ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দূষণে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার টাউন খাল

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ৩ মার্চ ২০১৮

দূষণে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার টাউন খাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরশহরের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া টাউন খালে এক সময় ছোট-বড় অনেক নৌকা চলাচল করত। ধর্ম জাল দিয়ে মাছ ধরার দৃশ্য ছিল নিত্যদিনের। এ খালই ছিল অনেকের জীবন ও জীবিকা। তবে এ সব কিছুই এখন যেন সোনালি অতীত। কেননা দিন দিন দূষণের ফলে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী এ খালটি। সম্প্রতি জেলার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের উদ্যোগে এ খালটি পরিষ্কার করা হলেও প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে খালটি ফের জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। খালের মালিক জেলা পরিষদও এটি রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারে কার্যত উদাসীন। শহরের টান বাজার থেকে গোকর্ণ ঘাট পর্যন্ত বয়ে যাওয়া টাউন খালটি তিতাস নদীতে গিয়ে মিশেছে। বর্ষা মৌসুম এলেই পানিতে টইটম্বুর হয়ে উঠতো খালটি। নদীর মতো এ খালের পানিতে স্রোতও ছিল। খালের স্বচ্ছ পানিতেই গোসল করতেন স্থানীয়রা। শহরের কাজিপাড়াস্থ শেখ শাহ্ নেওয়াজ সেতুর উপর থেকে এ খালের পানিতে লাফিয়ে পড়তো দুরন্ত শিশুরা। শিশুদের পানিতে লাফিয়ে পড়ার এ দুরন্তপনা দেখে আনন্দিত হতেন সেতুর উপর দিয়ে চলাচলকারীরাও। এছাড়া প্রতি বছর জেলার আখাউড়া উপজেলার খড়মপুরস্থ কেল্লা শহীদ (রহ) মাজারের ওরস চলাকালীন সময়ে নৌপথে এ খালের উপর দিয়েই দূরদূরান্ত থেকে ভক্ত-অনুরাগীরা বড় বড় ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে মাজারে যেতেন। তবে দু-এক বছর ধরে খালের পানিতে লাফিয়ে পড়ে না দুরন্ত শিশুরা, ছোট-বড় নৌকাও আর চলে না। কেননা ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে দিন-দিন জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে ঐতিহ্যবাহী এ খালটি। শহরের টি.এ রোডের জোড়া সেতু সংলগ্ন ক্যাফে আবদুল্লাহ্ রেস্টুরেন্ট, খানা বাসমতি রেস্টুরেন্ট, মসজিদ রোডস্থ ঝুমুল হোটেলসহ খালের দুই পাশের বাসা-বাড়ি ও স্থাপনার ময়লা-আবর্জনা ফেলায় ক্রমশ মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে খালটি। শহরের কাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা শামছুল ইসলাম বলেন, এই খালের পানিতে গোসল করে বড় হয়েছি। চোখের সামনে খালটি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে অথচ কর্তৃপক্ষ এটি রক্ষণাবেক্ষণে কোন উদ্যোগই নিচ্ছে না। টান বাজার এলাকার ব্যবসায়ী ফজলু মিয়া বলেন, খালেই সব ধরনের ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়। আমাদের অসচেতনতা আর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে ঐতিহ্যবাহী খালটি আজ মৃত প্রায়। আমাদের দাবি থাকবে খালটি খনন করে আবারও যেন হারানো যৌবন ফিরিয়ে আনা হয়। কদিন আগেই অনেকটা ঘটা করেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী খাল পরিষ্কার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। কয়েকদিন পার হতে না হতেই আবারও খালে ময়লা-আবর্জনা ফেলা শুরু হয়েছে। জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী আবদুল হামিদ বলেন, খালটি পুনঃখননের জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পাওয়া গেছে। খুব শীঘ্রই খনন কাজ শুরু হবে। এতে করে খালের পানির প্রবাহ স্বাভাবিক হবে।
×