ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পিএসসিতে পরীক্ষা নিয়ে বিতর্কের সুযোগ নেই ॥ চেয়ারম্যান

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৬ মার্চ ২০১৮

পিএসসিতে পরীক্ষা নিয়ে বিতর্কের সুযোগ নেই ॥ চেয়ারম্যান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ৩৮তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল পুনর্মূল্যায়নের কোন সুযোগ নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে সরকারী কর্মকমিশন (পিএসসি)। ‘একাধিকবার ফল প্রকাশ করা হয়েছে’- এমন একটি গুজবে বিভ্রান্ত হয়ে অনুত্তীর্ন কিছু প্রার্থীর তোলা দাবির প্রেক্ষাপটে সোমবার পিএসসি চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেছেন, পিএসসি’র সব পরীক্ষা ও ফল এখন হয় ১০০ ভাগ স্বচ্ছ। বিতর্কের কোন অবকাশ নেই। এদিকে ৩৬ বিসিএসের নন-ক্যাডার নিয়োগসহ ৩৭, ৩৯ ও ৪০ বিসিএস পরীক্ষা ও ফল প্রকাশের টার্গেট নির্ধারণ করেছে কমিশন। চলতি মাসেই হবে ৩৭ বিসিএসের চূড়ান্ত ফল। সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পিএসসি চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক ৩৮ বিসিএসের কিছু প্রার্থী ফল পুনর্মূল্যায়নের দাবির বিষয়ে বলেছেন, আসলে পিএসসিতে পরীক্ষা নিয়ে বিতর্কের কোন সুযোগ নেই। কেউ প্রমাণ দিয়ে বলতে পারবে না এখন পিএসসিতে নিয়োগে কোন অনিয়ম হয়। কোন পরীক্ষাতেই কেউ বলতে পারবে না। কমিশনের আমাদের বহু কর্মকর্তা আছেন যাদের সন্তানরাও পরীক্ষায় পাস করেননি। সুতরাং অযথা বিতর্ক তোলার মানে নেই। আর একটা প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশ নেয়া লাখ লাখ প্রার্থীর ফল যদি আমাকে পুনর্মূল্যায়ণ করতে হয় তাহলে বছরের পর বছরেও কোন পরীক্ষা ও রেজাল্ট দেয়া সম্ভব হবে না। আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ফলাফল তৈরি করেছি। তাই এই পরীক্ষার ফল পুনর্মূল্যায়ন হবে না। এভাবে পুনর্মূল্যায়ন করতে থাকলে একেকটি বিসিএস পরীক্ষার প্রক্রিয়া শেষ হতে ৫ থেকে ১০ বছর লেগে যাবে। জানা গেছে, গেল ২৮ তারিখে ৩৮ বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি বিশেষ গ্রুপ সঙ্কট তৈরির আশায় অপপ্রচার শুরু করে, ‘সঠিকভাবে ফল প্রকাশ হয়নি’ কিংবা বলা হয়,’ ‘একবার ফল প্রকাশ করে স্থগিত করে আবার প্রকাশ করা হয়েছে’। সরকার ও পিএসসির ভাবমূর্তী ক্ষুণেœর এ তৎপরতায় কমিশনে কর্মরত একটি বিশেষ গ্রুপও সক্রিয় বলে মনে করা হচ্ছে। কমিশনের একাধিক সদস্য জানালেন, কিছু প্রার্থীর তোলা অভিযোগের বিষয়টি গণমাধ্যমে তারা দেখেছেন। যারা পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কর্মকর্তারা বলেছেন, এবারের বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হননি খোদ চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিকের সন্তানও। পরীক্ষা অস্বচ্ছ বলে যদি কেউ ভেবে থাকেন তাদের এসব বিষয় নিয়ে চিন্তা করা প্রয়োজন বলেও মনে করেন কর্মকর্তারা। গেল ২৮ ফেব্রুয়ারি ৩৮তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে পিএসসি। এবারের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ১৬ হাজার ২৮৬ জন। বিসিএসের আবেদনের ক্ষেত্রে ৩৮তম বিসিএসে রেকর্ড সৃষ্টি হয়। এতে ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৪৬৮ জন প্রার্থী আবেদন করেন। তবে এবারের বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগ পাবেন ২ হাজার ২৪ জন ক্যাডার কর্মকর্তা। প্রশাসন ক্যাডারে যুক্ত হবেন ৩০০ জন, পুলিশ ক্যাডারের ১০০ জন। এছাড়াও সাধারণ ক্যাডারে ৫২০ জন, কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডারে ৫৪৯ জন এবং শিক্ষা ক্যাডারে যাবেন ৯৫৫ জন। এদিকে চলতি মাসেই ৩৬তম বিসিএসে ক্যাডার পদ পেতে ব্যর্থ হওয়া নন-ক্যাডার প্রার্থীদের নিয়োগের সুপারিশ প্রদানের লক্ষ্যে শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে। চেয়ারম্যান ড. সাদিক বলেছেন, আশা করছি এবার বেশিরভাগ প্রার্থীই প্রথম নয়তো দ্বিতীয় শ্রেণীর নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুযোগ পাবেন। কমিশনের এ সদস্য জানিয়েছেন, এ মুহূর্তে বেশ কিছু বিসিএস ছাড়াও নন-ক্যাডার পদের একাধিক নিয়োগ নিয়ে কাজ করছে পিএসসি। চলতি মাসেই ৩ তম বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশের লক্ষ্যে কাজ চলছে জানিয়ে কর্মকর্তারা বলেছেন, এ মাসেই ফল প্রকাশ করা হবে। ৩৭ বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগের সুপারিশ প্রাপ্ত হবেন এক হাজার ২২৬ জন। এছাড়া, ৩৯ ও ৪০ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি ৩৭ বিসিএসের ফল প্রকাশের পরপরই দেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। বলেছেন, চলতি মাসে ৩৭ বিসিএসের ফল প্রকাশের পর প্রথমে ৩৯ ও পরপরই ৪০ বিসিএসের কাজ শুরু করতে চায় কমিশন। জানা গেছে, ৩৯ বিসিএস হতে পারে বিশেষ বিসিএস। ৩৯তম বিশেষ বিসিএসে মূলত চিকিৎসক নেয়া হবে। সহকারী সার্জন ও সহকারী ডেন্টাল সার্জন নেয়া হবে। তবে ৪০ বিসিএস হবে নিয়মিত বিসিএস পরীক্ষা। এসএসসির ফল প্রকাশ ২৮ থেকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে ॥ এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল আগামী ২৮ থেকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে প্রকাশ করা হবে। এই সময়ের যেকোন একদিন ফল প্রকাশের তারিখ নির্ধারণ করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রস্তাব পাঠাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। রেওয়াজ অনুযায়ী ফল প্রকাশের দিন শিক্ষামন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের সচিব সব বোর্ডের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে নিয়ে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফলাফলের সার-সংক্ষেপ তুলে দেয়ার পর শিক্ষামন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করেন। এবারের এসএসসি পরীক্ষা ১ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়। তত্ত্বীয় পরীক্ষা ২৫ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। পরীক্ষায় ২০ লাখ ৩১ হাজার ৮৯৯ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ছাত্র ১০ লাখ ২৩ হাজার ২১২ এবং ছাত্রী ১০ লাখ আট হাজার ৬৮৭ জন। এবার ১০টি বোর্ডের তিন হাজার ৪১২টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
×