ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের সংগ্রাম করেই ফিরতে হবে ॥ মুহিত

প্রকাশিত: ০৮:২০, ৭ মার্চ ২০১৮

রোহিঙ্গাদের সংগ্রাম করেই ফিরতে হবে ॥ মুহিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেছেন, মিয়ানমার সরকার একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিলেও রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়নি। তাদের ফিরতে হলে সংগ্রাম করেই ফিরতে হবে। ফেরানোর একমাত্র উপায় হচ্ছে রাখাইন রাজ্য থেকে মগদের বিদায় করতে হবে। এ জন্য আন্তর্জাতিক রুল প্রয়োজন। মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে ব্রিটিশ এমপি স্টেফেন টুইগের নেতৃত্বে যুক্তরাজ্যের ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ডিএফআইডি) ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠকে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের পাশের থাকার এবং অর্থ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে কি পরিমাণ দেবে সেটা জানায়নি বলে জানান অর্থমন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার সরকার এক্ষেত্রে বাজে আচরণ করছে। এর অর্থ হলো রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগ্রাম করে মগমুক্ত বার্মা গঠন করে সেখানে ফেরত যেতে হবে। মগমুক্ত বার্মা গঠনে তো অর্থ লাগবে, আন্তর্জাতিক সপোর্ট লাগবে। এ জন্য আমরা বিশ্বকে বুঝাচ্ছি আমাদের ওপর বার্ডেন হয়েছে। এরাতো মানুষ আমরা কি করব। এর রেসপন্স খুব ভাল। এই লাইনেই চলতে হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, ১৯৬৭ সাল থেকে রোহিঙ্গা সমস্যা শুরু হয়েছে। ১৯৯০ সালে তাদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ৩ লাখ। ভাসানচর প্রকল্পটি চিন্তা করা হয় ওই তিন লাখের জন্য। ভাসানচর জেগে উঠার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে কথা বলেছিলেন। তখন একটা ধারণা করা হয়েছিল ওইসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পার্মানেন্ট হয়ে গিয়েছে। তাদের জন্য একটা কিছু করা দরকার। অর্থমন্ত্রী জানান, ১০ লাখ রোহিঙ্গা দেখভাল করার সক্ষমতা আমাদের নেই। আগের রোহিঙ্গাদের জন্য ভাসান চরকে স্থায়ীভাবেই তৈরি করা হচ্ছে। নতুনদেরও কিছু নিতে হবে। কারণ তারাই তো বেশি কষ্টে আছে। মুহিত বলেন, নতুনভাবে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গার খুব কম সংখ্যক মিয়ানমার ফিরে যাবে। প্রথমত বার্মা নিবে কম। দুই এরা আবার গিয়ে নির্যাতিত হবে এই ভয়ে এরা যেতে আগ্রহী হচ্ছে না। সুতরাং এদের দায়িত্ব আমাদের ওপরই পড়েছে। এদের পুনর্বাসনের জন্য প্রচুর পরিমাণে আন্তর্জাতিক সহায়তারও দরকার রয়েছে। এদের ঘরবাড়ি তৈরি করে দেয়ার মতো তো সামর্থ্য আমাদের নেই। ভাসানচরে স্থায়ী ব্যবস্থা তাদের ফেরত অনিশ্চয়তায় পড়বে কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, কোন রোহিঙ্গা যাচ্ছে? যাবে? এ সময় তিনি দাবি করেন- এদের পাঠানোর বিষয়ে কূটনৈতিক ভাবেও কোন ব্যর্থতা নেই। চীন আর রাশিয়া ছাড়া অন্যান্য দেশে আমাদের পক্ষে রয়েছে। আগামী বাজেটে রোহিঙ্গাদের জন্য অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী বাজের রোহিঙ্গাদের জন্য আলাদা বরাদ্দ রাখা হবে। বর্তমান বাজেটেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নামে বরাদ্দ রয়েছে। আগামী বাজেটে এ বরাদ্দের পরিমাণ আরো বড় হবে। এতদিন বরাদ্দ রাখা হতো ৩ লাখের জন্য। এখন বরাদ্দ রাখতে হবে ১০ লাখের জন্য।
×