ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মোঃ ফজলুর রহিম রিমন;###;শিক্ষক, ধানমন্ডি আইডিয়াল স্কুল;###;জিগাতলা, ঢাকা-১২০৯।;###;মোবাইলঃ ০১৬৮০৫৫১৬৫৪ ;###;ই-মেইলঃ [email protected]

নবম শ্রেণির হিসাববিজ্ঞান

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ৩ মার্চ ২০১৮

নবম শ্রেণির হিসাববিজ্ঞান

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম অধ্যায় ১ নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী বন্ধুরা, শুভেছা রইল। কেমন আছ তোমরা। নিশ্চয়ই ইতোমধ্যে নতুন বছরে নতুন বই পেয়ে নতুনভাবে নতুন বিষয়গুলো শুরু থেকে ভালভাবে পড়াশোনা শুরু করে দিয়েছ। নতুন বছরের সাথে সাথে শুরু হলো তোমাদের জীবনের নতুন এক অধ্যায়ের, নতুন এক শিক্ষা বর্ষের। আজ থেকে দুই বছর পর তোমাদের জীবনের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষা S.S.C পরীক্ষা। আর এই পরীক্ষায় প্রত্যাশিত ফলাফল অর্জন করতে চাইলে এখন থেকে পরিকল্পনা করে পড়ালেখা শুরু করতে হবে। ‘কিছু দিন পর থেকে শুরু করব’ এই ভেবে বসে থাকলে চলবে না। কারণ তাহলে দেখবে শুরু করাটাই হচ্ছে না। অনেকে হয়ত ভাবছ নবম শ্রেণির বছর যেনতেনভাবে কাটিয়ে দশম শ্রেণিতে গিয়ে পড়াশোনা শুরু করবে। যদি এই রকম ভেবে থাক তবে অনেক বড় ভুল করবে। কারণ দশম শ্রেণিতে বছরজুড়ে স্কুলে অনেক মডেল টেস্ট হয়। তাই সেক্ষেত্রে নবম শ্রেণির পড়াগুলো কাভার দেয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তাই এখন থেকেই পড়ালেখা শুরু করতে হবে। শিক্ষার্থী বন্ধুরা তোমরা আজ ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী। যেভাবেই হোক (নিজের ইচ্ছায়, বাবা-মায়ের ইচ্ছায় বা অন্য যে কোন কারণে) তোমরা এই বিভাগে এসে থাক না কেন, তুমি চাইলে এই বিভাগ থেকেই সফলতার চরম শিখরে নিজেকে পৌঁছাতে পার। এই বিভাগে অধ্যয়ন করে তোমরা যে সব ডিগ্রি অর্জন করতে পার তা সংক্ষেপে নিন্মে তুলে ধরা হলোঃ C.A=C.A এর পূর্ণরূপ হলো Chartered Accountants. যে প্রতিষ্ঠান হতে এই ডিগ্রি অর্জন করতে পারবে তা হল I.C.A.B (The Institute of Chartered Accountants of Bangladesh). এই প্রতিষ্ঠানটি ঢাকার কারওয়ান বাজারে অবস্থিত। তুমি গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পর অথবা SSC ও HSC জিপিএ ৫ পেলে H.S.C এর পর এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারবে। C.M.A- এর পূর্ণরূপ হলো Cost and Management Accountants. যে প্রতিষ্ঠান হতে এই ডিগ্রি অর্জন করতে পারবে তা হল I.C.M.A.B (The Institute of Cost and Management Accountants of Bangladesh). এই প্রতিষ্ঠানটি ঢাকার নীলক্ষেতে অবস্থিত। ঢাকার বাইরেও এর একাধিক শাখা রয়েছে। তুমি গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পর অথবা SSC ও HSC-তে জিপিএ ৫ পেলে H.S.C এর পর এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারবে। B.B.A ও M.B.A -Bachelor of Business Administration (B.B.A) এবং Master of Business Administration (M.B.A) ডিগ্রী অর্জন করার জন্য অন্যতম প্রতিষ্ঠান হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের I.B.A অনুষদ অথবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ। এছাড়াও বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও এই ডিগ্রী অর্জন করা যায়। S.S.C ও H.S.C তে ভালো ফলাফলের পর ভালো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হতে তোমরা এই ডিগ্রী অর্জন করতে পারবে। প্রতিটি বিভাগের জন্য প্রতিটি বিষয় সমান গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল হিসাববিজ্ঞান। শুরুতে বিষয়টি অনেক শিক্ষার্থীর নিকট ভয়ের কারণ বা কঠিন মনে হতে পারে। তবে নিয়মিত চর্চা করলে অতি অল্প সময়ের মধ্যে হিসাববিজ্ঞান বিষয়টি সহজ ও আনন্দায়ক মনে হবে। হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে ভাল করার জন্য তোমাদের প্রতি আমার কিছু উপদেশমুলক পরামর্শ রইল। যেমন - ১. মনযোগ সহকারে ধারাবাহিকভাবে অধ্যায়গুলো শেষ করতে হবে। ২. অধ্যায় ২, ৩, ৪ ও ৫ ভাল করে শেষ করতে হবে। এই অধ্যায়গুলো ভাল করে না শিখে অন্য অধ্যায় শুরু করবে না। ৩. যখন যে অধ্যায় শুরু করবে সে অধ্যায়ের প্রতিটি লাইন ভাল করে পড়ে গুরুত্বপূর্ণ লাইনগুলো নীল কলমের কালি দিয়ে দাগিয়ে রাখবে। পরিক্ষার পূর্বের দিন সেই লাইনগুলো রিভিশন দিয়ে যাবে যা তোমার M.C.Q প্রশ্নের সমাধান করতে খুবই সাহায্য করবে। ৪. বছরের শুরুতে রুটিন তৈরি করে নিবে এবং সে অনুযায়ী প্রতিদিন অন্যান্য বিষয়ের সাথে কমপক্ষে ১ (এক) ঘন্টা হিসাববিজ্ঞান বিষয়টি অনুশীলন করবে। ৫. শুরু থেকেই দ্রুত, নির্ভুল ও পরিচ্ছন্ন লেখার অভ্যাস গড়ে তুলবে। আশা রাখবো, উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো মনে রেখে তোমরা এখন থেকে নিয়মিত পড়াশোনা শুরু করবে। হিসাববিজ্ঞানের প্রতিটি বিষয়বস্তু যাতে করে তোমরা সহজে বুঝতে পার সে দিকে লক্ষ্য রেখে বিগত বছরের ন্যায় ধারাবাহিকভাবে আমার লেখাগুলো তোমাদের নিকট উপস্থাপন করব –ইনশাআল্লাহ । আজ থাকছে “প্রথম অধ্যায় -হিসাববিজ্ঞান পরিচিতির” আলোচনা। প্রতিটি মানুষ, প্রতিটি প্রতিষ্ঠান প্রতিনিয়ত তাদের ব্যক্তি জীবনে, কর্মজীবনে, সামাজিক জীবনে, ব্যবসায়িক জীবনে নানা ধরনের হিসাব নিকাশ কাজের সাথে জড়িত। এই হিসাব কিভাবে সঠিক ও যথাযথভাবে রাখা যায়, কিভাবে হিসাব রাখলে ব্যবসায়ের কি পরিমাণ লাভ বা ক্ষতি হয়েছে তা সহজে জানা যাবে, কিভাবে প্রতিষ্ঠানের সঠিক আর্থিক চিত্রটি পাওয়া যাবে সে সকল বিষয়ে হিসাববিজ্ঞান বইটি প্রয়োজনীয় ধারণা দিয়ে থাকে। মনে রাখতে হবে যে ‘হিসাববিজ্ঞান’ শব্দটি পৃথক কোন শব্দ নয়। হিসাববিজ্ঞান একক শব্দ। অর্থাৎ হিসাব বিজ্ঞান শব্দটি আলাদা না লিখে, লিখবে হিসাববিজ্ঞান। এসো আমরা জেনে নেই হিসাববিজ্ঞান কাকে বলে? সাধারণভাবে বলতে পারি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তার আর্থিক (অর্থের সাথে সর্ম্পকিত) ঘটনাগুলো যে প্রক্রিয়ায় সংরক্ষন করে তাকে হিসাববিজ্ঞান বলে। আরো স্পষ্ট করে বলা যায় ‘হিসাববিজ্ঞান’ হলো এমন একটা প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কোন প্রতিষ্ঠানে সংঘটিত আর্থিক ঘটনাসমূহ হিসাবের নির্দিষ্ট বইতে সঠিকভাবে লিপিবদ্ধকরণ, শ্রেণীবদ্ধকরণ ও বিশ্লেষন করে সঠিক আর্থিক অবস্থা উক্ত প্রতিষ্ঠানের নিকট তুলে ধরে। এবার এসো আমরা জেনে নেই হিসাববিজ্ঞানের উৎপত্তি কোথায় এবং কে করেছেন? যে দিন হতে মানুষ গুহায় বা পাথরে দাগ কেটে হিসাব রাখতে শিখেছে, রশিতে গিট দিয়ে ফসল বা শিকারি জীবজন্তুর হিসাব রাখতে শিখেছে মূলত সেই দিন থেকে হিসাববিজ্ঞানের যাত্রা শুরু হয়। তবে ‘লুকা প্যাসিওলি’ নামে একজন ইতালীয় গণিতবিদ ১৪৯৪ খ্রিষ্টাব্দে তার রচিত ‘সুম্মা ডি এরিথমেটিকা জিওমেট্রিয়া প্রপোরশনিয়েট প্রপোরশনালিটা’ নামক গ্রন্থে হিসাববিজ্ঞানের মূল নীতি ‘দু’তরফা দাখিলা পদ্ধতি’ ব্যাখ্যা করেন। ‘লুকা প্যাসিওলি’ কর্তৃক প্রদত্ত মূলনীতির উপর ভিত্তি করে হিসাববিজ্ঞান বইটি রচিত হয়েছে বলে তাঁকে হিসাববিজ্ঞানের জনক বলা হয়। এই অধ্যায়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ১। প্রাচীনকালে মানুষ কিভাবে হিসাব রাখত? ক. খাতায় লিখে খ. রশিতে গিঁট দিয়ে গ. লাঠিতে দাগ কেটে ঘ. গুহায় দাগ কেটে ২। কোথায় হিসাববিজ্ঞানের যাত্রা শুরু হয়? ক. রোম খ. লন্ডন গ. ভেনিস ঘ. বোস্টম ৩। কিসের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব? ক. ব্যয় হ্রাসের খ. দায় হ্রাসের গ. ব্যয় নিয়ন্ত্রণের ঘ. আয় হ্রাসের ৪। ব্যবসায়ের ভাষা বলা হয় কাকে? ক. অর্থনীতিকে খ. ব্যবস্থাপনাকে গ. হিসাববিজ্ঞানকে ঘ. কম্পিউটার বিজ্ঞানকে ৫। কোনটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান? ক. স্কুল খ. মাদ্রাসা গ. ক্লাব ঘ. ওপরের সব কটি ৬। দুতরফা দাখিলা পদ্ধতি হলো হিসাবরক্ষণের — ক. ক্ষেত্র খ. ভিত্তি গ. পরিধি ঘ. সীমা ৭। আধুনিক হিসাববিজ্ঞানের উৎপত্তি কোথায়? ক. ইংল্যান্ডে খ. ভারতবর্ষে গ. ইতালিতে ঘ. আমেরিকায় ৮। হিসাববিজ্ঞানকে কী নামে অভিহিত করা হয়? ক. হিসাবব্যবস্থা খ. তথ্যব্যবস্থা গ. নিরীক্ষাব্যবস্থা ঘ. বিবরণীব্যবস্থা ৯। হিসাববিজ্ঞানের উদ্দেশ্য বা প্রয়োনীয়তা কয়টি ? ক. ৫ টি খ. ৭ টি গ. ৯ টি ঘ. ১১ টি ১০। হিসাববিজ্ঞানের জন্ম কত খ্রিষ্টাব্দে ? ক. ১৪৯৪ খ্রিষ্টাব্দে খ. ১৫২৩ খ্রিষ্টাব্দে গ. ১৬৯৪ খ্রিষ্টাব্দে ঘ. ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে ১১.হিসাববিজ্ঞানের মূল নীতি হল – র) এক তরফা দাখিলা পদ্ধতি রর) দুই তরফা দাখিলা পদ্ধতি ররর) ডাবল এন্ট্রি সিস্টেম নিচের কোনটি সঠিক ? ক. i ও ii খ. i ও iii গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii ১২। হিসাববিজ্ঞান তথ্যের ব্যবহারকারি কয় ধরনের ? ক. ২ খ. ৩ গ. ৪ ঘ. ৫ ১৩। হিসাববিজ্ঞান তথ্যের বাহ্যিক ব্যবহারকারি হল- র)সরকার রর) কর্মচারি ররর) পাওনাদার নিচের কোনটি সঠিক ? ক. i ও ii খ. i ও iii গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii ১৪। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের ফলে হিসাববিজ্ঞানের কোনটি বৃদ্ধি পায়? ক. ব্যবহার খ. দক্ষতা গ. পরিধি ঘ. গ্রহণযোগ্যতা ১৫। আর্থিক সচ্ছলতা হিসাববিজ্ঞানের একটি – ক. উদ্দেশ্য খ. ভূমিকা গ. সুবিধা ঘ. প্রয়োজনীয়তা ১৬।হিসাববিজ্ঞানের যাত্রা কখন শুরু হয় ? ক. আধুনিক যুগে খ. সম্প্রতি গ. মানুষ যখন গুহায় বাস করে ঘ. প্রাচীন কালে ১৭।গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান ব্যবসায়ের কোন ধরনের দায়বদ্ধতা ? ক. সামাজিক খ. নৈতিক গ.অর্থনৈতিক ঘ. সবগুলো ১৮। নিজের কাজের জন্য তৃতীয় পক্ষের নিকট দায়বদ্ধতাই হচ্ছে – ক.জবাবদিহিতা খ. মূল্যবোধ গ. মিতব্যয়িতা ঘ. মহানুভবতা ১৯। হিসাব তথ্যের ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রে নিচের কোনটি ভিন্ন প্রকৃতির ? ক. মালিক খ. অভ্যন্তরীণ গ. ব্যবস্থাপক ঘ. বিনিয়োগকারী ২০। লুকা প্যাসিওলি পেশায় ছিলেন একজন - ক.হিসাববিজ্ঞানী খ. গণিতবিদ গ.আইনজীবী ঘ.ডাক্তার সঠিক উত্তরটি মিলিয়ে নাও ১. ঘ ২. গ ৩. গ ৪. গ ৫. ঘ ৬. খ ৭.গ ৮.খ ৯.গ ১০.ক ১১.গ ১২.ক ১৩.ঘ ১৪.গ ১৫.ঘ ১৬.গ ১৭.ক ১৮.ক ১৯.ঘ ২০.খ।
×