ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যারা জঙ্গীবাদে জড়িত তারা মুসলিম নামের কলঙ্ক

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ৪ মার্চ ২০১৮

যারা জঙ্গীবাদে জড়িত তারা মুসলিম নামের কলঙ্ক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে আলেম-ওলামাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, যারা জঙ্গীবাদের সঙ্গে জড়িত তারা মুসলিম নামের কলঙ্ক। আপনারা পথভ্রষ্ট হবেন না। সবাই এক থাকুন। প্রক্রিয়া শেষ হলেই কওমী মাদ্রাসার অফিসিয়ালি স্বীকৃতি দেয়া হবে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, কওমী মাদ্রাসার মেধাবীরা একদিন দেশের নেতৃত্ব দেবে। শনিবার রাজধানীর খিলগাঁওয়ে ‘ইক্বরা জাতীয় দ্বীনি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ’ আয়োজিত প্রতিনিধি সম্মেলন ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মাওলানা আসআদ আল হুসাইনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ আলমগীর, জাতীয় বেফাকের সভাপতি আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ, মাওলানা হুসাইনুল বান্না, ড. আওলাদ হোসেন, মাওলানা আবু তাহের নদভী, মুফতি এনামুল হক, মুফতি মুহাম্মদ আলী, মাওলানা শামসুল হুদা খান, মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, মুফতি আবদুল কাইয়ুম খান প্রমুখ। আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, কওমী মাদ্রাসাগুলোকে সরকারী স্বীকৃতি দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আলাদা বোর্ড ও বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যথেষ্ট আন্তরিক। তিনি বলেন, যারা জঙ্গীবাদের সঙ্গে জড়িত তারা মুসলিম নামের কলঙ্ক। সারাবিশ্বে মুসলমানদের ওপরে কলঙ্কের কালিমা লেপন করার জন্যই এ ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা সেই ষড়যন্ত্রকারীদের দমন করতে পেরেছি। মানুষের জান-মালের ক্ষতি করা এ ধর্মের কাজ নয়, এটা আমরা প্রমাণ করেছি। মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের নেতৃত্বে যে এক লাখ আলেম জঙ্গীবাদ বিরোধী ফতোয়ায় স্বাক্ষর করেছেন, তাদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদ্রাসায় কোন জঙ্গীবাদের জন্ম হয় না। মাদ্রাসা থেকে মেধাবী ছেলেরা বেরিয়ে আসবে। যারা আমাদের দেশের নেতৃত্ব দেবে। আল্লামা মাসঊদের প্রশংসা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানুষ গড়ার সেই কাজটি আল্লামা মাসঊদ করছেন। যে মেধাবীদের আজকে পুরস্কৃত করা হচ্ছে তারাই আমাদের দেশের নেতৃত্ব দেবে তাদেরকে উৎসাহিত করছেন। তাবলীগের মতবিরোধ নিয়ে বলতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, টঙ্গীতে লাখ লাখ মানুষ সেখানে উপস্থিত হন। সেখানে বিরোধ তৈরি করা হলো। কারা করে এসব? আমরা দিনের পর দিন মিটিং করে এর আগেও সমাধান করার চেষ্টা করেছি। তাবলীগ জামাতকে বাংলাদেশের গর্বের বিষয় উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাবলীগ জামাতের কাফেলা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমাদের দেশে আসছে। দ্বীনের কাজ তারা আঞ্জাম দিচ্ছে। সব কিছুর উদাহরণ আজ হয়ে গেছে বাংলাদেশ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আল্লামা মাসঊদের নেতৃত্বে সবাইকে একত্রে এক প্লাটফর্মে নিয়ে আসার আহ্বান করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যাতে স্বীকৃতি দেয়াটা সম্ভব এবং সহজ হয়। প্রধানমন্ত্রী আলেমদের ভালবাসেন। তিনি পাক্বা মুসলমান, ঈমানদার। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। তাহাজ্জতের নামাজ, সকালে কোরান তেলোয়াত করেন। এ মানুষের মাধ্যমে বাংলাদেশ চলছে। কাজেই আলেমরা তার কাছে সম্মানীয়। তিনি আলেমদের কথা মন দিয়ে শোনেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, যখন জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটে সারা প্রথিবীতে, যখন তছনছ হয়ে যাচ্ছে সব, তখন যেখানেই যেতাম, সবাই আমাদের শুনিয়ে শুনিয়ে বলত, অল হিউম্যান আর নট টেরোরিস্ট, বাট অল টেরোরিস্ট আর মুসলিম। মাথা হেট হয়ে যেত। সারা পৃথিবীতে ইসলাম ধর্মকে কলঙ্কিত করার জন্য এ ষড়যন্ত্র চলছে। এই ধর্মে জঙ্গী উত্থান হতে পারে না। এ ধরনের ষড়যন্ত্র যারা করে, তারা মুসলমান নয়। জঙ্গী দমনে আমরা সবাই এক হয়েছি। এ দেশ অসাম্প্রায়িক সম্প্রীতির দেশ। যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। কওমী স্বীকৃতির ঘোষণার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন জাতীয় দ্বীনি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রজ্ঞায় আহমদ শফীর মতো লোকও স্বীকৃতির জন্য বসছেন। তিনি বলেন, স্বীকৃতি ঘোষণার সময় তাড়াহুড়ার কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যে প্রজ্ঞাপন হয়েছিল, সেখানে অনেক বৈষম্য হয়েছে, গোঁজামিল রয়ে গেছে। এখন আইন করতে গিয়ে এসব গোঁজামিল দূর করতে হবে। ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, মাদ্রসার মধ্যে কোনও জঙ্গীবাদ নেই, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন ঘোষণায় আলেমরা আশ্বস্ত হয়েছেন। এজন্য আলেমরা নিরাপদে আছি।
×