ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শিরোপাস্বপ্নে শ্রীলঙ্কায় মাহমুদুল্লাহবাহিনী

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ৫ মার্চ ২০১৮

শিরোপাস্বপ্নে শ্রীলঙ্কায় মাহমুদুল্লাহবাহিনী

মিথুন আশরাফ ॥ সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ। শ্রীলঙ্কায় নিদাহাস ট্রফি খেলবে বাংলাদেশ। যেখানে বাংলাদেশসহ টি২০র সেরা দলগুলোর মধ্যে অন্যতম ভারত ও স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা আছে। টি২০তে দুর্বল দল বাংলাদেশ। এরপর লক্ষ্য শিরোপা জেতা। আর সেই লক্ষ্য, স্বপ্ন নিয়েই রবিবার দুপুরে শ্রীলঙ্কার কলম্বোয় গেল বাংলাদেশ দল। দেশ ছাড়ার আগে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদই শিরোপা জেতার আশার কথা জানিয়েছেন। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (সিপিএল টি২০) খেলে এসে দলের সঙ্গে তিনি শ্রীলঙ্কা গেছেন। যাওয়ার আগে টুর্নামেন্টে লক্ষ্যের কথা জিজ্ঞেস করতেই রিয়াদ বলেন, ‘লক্ষ্য অবশ্যই টুর্নামেন্ট জেতা। এটা আমাদের প্রথম লক্ষ্য।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘তবে পাশাপাশি আমাদেরও অনেক কিছু করার বাকি আছে। অনেক কিছু প্রমাণ করার বাকি আছে। আমরা কতটুকু ভাল করতে পারি এই সংস্করণে। শেষ সংবাদ সম্মেলনেও আমি এই কথাটা বলছিলাম, অনেকের মনে হয়তো একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন আছে এই সংস্করণের শক্তিমত্তা নিয়ে। আমার মনে হয় এটা আমাদের জন্য খুব ভাল একটা প্লাটফর্ম আমাদের নিজেদের প্রমাণ করার জন্য। সবার ব্যক্তিগত সেরাটা যদি আমরা আদায় করে নিতে পারি আমার মনে আমাদের খুব ভাল কিছু অর্জন করা সম্ভব।’ শ্রীলঙ্কায় ৬ থেকে ১৮ মার্চ টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে। টুর্নামেন্টে নেই সাকিব আল হাসান। যিনি দেশের টি২০র সেরা বিজ্ঞাপন হয়ে উঠেছেন। আঙ্গুলের চোট না সারাতেই এই টুর্নামেন্ট থেকেও সাকিবকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তার পরিবর্তে আবারও নেতৃত্ব দেবেন মাহমুদুল্লাহ। সাকিবহীন দল যে কতটা বিপদগ্রস্ত, তাতো আগেও বোঝা গেছে। এ টুর্নামেন্টেও কী তা বোঝা যাবে? এ প্রশ্ন সবার মুখে মুখে। রিয়াদ জানান, ‘সাকিবকে মিস করা অবশ্যই দলের জন্য ক্ষতিকর আমার মনে হয়। ওর মতো চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড়, অপরিহার্য খেলোয়াড় মিস করা অবশ্যই আমাদের জন্য টাফ। তারপরও আমাদের সবার জন্য সুযোগ ভাল কিছু করে দেখানো।’ শ্রীলঙ্কার কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের সব ম্যাচ হবে। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ৮ মার্চ বাংলাদেশ দলের মিশন শুরু হবে। এরপর এক এক করে ১০ মার্চ স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা, ১৪ মার্চ আবার ভারত, ১৬ মার্চ শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বে একেক দল চারটি করে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। গ্রুপ পর্ব শেষ হবে ১৬ মার্চ। এরপর ১৮ মার্চ হবে ফাইনাল খেলা। টুর্নামেন্টে ভারত ও শ্রীলঙ্কার মতো কঠিন প্রতিপক্ষ রয়েছে। যে প্রতিপক্ষ দুটির বিপক্ষে বাংলাদেশের অবস্থাও দুর্বল। এ পর্যন্ত ৭১টি টি২০ খেলে ২১টি ম্যাচে জেতার বিপরীতে ৪৮টিতেই হেরেছে। ২টি ম্যাচের রেজাল্ট হয়নি। ভারতের বিপক্ষে এ পর্যন্ত ৫টি টি২০ ম্যাচ খেলে সবকটিতে হেরেছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৯ ম্যাচ খেলে ২টিতে জিতেছে। ৭টিতেই হেরেছে। সর্বশেষ ১০ টি২০ ম্যাচের মধ্যে মাত্র ১টি ম্যাচে জিততে পেরেছে বাংলাদেশ। কী কাহিল অবস্থা! যে দুই দল টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ, সেই দুই দলের বিপক্ষেও করুণ দশা। তাহলে চ্যাম্পিয়ন হওয়া কিভাবে সম্ভব? রিয়াদ জানান, ‘যে কোন প্রতিপক্ষই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যার বিরুদ্ধেই খেলেন আপনার ভাল খেলতে হবে। আপনি এটা বলতে পারেন ঘরের মাটিতে আমরা খুব ভাল খেলছিলাম এখন আমাদের এক্সপেকটেশনটা অনেক বেশি বেড়ে গেছে। আমরা হয়তো শেষ সিরিজে আশানুরূপ পারফর্ম করতে পারিনি। তবে ইনশাল্লাহ যেহেতু উপমহাদশের পরিবেশে বেশ অনেকবার আমরা খেলেছিও শ্রীলঙ্কায়, তো ইনশাল্লাহ আমরা ভাল কিছু করতে পারব।’ প্রথম ম্যাচেই ভারতের বিপক্ষে বাজিমাত করা গেলে টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের অবস্থান অন্যরকম হতে পারে। শুরুটা যে খুব গুরুত্বপূর্ণ। রিয়াদও তা মনে করিয়ে দিলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় প্রথম ম্যাচটা যদি আমরা জিততে পারি ইনশালল্লাহ। আমাদের শুরুটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সবসময়ই বিশ্বাস করি শুরুটা যদি ভাল হয় আমরা মোমেন্টামটা পেতে পারি। আমার মনে হয় একটা ম্যাচই কনফিডেন্সটা বুস্ট আপ করবে বাকি সব ম্যাচে আপনি কিভাবে ব্যাক করবেন।’ সফরপূর্ব আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত প্রধান কোচ কোর্টনি ওয়ালশ বলেছিলেন, ফাইনালে খেলার কথা। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের ভাল সুযোগ আছে। অবশ্যই আমরা দুই দলের (ভারত ও শ্রীলঙ্কা) বিপক্ষে আন্ডারডগ হয়ে মাঠে নামব। তবে পুরো টুর্নামেন্টে ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলতে পারলে ফাইনাল খেলার যথেষ্ট সুযোগ আছে।’ সঙ্গে যোগ করেছিলেন, ‘শ্রীলঙ্কাতে গিয়ে আমাদের ভাল পরিকল্পনা করতে হবে। আশাকরি আমরা নিজেদের সামর্থ্যরে প্রমাণ দিয়ে ধারাবাহিকভাবে ভাল ক্রিকেট খেলতে পারব।’ রিয়াদ একধাপ এগিয়ে গিয়ে শিরোপা জেতার স্বপ্নের কথাই বললেন। তা এখন সাফল্যের মুখ দেখলেই হয়।
×