ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা প্রাণ ফিরে পাচ্ছে ॥ আনা হয়েছে ৬ জেব্রা

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ৭ মার্চ ২০১৮

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা প্রাণ ফিরে পাচ্ছে ॥ আনা হয়েছে ৬ জেব্রা

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামের একটিমাত্র অবহেলিত চিড়িয়াখানা আস্তে আস্তে প্রাণ ফিরে পেতে শুরু করেছে। অতীতে যা ছিল শূন্য খাঁচায় আর প্রাণ যায় যায় প্রাণীর অবস্থানে পরিপূর্ণ একটি খোঁয়াড়ের মতো আঙ্গিনা। সেই দিনের পরিবর্তন করতে গিয়ে প্রশাসনের এক জনের ভূমিকাকে দেখছেন সচেতনরা। পুরনো খাঁচা পরিপূর্ণ হয়ে এখন চিড়িয়াখানায় নতুনের সমারোহ। আবার শিশুদের আকর্ষণ কাড়তে কিডস কর্ণার যেমন রয়েছে তেমনি আগতদের খোলামেলা পরিবেশে পদচারণায় গড়ে তোলা হয়েছে পুরো আঙ্গিনা। সিংহ-সিংহীর বিয়ের মতো অবাক হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে এই দার্শনিক স্থানে। এবার আসল দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ৪৮ লাখ টাকায় ছয় জেব্রা। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী কমিটির সদস্যসচিব ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ রুহুল আমীন জানিয়েছেন, আমরা এই চিড়িয়াখানার প্রায় ৯০ ভাগ অবকাঠামোগত পরিবর্তন করেছি। চিড়িয়াখানাটিকে দর্শকদের কাছে তুলে ধরবো। পাখির অভয়ারণ্য গড়ে তোলার পাশাপাশি আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা দরকার। চিড়িয়াখানার পক্ষ থেকে জানা গেছে, ১৯৮৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক এম এ মান্নানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ফয়’স লেক এলাকায় গড়ে উঠে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। বর্তমানে প্রায় ৫৫ প্রজাতির পশুপাখি রয়েছে এই চিড়িয়াখানায়। প্রতিমাসেই এখন দর্শনার্থী লাখ ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তবে মাত্র ২০ সদস্যের জনবল দিয়ে এই আঙ্গিনা চলছে। গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার ১০০ দর্শনার্থীর আগমন ঘটছে এই চিড়িয়াখানায়। তবে ছুটির দিনে দর্শনার্থীর সংখ্যা তিন গুণেরও বেশি হয়। জনপ্রতি মাত্র ৩০ টাকা নেয়া হচ্ছে পরিদর্শনের জন্য। এদিকে, দর্শনার্থী আরও বাড়াতে সোমবার ৬ জেব্রা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে বিমানযোগে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে। এরমধ্যে ৪টি পুরুষ ও ২টি মহিলা। এসব জেব্রার আমদানিকারক ফ্যালকন ট্রেডার্স। মঙ্গলবার দুপুরে এক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে এগুলো চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। এর আগে দুটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার আমদানি করা হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এ দুটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার আনা হয়। আগতরা বলেছেন, চট্টগ্রাম নগরীতে জেলা প্রশাসনের পরিচালনায় একটি মাত্র চিড়িয়াখানা হলেও ঢাকাস্থ চিড়িয়াখানা থেকে অনেক ভাল ও পরিবেশ সম্মত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে অবয়বে গড়া চিড়িয়াখানাটি ক্রমশ আগতদের মন জয় করে সরকারের আয়বর্ধক প্রকল্পে পরিণত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে ফয়স’ লেককে বেসরকারী খাতে লিজ দেয়ায় প্রকৃতির ছোঁয়া হারাচ্ছে এই আঙ্গিনা। আবার এই লেকে চিরসুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার সৌভাগ্য হারিয়েছে দর্শনার্থীরা। কারন দর্শনার্থীদের অর্থ ক্ষমতার মধ্যে নেই লেকে প্রবেশাধিকার। জনপ্রতি ২৫০ টাকা থেকে সাড়ে ৪শ’ টাকা পর্যন্ত নেয়ার রেকর্ড রয়েছে কনকর্ড এমিউজমেন্ট পার্ক কর্তৃপক্ষের।
×