ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে যাওয়ার আহ্বান সিপিবির

প্রকাশিত: ০৮:৪৭, ৭ মার্চ ২০১৮

সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে যাওয়ার আহ্বান সিপিবির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘সাম্প্রদায়িকতা, সাম্রাজ্যবাদ, লুটপাটতন্ত্র, গণতন্ত্রহীনতা নিপাত যাক’Ñস্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করল। এ উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে দেশের বিশিষ্টজনরা সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনসহ গণতন্ত্রের শাসন প্রতিষ্ঠায় কমিউনিস্ট পার্টির ভূমিকা অক্ষুণœ রাখার আহ্বান জানান। তারা বলেন, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গীবাদ দেশের সবচেয়ে বড় শত্রু। সকল প্রগতিশীল ও দেশপ্রেমিক মানুষের ঐক্য এই বিপদ থেকে দেশবাসীকে রক্ষা করতে পারে বলেও মনে করেন তারা। পাশাপাশি সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানেরও তাগিদ দেন রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী,সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, লেখকসহ বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধিরা। সিপিবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার রাজধানীর বিএমএ মিলনায়তনে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে দলের নেতৃবৃন্দসহ বিশিষ্ট নাগরিকরা অংশ নেন। বক্তারা বলেন, সাম্প্রদায়িকতা আজ যেকোন সময়ের রেকর্ড ভেঙ্গেছে। মাদ্রাসা শিক্ষাকে চালু রেখে এবং সংবিধানে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করার বিধান রেখে কখনই সাম্প্রদায়িকতা রুখে দেয়া যায় না। শিক্ষক হুমায়ূন আজাদ থেকে শুরু করে জাফর ইকবাল সবই সাম্প্রদায়িক রাজনীতির পৃষ্ঠপোষকতার ফসল। সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসনে রোহিঙ্গাসহ বিভিন্ন ঘটনা ঘটছে। দেশ আরও গভীর সঙ্কটে পড়তে যাচ্ছে। ব্যাংকে চলছে হরিলুট। হাজার হাজার কোটি টাকা অবাধে লুট হচ্ছে। আর এই লুটপাটে সহায়তা করছে খোদ সরকার। কোটি কোটি ডলার পাচার হচ্ছে এবং বিদেশে সেকেন্ড হোম গড়ে তুলছে এই লুটপাটকারীরা। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হলে এখনই এদের থামাতে হবে। গণতন্ত্র হুমকির মুখে এমন মন্তব্য করে অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মানুষকে কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না। রাজনৈতিক কর্মকা-ে বাধা দেয়া হচ্ছে। সন্ত্রাসী-লুটপাটকারীরা সরকারী দলের ছত্রছায়ায় থেকে সরকারকে ক্ষমতায় রাখছে আর সেই সুযোগে নিজেদের আখের গোছাচ্ছে। এই রকম বাংলাদেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। কোনভাবেই এই অবস্থা মেনে নেয়া যায় না। নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ৭০ বছর ধরে মানুষের অধিকার আদায়ে কমিউনিস্ট পার্টি জনতার সঙ্গে ছিল এখনও আছে এবং আগামী দিনেও লড়াইয়ের সামনে থাকবে। নিপীড়ন-নির্যাতন সহ্য করে কমিউনিস্টরা মানুষের মুক্তির কথা বলেছে। ব্রিটিশ বলি আর পাকিস্তান স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ যখনই অন্যায় হয়েছে, শোষণ হয়েছে কমিউনিস্টরা প্রতিবাদ করেছে। সামনেই নির্বাচন কমিউনিস্টরা এবারও কাস্তে মার্কা নিয়ে নির্বাচনে যাবে। জনতার সমর্থনে কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় আসতে চায়। যদিও অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন আজ সুদূর পরাহত। পেশিশক্তি ও কালো টাকার নির্বাচনে জনগণের প্রাণ আজ ওষ্ঠাগত। এবারে জোর সংগ্রাম করতে হবে, এবারের সংগ্রাম হবে শোষণ থেকে মানুষের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম হবে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নসাধ বাস্তবায়নের সংগ্রাম। যুগে যুগে কালে কালে মানুষের জয় হয়েছে। সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের সভাপতিত্বে উক্ত সভায় আলোচনা করেন অর্থনীতিবিদ ড. রেহমান সোবহান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী, বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহ আলম প্রমুখ। এদিকে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সূত্রাপুরে লাল পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং লাল পতাকা মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। পার্টির পতাকা উত্তোলন করেন সিপিবি সূত্রাপুর থানার সভাপতি আবু তাহের বকুল। পতাকা উত্তোলনের পর আবু তাহের বকুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাকা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল হক রুবেল, থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিকাশ সাহা, জাহিদ হোসেন খান ও সাইফুল ইসলাম সমীর।
×