ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

গল্প, আড্ডা, হাসি, গান আর স্মৃতি রোমন্থনে কাটল দিন

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ৪ মার্চ ২০১৮

গল্প, আড্ডা, হাসি, গান আর স্মৃতি রোমন্থনে কাটল দিন

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ গল্প, আড্ডা, হাসি, গান আর স্মৃতি রোমন্থনের মধ্য দিয়ে পুরো একটি দিন অতিবাহিত করল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীরা। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) বিভাগটির বিভিন্ন বর্ষের প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী এতে অংশ নেয়। সকাল থেকেই আসতে থাকে বিভাগের সাবেকরা। তাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে টিএসসি প্রাঙ্গণ। ‘আবার দেখা যদি হলো সখা প্রাণের মাঝে আয়’ শ্লোগানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান বিভাগ এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশন ‘প্রাণের মেলা-২০১৮’ শীর্ষক পুনর্মিলনীর আয়োজন করে। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে শুরু হয় দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। সন্ধ্যায় ছিল এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এই পর্বের বিশেষ আকর্ষণ ছিল বাউল সঙ্গীত। পুনর্মিলনীর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশন মহাসচিব কামাল শরীফের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে আজাদ, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল করিম, এ্যালামনাইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, আমাদের স্বপ্ন, ভালবাসা, বন্ধুত্ব কখনও হারায় না। কিন্তু পেশাগত কাজের জন্য সবার সঙ্গে সব সময় দেখা করা সম্ভব হয় না। পুনর্মিলনীর মাধ্যমে আমরা বন্ধুদের সঙ্গে বন্ধুত্ব নবায়ন করতে পারি। ফিরে যেতে পারি পুরনো স্মৃতিতে। তিনি বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল গবেষণার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে। কিন্তু এখন আর আগের মতো গবেষণা হয় না। কারণ আগের মতো যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নেই। এ জন্য শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। পুনর্মিলনীতে আসা বিভাগটির সাবেক শিক্ষার্থীরা কর্মব্যস্ত জীবনে দীর্ঘদিন পরে দেখা হওয়ায় একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময় ও খোশগল্পে মেতে উঠেন। স্মৃতিচারণ করেন ক্যাম্পাস জীবনের সেই সময়কে। কথা বলেন সেই সময়ের শিক্ষা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকা- নিয়ে। পুরনো স্মৃতিতে হাতড়ে বেড়িয়ে অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তুলেছিল তারা। পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে প্রাণোচ্ছ্বল দিনটিকে ফ্রেমবন্দী করে রাখতে টিএসসির মাঠে সেলফিতে মেতে উঠেন অনেকে। ১৯৭৩-৭৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন মোঃ মহসিন হোসেন। চাকরি করতেন একটি সরকারী প্রতিষ্ঠানে। পরিবার নিয়ে এসেছেন পুনর্মিলনীতে। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি পরিবর্তন হয়েছে। আগে শিক্ষার্থীদের মাঝে মানবিকতাবোধটা বেশি ছিল। কিন্তু এখনকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেই বোধটা কমে যাচ্ছে দিন দিন। কোন অন্যায় হলে আমরা সবাই একসঙ্গে তার প্রতিবাদ করতাম। কিন্তু এখন সবাই ব্যক্তিস্বার্থের কথা চিন্তা করে নানান দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে এমনটি কাম্য নয়। ১৯৭৭-৭৮ বর্ষের শিক্ষার্থী রেহানা বেগম বলেন, অনেকদিন পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে পেরে খুব ভাল লাগছে। মনে হচ্ছে আমরা আবার শিক্ষা জীবনে ফিরে আসলাম। জীবনে যা কিছু অর্জন করেছি তার জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান সবচেয়ে বেশি। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া শিক্ষাই আমার আদর্শ। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ঘটনায় আমরা কষ্ট পাই।
×