ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর এখন ভোট চাওয়া আইনের লঙ্ঘন ॥ মওদুদ

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ৪ মার্চ ২০১৮

প্রধানমন্ত্রীর এখন ভোট চাওয়া আইনের লঙ্ঘন ॥ মওদুদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিভিন্ন স্থানে জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এখন ভোট চাওয়া আইনের লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে লেবার পার্টি আয়োজিত ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি, জাতীয় নির্বাচন ও বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। মওদুদ বলেন, খালেদা জিয়াকে ছাড়া দেশে কোন নির্বাচন হবে না। তাকে ছাড়া দেশে কোন নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। খালেদা জিয়াকে সঙ্গে নিয়েই আমরা আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। সরকারী খরচে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। সরকারী খরচে এই প্রচার বন্ধে নির্বাচন কমিশন কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় এই কমিশন যে সরকারের তল্পিবাহক তা প্রমাণিত হয়েছে। তিনি বলেন, যেহেতু তারা জানেন, নির্বাচন কমিশনের বিধিতে আছে, তফসিল ঘোষণার পরে উন্নয়নের কোন ওয়াদা করতে পারবেন না, সেজন্য তারা এই সময়ে সেই সুযোগ নিচ্ছেন। এটা অনৈতিক এবং বেআইনী। মওদুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভা করে ভোট চান কিন্তু বিএনপিকে সমাবেশ করতে দেয়া হয় না। বিরোধী দলকে তালাবদ্ধ করে রাখা, গৃহবন্দী করে রাখা, জেলখানায় রাখা, কোন সভা সমাবেশ করতে না দেয়া চলতে পারে না। দেশের মানুষ আগামী নির্বাচনে এর জবাব দেবে। নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কমিশন বলছে, তাদের কিছু করার নেই। তাদের আসলে সাহস নেই। আর তারা তো নিরপেক্ষ না। তারা সরকারের একটি তল্পিবাহক প্রতিষ্ঠান। সেজন্য তারা এই কথা বলেন। আজকে যদি ভারতে হতো, তাহলে ভারতের চীফ ইলেকশন কমিশনার ব্যবস্থা নিতেন। ইসিকে বলব, হয় তাদেরকে নির্বাচনী প্রচার করতে বাধা দেন, না হয় আমাদেরও অনুমতি দেন, যাতে আমরাও ধানের শীষে ভোট চাইতে পারি। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে মওদুদ বলেন, দেশে উন্নয়ন করলে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল হবে। এটা ভাল কথা। কিন্তু উন্নয়নের কথা বলে নৌকায় ভোট চাইবেন এটা ঠিক নয়। তিনি বলেন, এ সরকারের আমলে এমন কোন জায়গা নেই যেখানে দুর্নীতি হয়নি। তাই এ সরকারের দুর্নীতির ওপরে আমরা একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করব। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমার ওপর ভীষণ রাগান্বিত, আমার বাড়ি নেয়ার পরও বোধহয় উনার মনে শান্তি আসেনি। লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, মীর মোঃ নাছিরউদ্দিন, নিতাই রায় চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিক শিকদার, লেবার পার্টির মহাসচিব ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ। খালেদা জিয়াকে ছাড়া সংসদ নির্বাচন হবে না- ড. মোশাররফ ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে ছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী ওলামা দল আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ড. মোশাররফ বলেন, ২০১৪ সালের মতো পাতান নির্বাচন জনগণ আর হতে দেবে না। জনগণ এখন আর আওয়ামী লীগের কথায় বিশ্বাস করে না। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে কারাগারে রাখা হয়েছে। তাঁকে বাদ দিয়ে সরকার আগামী নির্বাচনে যেতে চায়। কিন্তু তারা আধাপথও যেতে পারবে না। জনগণ খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচন মেনে নিবে না। তিনি বলেন, সরকার আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে বাধা দিচ্ছে। মানববন্ধন, অনশন, কালো পতাকা প্রদর্শনের মতো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীগুলোও আমাদের করতে দিচ্ছে না। সভা-সমাবেশের অনুমতি দিচ্ছে না। আমরা ১২ তারিখ সমাবেশের অনুমতি চেয়েছি। আশা করি, সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং সমাবেশের অনুমতি দেবে। ড. মোশাররফ বলেন, সরকার নিজেদের ডিজিটাল বলে। খালেদা জিয়ার মামলার রায়ের সার্টিফাইড কপি পাঁচদিনের মধ্যে পাওয়ার কথা থাকলেও পেতে লেগেছে নয়দিন। হাইকোর্ট নথি তলব করার পর ১০ দিন কেটে গেছে। কিন্তু নথি এখনও এলো না। ডিজিটাল হলে তো এক চাপেই নথি চলে আসত। এতেই বুঝা যায়, সরকার উদ্দেশ্যমূলকভাবে খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রেখেছে। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হাফেজ আব্দুল মালেকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ, ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা নেছারুল হক প্রমুখ। খালেদাকে কারাগারে রেখে বিএনপিকে দুর্বল করা যাবে না- নজরুল ॥ খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে বিএনপিকে দুর্বল করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, সামনের দিনে ভোটের ফলাফল পাল্টানো যাবে না। জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে আছে খালেদা জিয়াকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বানাবে। এখন সুযোগ শুধু ভোট দেয়ার। শনিবার দুপুরে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শ্রমিক দল আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন। নজরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠান হয়েছে। খালেদা জিয়া আপোসহীন নেত্রী। তিনি সংবিধান অনুযায়ী এ পর্যন্ত ২৩টি আসনে বিজয়ী হয়েছেন। খালেদা জিয়া তার স্বামীর নামে গঠিত ট্রাস্টের টাকা আত্মসাতে সহযোগিতা করেছেন এটাও দেশের কোন মানুষ বিশ্বাস করে না। কারণ এ টাকা ব্যবহার বা ব্যাংক হিসাবে তার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। এমনকী বাদী পক্ষ খালেদা জিয়া জড়িত থাকার কোন প্রমাণ দেখাতে পারেনি। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মোঃ আবু জাফর, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাসিম প্রমুখ।
×