প্রতিহত করা হবে। এ ঘটনার পর অনুসন্ধান চালিয়ে জানা গেছে, ধৃত যুবক আবুল বশার রনি একজন মাদকাশক্ত ও চিহ্নিত সন্ত্রাসী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। এলাকায় তিনি মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কয়েক মাস আগে রনিকে তার বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন মাদকসহ পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ৬ মাসের কারাদন্ড দিয়ে জেলখানায় পাঠায়। তার বাবা বিএনপির সমর্থক হিসেবে পরিচিত হলেও ছেলে অত্যাচারে তিনি ছিলেন অতিষ্ট। উপরোক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে চীফ হুইপ তার কালাইয়ার বাসভবনে রাত ৮টার দিকে এক জরুরী সংবাদ সম্মেলন করেন। সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদার, সাংগঠনিক সম্পাদক ইবরাহিম ফারুক, জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক চীফ হুইপ তনয় রায়হান সাকিব ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক জহিরুল ইসলাম শাহিন প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে চীফ হুইপ আসম ফিরোজ ঘটনাস্থলে পুলিশের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন।
×