ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাণ ফিরে পাচ্ছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা ॥ দঃ আফ্রিকা থেকে আসছে ৬ জেব্রা

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ৪ মার্চ ২০১৮

প্রাণ ফিরে পাচ্ছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা ॥ দঃ আফ্রিকা থেকে আসছে ৬ জেব্রা

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ ধীরে ধীরে প্রাণ ফিরে পেতে শুরু করেছে চট্টগ্রামের একমাত্র চিড়িয়াখানা। আগে শূন্য খাঁচা আর অসুস্থ প্রাণীতে পরিপূর্ণ ছিল এটি। সেই অবস্থা এখন আর নেই। পুরনো খাঁচা পরিপূর্ণ হয়ে এখন চিড়িয়াখানায় নতুনের সমারোহ। শিশুদের দৃষ্টি কাড়তে কিডস কর্নার যেমন রয়েছে তেমনি আগতদের খোলামেলা পরিবেশে পদচারণার জন্য গড়ে তোলা হয়েছে পুরো আঙ্গিনা। সিংহ-সিংহীর বিয়ের মতো অবাক হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে এই দর্শনীয় স্থানে। এবার আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ৪৮ লাখ টাকায় ছয়টি জেব্রা। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী কমিটির সদস্য সচিব ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ রুহুল আমীন জানিয়েছেন, আগামী মঙ্গলবার চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় এসব জেব্রা পৌঁছবে। এ উপলক্ষে আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে জেলা প্রশাসক এসব জেব্রা দর্শনার্থীর জন্য খাঁচায় সংরক্ষণের অনুমতি দেয়ার কথা রয়েছে। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার পক্ষ থেকে জানা গেছে, ১৯৮৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক এম এ মান্নানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রামের ফয়’স লেক এলাকায় গড়ে ওঠে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। বর্তমানে ৫৫ প্রজাতির পশুপাখি রয়েছে এতে। প্রতিমাসেই এখন চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থী লাখ ছাড়িয়ে যাচ্ছে। গড়ে প্রতিদিন ৩ হাজার ১০০ দর্শনার্থীর আগমন ঘটছে এখানে। তবে ছুটির দিনে দর্শনার্থীর সংখ্যা তিনগুণেরও বেশি হয়। জনপ্রতি মাত্র ৩০ টাকা নেয়া হচ্ছে পরিদর্শনের জন্য। এদিকে, দর্শনার্থী বাড়াতে আগামী সোমবার ৬টি জেব্রা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে বিমানযোগে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবে। এর মধ্যে ৪টি পুরুষ ও ২টি মহিলা। এসব জেব্রার আমদানিকারক ফ্যালকন ট্রেডার্স। মঙ্গলবার সকালে এগুলো চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় পৌঁছার কথা রয়েছে। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক জেব্রাগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করে খাঁচায় রাখার অনুমতি দেবেন। এর আগে দুটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার আমদানি করা হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এ দুটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার আনা হয়। আগতরা অভিযোগ করেছেন, চট্টগ্রাম নগরীতে জেলা প্রশাসনের পরিচালনায় একটি মাত্র চিড়িয়াখানা হলেও ঢাকার চিড়িয়াখানা থেকে অনেক ভাল ও পরিবেশসম্মত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অবয়বে গড়া চিড়িয়াখানাটি ক্রমশ আগতদের মন জয় করে সরকারের আয়বর্ধক প্রকল্পে পরিণত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে ফয়’স লেককে বেসরকারী খাতে লিজ দেয়ায় প্রকৃতির ছোঁয়া হারাচ্ছে এই আঙ্গিনা। আবার এই লেকে চিরসুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার সৌভাগ্য হারিয়েছে দর্শনার্থীরা। কারণ, দর্শনার্থীদের অর্থ ক্ষমতার মধ্যে নেই লেকে প্রবেশাধিকার। জনপ্রতি ২৫০ টাকা থেকে সাড়ে ৪শ’ টাকা পর্যন্ত নেয়ার রেকর্ড রয়েছে কনকর্ড এমিউজমেন্ট পার্ক কর্তৃপক্ষের। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা নির্বাহী কমিটির সদস্যসচিব মোঃ রুহুল আমিন জনকণ্ঠকে জানান, আমরা এ চিড়িয়াখানাটি মানসম্মত করে তুলতে বিভিন্ন প্রাণীর সমাগম ঘটাচ্ছি। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেরই পদচারণা রয়েছে এই চিড়িয়াখানায়। পাহাড় বেষ্টিত চিড়িয়াখানাটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়া। দর্শনার্থীরাও উপভোগ করছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে। বর্তমানে প্রতিমাসে প্রায় লাখের কাছাকাছি দর্শনার্থী এখানে আসছেন।
×