ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জটিল সমীকরণে ইতালির সাধারণ নির্বাচন

প্রকাশিত: ০৪:০১, ৪ মার্চ ২০১৮

জটিল সমীকরণে ইতালির সাধারণ নির্বাচন

রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও সরকার পরিবর্তন ইতালির লোকজনের কাছে নতুন কিছু নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময় থেকে দেশটির লোকজন ৬০টি সরকার প্রত্যক্ষ করেছে। দেশটির নিম্নকক্ষ চেম্বার অব ডেপুটিস ও উচ্চকক্ষ সিনেটের প্রতিনিধি নির্বাচনে আজ ৪ মার্চ ভোট গ্রহণ করা হবে। এএফপি। রোমের লুইস ইউনিভার্সিটির রাজনৈতিক বিজ্ঞানের পরিচালক রবার্তো ডি’আলিমন্তে বলেন, এটা প্রায় অসম্ভব যে তিন প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর যে কেউ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে সমর্থ হবে। তবে যে দলটির সম্ভাবনা আছে সেটি হচ্ছে ডান। ডানপন্থী জোটে রয়েছে চারটি রাজনৈতিক দল। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় হচ্ছে সিলভিও বারলুসকোনির সেন্টার রাইট ‘ফোরজা ইতালিয়া (এফআই)’ এবং ‘দ্য ফার-রাইট লীগ’। আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মত্তেও রেনজির আশীর্বাদপুষ্ট প্রধানমন্ত্রী পাওলো জেন্তিলোনি অধিকাংশ ভোটারের মনযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি অভিবাসন বিরোধী হৈচৈ এড়িয়ে আরও জনপ্রিয় হচ্ছেন। দেশটিতে সাধারণ নির্বাচনের প্রচারে অভিবাসন ইস্যুটি প্রধান হয়ে উঠেছে এবং এমনকি তার পুরনো গুরুর থেকেও। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে জেন্তিলোনির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়াকে ইতালিতে ব্যাপকভাবে দেখা হয়েছিল বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী রেনজির নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ হিসেবে। রেনজি ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (পিডি) প্রধান। সংবিধান সংস্কারের প্রশ্নে এক গণভোটে পরাজিত হওয়ার পর তিনি পদত্যাগ করেন। জনপ্রিয় ‘পপুলিস্ট ফাইভ স্টার মুভমেন্ট’ পার্টির প্রধান লুইজি ডি মাইও ৬৩ বছর বয়সী জেন্তিলোনিকে বলেছেন রেনজির অবতার। অন্যদিকে ফার-রাইট ‘ব্রাদার্স অব ইতালি’ পার্টির প্রধান জিওরজি মেলোনি তাকে ‘পুতুল’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। দলটি সবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বারলুসকোনির ডানপন্থী জোটে রয়েছে। গত কয়েক মাস ভাল অবস্থানে থাকার দরুন তার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে কিছু পর্যবেক্ষক অনুমান করেন। তবে ৪ মার্চের নির্বাচনের পর ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে নির্বাচনের পর থেকে জেন্তিলোনিই প্রধানমন্ত্রী থাকবেন যা অধিকাংশ ইতালিয়ানকে সন্তুষ্ট করবে। সম্প্রতি ডেইলি লা স্টাম্পার এক জরিপে দেখা যায় জেন্তিলোনির পক্ষে ৪৪ শতাংশ সমর্থন রয়েছে যা তাকে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ¦ী ডি মাইও ও রেনজি উভয়ের থেকে খানিকটা এগিয়ে রেখেছে। তবে বারলুসকোনির জনপ্রিয়তা পড়ে গেছে। যৌন কেলেঙ্কারি ও বেআইনী কাজের কারণে তার জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছে। ধারণা করা হচ্ছে তার ডানপন্থী জোট নির্বাচনের দিন সবচেয়ে বেশি ভোট পেতে পারে। বিভিন্ন অপকর্মের কারণে দ-াদেশ পাওয়ায় সরকারী অফিস থেকে বিতাড়িত ৮১ বছর বয়সী বারলুসকোনি তার পার্টির গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে রয়েছেন এবং নিজেকে প্রভাবশালী হিসেবে দেখে থাকেন। মধ্য ফেব্রুয়ারির শেষে এক গ্রহণযোগ্য জরিপে দেখা যায় ডানপন্থী জোট ৩৮ শতাংশ ভোট পেতে পারে (যার মধ্যে ১৭ শতাংশ পাবে এফআই এবং ১৩ শতাংশ পাবে লীগ), ২৮ শতাংশ পেতে পারে এম ৫এস এবং ২৬ শতাংশ ভোট পেতে পারে পিডি নেতৃত্বাধীন মধ্য-বামপন্থী জোট। তবে এখনও বহু লোক সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। কোন জোটই যদি পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায় তবে জেন্তিলোনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থেকে যাবেন।
×