দেশের নিয়ম অনুযায়ী গণতন্ত্র ও নির্বাচন চলবে ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিদেশী কোন উপদেশ খয়রাতের দিকে আওয়ামী লীগ তাকিয়ে নেই। সরকার একটা অংশগ্রহণযোগ্য অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করবে। দেশের নিয়ম অনুযায়ী দেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচন চলবে। কাজেই এ নিয়ে বাইরে থেকে কে চাপ দিল সেটা আমাদের বিবেচ্য বিষয় নয়। আমাদের নিয়ম ও সংবিধান অনুযায়ী একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। শনিবার রাজধানীর নিউমার্কেট কাঁচাবাজার এলাকায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত আওয়ামী লীগের ৭ মার্চের জনসভাকে সফল করতে জনগণের মাঝে লিফলেট বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে বিদেশী কোন চাপ আছে কিনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেদের বিবেকের চাপ এবং একটা ঐতিহ্যবাহী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে দেশের জনগণের চাপকে গুরুত্ব দেয়। দেশের গণতন্ত্র আমরাই পরিচালনা করব। আর আওয়ামী লীগ মনে করে কেউ ধোঁয়া তুলশীপাতা নয়। যারা উপদেশ দিচ্ছে তাদের দেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচনের চেহারা সারা দুনিয়া জানে। আমরাও জানি। কাজেই আমাদের উপদেশ দিতে হবে না। সরকারী অর্থ ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রী ভোট চাইছেন বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনগণের কাছে যাওয়ার অধিকার নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর আছে। এখনও নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়নি। এই প্রশ্নটা আসতে পারে তখনই, যখন নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। এই মুহূর্তে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি যেসব উন্নয়ন করেছেন, সেগুলো জনগণকে অবহিত করার অধিকার তাঁর আছে। আর প্রধানমন্ত্রী কেবল প্রধানমন্ত্রী নন, আওয়ামী লীগের সভাপতিও। দলের সভাপতি হিসেবে নৌকার পক্ষে ভোট চাওয়ার অধিকার তাঁর আছে। এখানে নিয়মের কোন ব্যত্যয় ঘটেনি। বিএনপির আন্দোলনের কৌশল মোকাবেলায় আওয়ামী লীগের অবস্থান সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি কৌশল তাদের ব্যাপার। এটা নিয়ে আওয়ামী লীগের কোন বক্তব্য নেই। আওয়ামী লীগ দেখবে তাদের কৌশল যদি রাজনৈতিক হয়, তাহলে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করা হবে। তাদের কৌশল যদি সংঘাত-সহিংসতার দিকে যায়, তাহলে সহিংসতার জবাব উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কীভাবে দিতে হয়- সেটা আমাদের জানা আছে। রাজনীতিকে আমরা রাজনীতি দিয়েই মোকাবেলা করব। সহিংসতা মোকাবেলার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আছে। তারা যখন যেটা দরকার সেটাই করবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, এবারের ৭ মার্চে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্মরণকালে সর্ববৃহৎ সমাবেশ করার লক্ষ্য নিয়ে আওয়ামী লীগ কাজ করছে। দেশের রাজনীতির ঐতিহ্য অনুসরণ করে প্রচার চালানো হচ্ছে। এক সময় মাইকে জনসভার প্রচারণা হতো। সেটা এখন নেই। আওয়ামী লীগ ১ মার্চ থেকে মাইকে প্রচার চালাচ্ছে। এরপর পাড়া-মহল্লায়, বাড়িতে ও মার্কেটে সর্বত্রই হ্যান্ডবিলের মাধ্যমে প্রচার করছে। এই হ্যান্ডবিলের প্রচারও এখন চোখে পড়ে না। তিনি বলেন, সমাবেশে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখবেন। এ সময়ের ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের মুখে নেতাকর্মী ও দেশবাসীর করণীয় এবং নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখতে জনগণকে আহ্বান জানাবেন প্রধানমন্ত্রী। জনসভাকে ঘিরে জনগণের ভোগান্তি যতটুকু সম্ভব সহনশীল রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। লিফলেট বিতরণকালে এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ। আদালতের রায় রাজনীতিকদের জন্য সতর্কবার্তা- ওমর ফারুক ॥ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভা সফল করতে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের বর্ধিত সভায় যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী বলেছেন, পাকিস্তানে দুর্নীতির অভিযোগে নওয়াজ শরীফ শুধু প্রধানমন্ত্রীত্ব হারাননি, সম্প্রতি আদালতের রায়ে দলীয় প্রধানের পদটিও হারিয়েছেন। বাংলাদেশে খালেদা জিয়ার বেলায় নয় কেন? খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেয়া রায় রাজনীতিকদের জন্য সতর্কবার্তা। ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাটের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজার পরিচালনায় বর্ধিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদসহ যুবলীগের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা। বর্ধিত সভায় দক্ষিণের সকল ওয়ার্ড-ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।