ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় পাট দিবসে ঢাকায় বর্ণাঢ্য র‌্যালি

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ৩ মার্চ ২০১৮

 জাতীয় পাট দিবসে ঢাকায় বর্ণাঢ্য র‌্যালি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় পাট দিবস ২০১৮ উদযাপনে শুক্রবার ঢাকায় এক বর্ণাঢ্য পাট র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানিক মিয়া এ্যাভিনিউ থেকে এই পাট র‌্যালি শুরু হয়ে খামারবাড়িতে গিয়ে শেষ হয়। একই দিনে জামালপুরে একটি রোড শো আয়োজন করা হয়। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মুহাম্মদ ইমাজউদ্দিন প্রামাণিক রোড শোর উদ্বোধন করে। র‌্যালিতে আরও অংশগ্রহণ করেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, সচিব ফয়জুর রহমান, বিজেএমসির চেয়ারম্যান ড. মাহমুদুল হাসান এবং পাট অধিদফতরের মহাপরিচালক শামসুল হক প্রমুখ। মন্ত্রী ইমাজউদ্দিন প্রামাণিক বলেন, সোনালি আঁশ পাটের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে পাট পণ্যের ব্যবহার বাড়ানোর পাশাপাশি আধুনিকায়নও জরুরী। প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, পাটের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি পাটের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। উল্লেখ্য, এ বছর পাট দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ‘সোনালি আঁশের সোনার দেশ, পাট পণ্যের বাংলাদেশ।’ এদিক জামালপুর থেকে আমাদের নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, জাতীয় পাট দিবস উপলক্ষে ফরিদপুর থেকে যাত্রা করা রোড শোর গাড়ির বহর শুক্রবার বিকেলে জামালপুরে পৌঁছে প্রচার চালিয়েছে। রোড শোর ৪৫ গাড়ির বহর বিকেল চারটায় জামালপুর সরকারী আশেক মাহমুদ কলেজ মাঠে পৌঁছায়। জামালপুরের জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর রোড শোর গাড়ির বহরে আসা বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, পাট অধিদফতর ও জাতীয় তাঁত বোর্ডের কর্মকর্তাদের স্বাগত জানান। এ উপলক্ষে কলেজের স্থায়ী মঞ্চে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর বলেন, পাট চাষ ও পাট ব্যবসায় ব্রিটিশ আমল থেকেই জামালপুরের ঐতিহ্য ও সুপরিচিতি রয়েছে। এক সময় জামালপুরের সরিষাবাড়ীতেও পাটকল গড়ে উঠে জামালপুরের তথা দেশের অর্থনীতিতে বেশ ভাল প্রভাব রাখত। পাটের সোনালি ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে বর্তমান সরকার যুগোপযোগী পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি পাট চাষ বাড়িয়ে পাটপণ্যের ব্যবহার ও ব্যবসায় প্রসার ঘটানোর লক্ষ্যেই এই রোড শোর আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান। আলোচনায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হুশনুল মাহমুদ বলেন, হারিয়ে যাওয়া পাটের চাষ আবার বাড়ছে। গত অর্থবছরে দেশে ৮ লাখ হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদিত হয়েছে। পাট ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন ও রফতানির লক্ষ্যে পাট উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে। বিজেএমসির গবেষক ও উপদেষ্টা বাবুল চন্দ্র রায় বলেন, স্বাধীনতা পূর্বকালে আমরা দেশের অর্থনীতির শতকরা ৯৫ ভাগ আয় করতাম এই পাট থেকে। এখন তা নেমে এসেছে ৩ থেকে শতকরা ৪ ভাগে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেই পাটের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে পাঁচটি পাটকল চালু করেছেন। ১০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। সরকার আরও ছয়টি পাটকল চালু করার উদ্যোগ নিয়েছেন। যা আগের সরকার পারেনি। তাই নতুন প্রযুক্তি দিয়ে নতুন পণ্য বিশেষ করে পাট থেকে পলিথিন, বিস্কুট, চা জাতীয় পানীয়, চারকোল, পাটের ব্যাগ থেকে শুরু করে অন্যান্য আরও বেশ কিছু পণ্য উৎপাদনের সম্ভাবনা ফিরে আসছে। এ নিয়ে ব্যাপক গবেষণা চলছে। ১ কেজি পাট থেকে বিস্কুট তৈরি করতে পারলে ১ হাজার টাকা উপার্জন করা যাবে বলেও তিনি জানান। জাতীয় তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম পাটের গুরুত্ব এবং বর্তমান সরকারের পাট নিয়ে নানামুখী উদ্যোগ বাস্তবায়নে পাট একদিন ‘প্লাটিনাম ফাইবারে’ পরিণত হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন এবং সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে রোড শোর সমাপ্তি ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাসেল সাবরিন। জাতীয় পাট দিবসের প্রচার অংশ হিসেবে সন্ধ্যায় সরকারী আশেক মাহমুদ কলেজ মঞ্চে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
×