ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতকে হারিয়ে শুরু চায় বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ৮ মার্চ ২০১৮

ভারতকে হারিয়ে শুরু চায় বাংলাদেশ

মিথুন আশরাফ ॥ নিদাহাস ট্রফির দলে নেই বাংলাদেশ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। আঙ্গুলের চোট সেরে না ওঠায় দল থেকে সাকিবকে বাদ দেয়া হয়েছে। এরপরও দলকে অনুপ্রাণিত করতে শ্রীলঙ্কায় গেছেন সাকিব। দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। সাকিবের উপস্থিতি এখন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের অনুপ্রাণিত করলেই হলো। এই অনুপ্রেরণা নিয়ে মাঠে নেমে ভারতকে আজ হারিয়ে দিতে পারলেই হলো। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে রাত সাড়ে সাতটায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার যে ম্যাচটি শুরু হবে, তাতে বাংলাদেশ জিতে গেলেই শুভ সূচনা হয়ে গেল। তাহলেই তো টানা দুই ম্যাচ হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ার সম্ভাবনায় পড়ে যাবে ভারত। পারবে বাংলাদেশ টুর্নামেন্টে শুভ সূচনা করতে? টুর্নামেন্টে দুই দলের মিশন শুরু হয়ে গেছে। ভারত ও স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা মঙ্গলবারই মিশন শুরু করেছে। টুর্নামেন্টে ভারতকে প্রথম ম্যাচেই হারিয়ে দিয়ে শুভ সূচনাও করেছে শ্রীলঙ্কা। ভারতের শুরু হয়েছে হার দিয়ে। আজ ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের মিশন শুরু হচ্ছে। আশা একটাই, শুভ সূচনা যেন বাংলাদেশও করতে পারে। কিন্তু সেই আশা কী পূরণ হবে? টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে হারলেও সেরা দল ভারতই। ফেবারিট দল তারা। র‌্যাঙ্কিংয়ে যেমন বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে। ভারত তিন নম্বরে ও বাংলাদেশ দশ নম্বরে। তেমনি টি২০’র শক্তিমত্তাতেও ভারতের ধারে কাছে নেই বাংলাদেশ। ভারত যেখানে ৯৪টি টি২০ খেলে ৫৭টিতে জিতেছে। জয়-পরাজয়ের হার ৬২ শতাংশ। সেখানে বাংলাদেশ ৭১টি টি২০ ম্যাচ খেলে ২১টিতে জিততে পেরেছে। জয়-পরাজয়ের হার ৩০ শতাংশ। সর্বশেষ ১০ ম্যাচের হিসেব কষলে তো বাংলাদেশ বহুগুণ পিছিয়ে। ভারত যেখানে সর্বশেষ ১০ টি২০ ম্যাচের মধ্যে ৭টি ম্যাচেই জিতেছে। সেখানে বাংলাদেশ জিতেছে মাত্র ১টি ম্যাচে। তবে বাংলাদেশের সেই জয়ী ম্যাচটিই ছিল কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে। গত বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিতেছিল। ভারতের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের পাঁচটিতে হারলেও গত বছর যে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রেমাদাসায় ম্যাচটি জিতেছে, সেটি বাংলাদেশকে প্রেরণা দিচ্ছে। সাকিবের উপস্থিত হয়ে প্রেরণা দেয়া এবং সর্বশেষ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটিতে জেতা, বাংলাদেশকে আত্মবিশ্বাস জুগাচ্ছে। আবার টুর্নামেন্ট শুরুর আগে প্রস্তুতি ম্যাচেও বাংলাদেশ দল ভাল করেছে। তাতে দেশের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজ জিততে না পারা, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট ও টি২০ সিরিজ হারলেও ক্রিকেটারদের মনোবল এখন চাঙ্গাই আছে। এই চাঙ্গা মনোবল নিয়ে এখন ভারতকে হারিয়ে দিতে পারলেই হলো। তাহলেই টুর্নামেন্টে শুভ সূচনা হয়ে যায়। আর যে কোন দল টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচে জিতলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস কুড়িয়ে পায়। এই ম্যাচটিতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে লড়াই হওয়ার সঙ্গে যেন ক্রিকেটারদের মধ্যেও একটি লড়াই দেখা যাবে। ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, লিটন কুমার দাস, মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ যেখানে নিজেদের মেলে ধরতে চেষ্টা করবেন। সেখানে ভারতের রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, সুরেশ রায়না, মানীষ পা-ে, ঋষভ পন্থ, দিনেশ কার্তিকরা জয়ের ক্ষুধায় হন্যে হয়ে আছেন। প্রথম ম্যাচ হারায় এখন যেভাবেই হোক দ্বিতীয় ম্যাচে ভারত ব্যাটসম্যানরা আরও আক্রমণাত্মক হয়ে খেলার দিকেই মনোযোগী হবেন। উইকেট ফ্ল্যাট। ব্যাটসম্যানদের জন্য সুবিধাই বেশি। তবে পেসারদেরও সুযোগ থাকছে। তাতে করে বাংলাদেশের মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ ও রুবেল হোসেনদের দিকেই বিশেষ নজর থাকছে। তারা প্রস্তুতি ম্যাচে ছন্দ ফিরে পেয়ে তা কাজে লাগাতেও প্রস্তুত। ভারতের জয়দেব উনারকাড়, শারদুল ঠাকুর, বিজয় শঙ্কররাও প্রথম ম্যাচে নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। তাই দল হেরেছে। এবার বাংলাদেশের বিপক্ষে কিছু করে দেখাতে চান। দুই দলের ব্যাটসম্যান-বোলাররাই নিজেদের তুলে ধরতে চান। এখন দেখা যাক, কারা সফল হন। টি২০ এমন খেলা। ছোট্ট দল, বড় দলের মধ্যে খুব পার্থক্য থাকে না। দিনটিতে যে দল, যে দলের এক দুইজন ক্রিকেটার ছন্দে থাকেন; জয় তাদের হাতেই ধরা দেয়। ভারতকে আজ হারিয়ে এখন টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের শুভ সূচনা হলেই হয়।
×