ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অবকাঠামো নির্মাণে ধীরগতি ’২১ সালের টার্গেট পূরণ সম্ভব হবে না

আইসিটি পার্কে বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছে দেশী-বিদেশী উদ্যোক্তারা

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ৫ মার্চ ২০১৮

আইসিটি পার্কে বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছে দেশী-বিদেশী উদ্যোক্তারা

ফিরোজ মান্না ॥ আইসিটি পার্কের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ কাজে ধীর গতির কারণে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। বিদেশী প্রতিষ্ঠান তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প স্থাপন না করলে দেশে বিশ্বমানের তথ্যপ্রযুক্তিবিদও গড়ে উঠবে না। এ কারণে ২০২১ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের টার্গেট পূরণ করতে পারবে না সরকার। যদিও প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাগিদ দিয়ে যাচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের তাগিদেও কোন লাভ হচ্ছে না। অন্যদিকে, বেশ কয়েকটি আইসিটি পার্কের অংশবিশেষ পিপিপির (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ) আওতায় করতে গিয়েও ভাল ফল পাওয়া যাচ্ছে না। কয়েকটি জেলায় দীর্ঘদিন ধরে আইসিটি পার্ক নির্মাণ কাজ চলছে। হাতে নেয়া প্রকল্পগুলো গত বছরই শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে প্রকল্পের মেয়াদ দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে। এতে যেমন প্রকল্পের খরচ বাড়ছে-তেমনি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার বিষয়টিও পিছিয়ে যাচ্ছে। সূত্র জানিয়েছে, গাজীপুর হাইটেক পার্ক, সিলেটে ইলেকট্রনিক সিটি, মহাখালীতে আইটি ভিলেজ, রাজশাহী আইটি ভিলেজ, জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, যশোর সফটওয়্যার পার্ক, নাটোর ফ্রিল্যান্সার ইনস্টিটিউট ও বিভাগীয় পর্যায়ে আইটি ভিলেজ। এর মধ্যে কয়েকটি প্রকল্পে কাজের অগ্রগতি উল্লেখ করার মতো। বাকি প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি খুব একটা নেই বললেই চলে। তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ জানিয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দক্ষ জনবল গড়ে তোলার জন্য গাজীপুরে হাইটেক পার্ক শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় হাইটেক বা আইসিটি পার্ক স্থাপন, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার জন্য সময়পযোগী কার্যক্রম হাতে নেয়া হয় কয়েক বছর আগে। কিন্তু প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে গতিহীনতার কারণে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হচ্ছে না। বর্তমানে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ১৬২ দশমিক ৮৩ একর জমির ওপর ইলেকট্রনিক সিটি স্থাপন করা হবে। ঢাকার মহাখালীতে ৪৭ একর জমির ওপর প্রস্তাবিত আইটি ভিলেজ নির্মাণের জন্য এখনও ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হয়নি। রাজশাহীতে ৩৪ দশমিক ৫৬৩১ একর জমিতে আইটি ভিলেজ স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। রাজধানীর কাওরান বাজার এলাকায় জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক পুরোপুরি চালু হয়নি। একমাত্র যশোরে সফটওয়্যার পার্কের ডরমেটরি বিল্ডিং ও এমটিবি ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কটি ১৫তলা ভবন বিশিষ্ট হবে। নাটোরে ফ্রিল্যান্সার ইনস্টিটিউট স্থাপনের জন্য এক দশমিক ২৩৯৩ একর জমি এবং নাটোর আইটি ভিলেজ স্থাপনের কাজ শুরুই হয়নি। এলাকাভিত্তিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য প্রতিটি বিভাগীয় শহরে একটি করে টেকনোলজি পার্ক বা আইটি ভিলেজ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব প্রকল্পের গুলোতে কনসালটেন্ট নিয়োগও করেছে মন্ত্রণালয়। সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন কাজে হাত দেয়া হবে। অনেক প্রকল্প ২০১৮ সালের আগে শেষ হবে না। তবে বিসিএসআইআর এর ডাটাবেজ প্রস্তুত এবং তথ্যপ্রযুক্তি স্বয়ংক্রিয়করণ শীর্ষক কর্মসসূচীর আওতায় বৈজ্ঞানিক ডাটাবেজ, মানব সম্পদ ডাটাবেজ, ফিন্যান্সিয়াল ডাটাবেজ, লাইব্রেরি ডাটাবেজ ও মেডিক্যাল ডাটাবেজের জন্য সফটওয়্যার তৈরি করা হচ্ছে। এখন সারাদেশে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই সেবাগুলো মানুষের হাতে পৌঁছে দেয়া হবে।
×